

অভিষেকটা খুব বেশি রঙিন না হলেও ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেখিয়েছেন স্পিন জাদু। দুই সিরিজে ১৬ উইকেট নিয়ে জায়গা পাকা করলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। এমনিতে স্বল্পভাষী, কিছুটা লাজুকও। ম্যাচ সেরা হয়ে লজ্জায় লুকিয়ে থাকতে চাওয়া বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ বিশ্বকাপ সামনে রেখে ‘ক্রিকেট৯৭’ কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন প্রাণ খুলে। নিচে পাঠকদের জন্য দেওয়া হল-
ক্রিকেট৯৭: প্রথমবার বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেলেন। কতটা রোমাঞ্চ কাজ করছে?
নাসুম: এটা বলে বোঝানো যাবেনা। অনুভূতিটা যদি আমি বুঝাতে পারতাম তাহলেতো হত। বুঝানোর ক্ষমতা নাই যে আমি কতটা খুশি।
ক্রিকেট৯৭: বিশ্বকাপে নিজের ব্যক্তিগত লক্ষ্য কি থাকবে?
নাসুম: লক্ষ্য তো থাকবে অবশ্যই ভালো কিছু করার। প্রতিটি ম্যাচ খেলার আগেইতো একটা লক্ষ্য থাকে। আর আলাদা যে লক্ষ্য সেটা মনের মধ্যেই আছে। এটা এখন প্রকাশ করবোনা।
ক্রিকেট৯৭: দল হিসেবে বাংলাদেশ কতটা ভালো করবে বলে বিশ্বাস করেন?
নাসুম: আলহামদুলিল্লাহ আমরা ভালো কিছু করবো। আমাদের দলের বন্ডিংটা ভালো আছে। সবাই একে অপরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় দারুণভাবে। দলের বন্ডিংটা ভালো হলে একজন খারাপ করলে আরেকজন কাভার করে দেয়।
ক্রিকেট৯৭: ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিষেক প্রায় এক যুগ আগে, তবে লাইমলাইটে আসাতো পরের কথা নিয়মিত ম্যাচই খেলতে পারছিলেন না। সেখানে একটা বিপিএল আপনার সবকিছুই যেন বদলে দিল। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সাথে যুক্ত হওয়ার কোনো গল্প আছে?
নাসুম: ২০১৫ সালে আমি সিলেট সুপার স্টার্সে ছিলাম। তখনোই আমাদের সাবেক জাতীয় দলের ক্রিকেটার ফাহিম মুনতাসির সুমিত ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ। তো উনি যখন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ম্যানেজমেন্টে যোগ দেন তখন উনিই আমাকে ২০১৯-২০ মৌসুমের বিপিএলে টেনে নেন। এরপর তো খেলার সুযোগ পেলাম, বাকিটা তো…
নাসুম: না ভাই, আমি আমার তুলনা কারও সাথে করিনা। আমি কখনো নিজেকে ইমাদ ওয়াসিম বা অন্য কেউ মনে করিনা। আমি নাসুম, আমি ভালো খেলতে চাই স্রেফ এটাই। কারও সাথে তুলনায় যাওয়া ব্যাপারটা আমার জন্য ভালো না। আমি এত বড় খেলোয়াড় এখনো হইনি ভাই। সামনে হলেও হতে পারি আপনাদের দোয়ায়।
ক্রিকেট৯৭: তারপরেও একজন কোচ যখন এভাবে বলেন…
নাসুম: এটা উনার কাছে মনে হয়েছে। উনি শুধু এ কথা বলেনি আরও অনেক কথা বলেছে (ইতিবাচক)। উনার কাছে মনে হয়েছে বলেছেন। আমি নিজে অবশ্য সেভাবে ভাবিনা। একজন কোচ, একজন শিক্ষক অবশ্যই এমন কিছু বলে হয়তো তাদের চোখে ধরে দেখে। কিন্তু এটা শুনে আমি যদি বসে থাকি আমি ওরকম, আমি এরকম তাহলে আমার আর খেলা হবে না।
নিজের যোগ্যতা, খেলার সামর্থ্য প্রমান করেইতো ঐ জায়গাটাতে যেতে হবে। ও (ইমাদ ওয়সিম) নিয়মিত জাতীয় দলে খেলছে, বিশ্বের অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলছে। আমারতো ঐ জায়গায় যেতে আরও সংগ্রাম করতে হবে, সময় লাগবে। এসব মাথায় না নিয়ে আসলে লক্ষ্য একটাই জাতীয় দলে অনেক দিন খেলতে চাই, দেখা যাক।
ক্রিকেট৯৭: ব্যাট হাতে এখনো সেভাবে সুযোগ আসেনি অবদান রাখার। এখন কি নিজেকে পুরোপুরি বোলিংয়েই সীমাবদ্ধ রাখছেন?
নাসুম: আসলে টি-টোয়েন্টিতে সচরাচর ব্যাটিং পাওয়া কষ্টের ব্যাপার (লোয়ার অর্ডারের)। কিন্তু আমি নিজে ব্যাটিং ভালো করি। ঘরোয়াতে খেয়াল করলে কিছুটা দেখতে পারবেন। জাতীয় দলে এসে ব্যাটিং নিয়ে কাজ করি বলতে মাঝে মাঝে ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের সাথে কাজ হয়। ও বলে দেয়, ভালোই টিপস দেয়। আমি সবচেয়ে বেশি ফোকাস করি ফিল্ডিং ও ফিটনেসে। আর বোলিং আমার মূল অস্ত্র। ফিটনেস আমি দলের ট্রেনিং থাকুক আর না থাকুক আমি করে যাই রুটিন মাফিক।
ক্রিকেট৯৭: এখনো কি পল নিক্সনের সাথে যোগাযোগ হয়?
নাসুম: হ্যাঁ, এখনো যোগাযোগ আছে। প্রত্যেক ম্যাচের শেষেই সে হোয়াটস অ্যাপে টেক্সট করে। শুধু ও না আমাদের ভিডিও এনালিস্ট ছিল, বিক্রম। সেও নিয়মিত খোঁজ খবর নেয়। ও আমাকে বলে গিয়েছে তুমি শুধু অপেক্ষা কর। আর নিজের মনযোগটা ধরে রাখো। ভালো কিছু হবে। ওর সাথে আমার প্রতিনিয়ত আলাপ হয়।
আর পল নিক্সন তো সিপিএলেও আমাকে একটা দল পাইয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আমার পাসপোর্টের জন্য যেতে পারিনি। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল আমি খেয়াল করিনি। ড্রাফটের পরে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়েছিল সেটি। আমি চেষ্টা করি সবার সাথেই যোগাযোগ রাখার।
ক্রিকেট৯৭: ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে ডাক পেলেন, তবে ম্যাচ খেলা হয়নি। এরপর আপনি বলেছেন দলের সাথে থেকে জাতীয় দলে খেলার লোভ বেড়ে গিয়েছে। আর সে কারণে নিজের চেষ্টা, তাড়নায় অনেক পরিবর্তন এনেছেন, জাতীয় দলে খেলতেই হবে। ঐ সময়টায় আসলে আলাদা কি কাজ করেছেন?
নাসুম: ঐ (২০২০ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ) ৬ টা দিন আমি আমার জীবনে কোনদিনও ভুলবোনা। ঐ জায়গা থেকেই আসলে লোভটা লাগা। এরপর তো আর খেলাই হল না, করোনার কারণে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ওয়ানডেতে ডাক পেলেও ম্যাচ খেলতে পারিনি। নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলেও তো ছিলাম না (হাসি)। রুবেল ভাইয়ের নাম দুইবার এসেছে। পরে জানা গেল একটা আমার নাম আরেকটা উনার।
ক্রিকেট৯৭: স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথের সাথে কাজ করছেন এবং সফল হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন। আলাদা কিছু নিয়ে কাজ চলছে?
নাসুম: সত্যি কথা বলতে কি বিদেশীদের সাথে কথা বলতে, কাজ করতে আমার একটু জড়তা আছে। আমিতো সেভাবে নিজেও বুঝিনা, তাদেরকেও বুঝাতে পারিনা। কারও সাহায্য নিয়ে চেষ্টা করি আরকি। কিন্তু ওদের সাথেই কীভাবে যেন আমার হয়ে যায়…যেমন হেরাথের সাথে যখন যা চাচ্ছি ও ঐভাবেই আমার সাথে কাজ করতে রাজি। ও খুব উপভোগ করে, আমি যে কাজটা করি সে খুব উপভোগ করে।
ও যদি উপভোগ না করতো আমি আসলে এত কাজ করতে পারতাম না। দলেতো আমি একা স্পিনার না, সে সবাইকে সময় দিয়েও প্রয়োজনে আমাকে আলাদাভাবে সময় দেয়। ও যে যেভাবে চায় তার সাথে সেভাবেই কাজ করে। মানে ও মাঠে থাকতেই পছন্দ করে। এ জন্য ওর সাথে কাজ করে মজা। আমার কিছু পরিবর্তন করেনি, তবে একটা জিনিস নিয়ে যে কথাটা আমার লোকাল কোচ বলেছে সেও তাই বলেছে। ওটাই ঠিক করছি। নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে।
আরও সাক্ষাৎকার পড়ুনঃ
মাহমুলউল্লাহ রিয়াদ
রঙ্গনা হেরাথ
ক্রিকেট৯৭: সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানের কন্ডিশনে স্পোর্টিং উইকেটে বল করতে হবে। স্পিনারদের ভূমিকা কেমন হবে বলে মনে করেন?
নাসুম: একই প্রশ্ন আমাকে নিউজিল্যান্ড যাওয়ার সময়ও করা হয়েছে। বলা হয়েছে ওখানেতো পেস বান্ধব উইকেট। এখন ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। বিশ্বকাপের আগেই আমরা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবো ওমান ও দুবাইতে। আর এতে করে ওখানকার উইকেট, কন্ডিশন নিয়ে একটা ধারণা হবে। তিনটা প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে ভালো ধারণা পাবো। আইপিএল দেখে যা বুঝলাম, স্টাম্পের বাইরে বলই করা যাবেনা। যদিও আইপিএল হচ্ছে আরব আমিরাতে আর আমাদের প্রথম পর্ব ওমানে। ব্যাক অব লেংথে করি কিংবা স্লট বা গুড লেংথ যে জায়গাতেই ফেলি সেটা স্টাম্পে রাখতে হবে।
টার্ন সেভাবে না পেলেও গতির হেরফের করতে হবে। এটা আমার চিন্তা করতে হবে না, আমি যখন মাঠে খেলবো সিনিয়ররাই আমাকে বলে দিবে। উইকেটে কি করতে হবে উনারাই বলে দিবে। বল করার আগেই অধিনায়ক রিয়াদ ভাই কথা বলে, সাকিব ভাই, মুশফিক ভাইও এসে পরামর্শ দেয়। সাথে স্পিন কোচও বলে দিবে এমন উইকেটে কি করতে হবে। আর একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে খেলতে হবে। খেলাটা শুধু ব্যাটসম্যানের ভাবলেতো হবেনা।
ক্রিকেট৯৭: দেশের মন্থর উইকেটে টানা দুই সিরিজে দারুণ বল করেছেন। ভক্ত সমর্থকদের প্রত্যাশা থাকবে বিশ্বকাপে আপনাকে ঘিরে। এটাকে চাপ মনে করেন?
নাসুম: আমি ভালো করবো এটা দেশের মানুষের বিশ্বাস রাখতে হবে। আর যদি ভাবে আমি পারবোনা তাহলে পারবোনা। আগেও বলছি তাদের উদ্দেশে যে আমাদের প্রতি আস্থা রাখেন আমরা ভালো কিছু করবো। দর্শকের প্রত্যাশার চাপ থাকলেও সেটা এক পাশে রেখেই খেলতে হবে।
ক্রিকেট৯৭: নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে সিরিজে আপনি পুরোপুরি ছন্দে ছিলেন না। এরপর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। আত্মবিশ্বাসের রসদটা পেলেন কোথায়?
নাসুম: আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে দিন গেছে জিম্বাবুয়ের সাথে ঐ (৩ ওভারে ৩৭) ম্যাচটাতে। ঐ ম্যাচে কোন জায়গায় বল করেছি বাকি ম্যাচে কোন জায়গায় বল করেছি একটু দেখলে বুঝবেন। ঐ দিনটাই আমার ছিল না। সেদিন আমি বুঝছিলামই না যে বলের গতি কি হচ্ছে। আমি শুধু জোরের উপর করেছি, মনে হচ্ছে বল যাচ্ছেনা। এমনিতে আমি পেস বান্ধব উইকেট বলেন, ঘাসের উইকেট বলেন দেখলেই খুশি হয়ে যাই।
টার্ন করুক আর না করুক, আমার খুশি লেগে যায়। অন্তত উইকেট বেইমানি করবেনা, কিন্তু সেদিনের উইকেট হয়ে গেছে বেইমানের মত। জিম্বাবুয়ের পর যখন আসি তখন সামনে কিন্তু বিশ্বকাপ দল ঘোষণার ব্যাপার ছিল। আমার মাথায় ছিল যেন সুযোগ পেলে এমন কিছু করতে পারি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাকা হয় এমন। ঐ সিরিজকে আমি টার্নিং পয়েন্ট মনে করেছিলাম।
আমিতো সচরাচর উইকেটও পাইনা। দল বাঁচাতে রান সেভ করা, পাওয়ার প্লে টা ভালোভাবে ব্যবহার করে আমি সরে যাই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সিরিজে আমি লাকিলি উইকেট পেয়ে যাই। ওটা আমার মাথায় ছিল যে সিরিজটা আমার জন্য টার্নিং পয়েন্ট যদি বিশ্বকাপে থাকতে হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে সেভাবেই নিয়েছিলাম। প্রথম ম্যাচে ম্যাচ সেরাও হয়ে যাই।
এরপর নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগেও দল ঘোষণা হল না। একটা চিন্তা ঢুকে গেল। আবার শুনছি সিরিজের ২-৩ ম্যাচ পর দল ঘোষণা। আমরাতো ক্রিকেটার, কোনো ম্যাচে ভালো হবে কোন ম্যাচে খারাপ হবে গ্যারান্টি নাই। এরমধ্যে বিপ্লব (আমিনুল ইসলাম) ঢুকলো, সাকিব ভাইতো অটো চয়েজ, (শেখ) মেহেদীও আছে।
আমি, বিপ্লব ও মেহেদীর দুইজন বা একজন খেলবে। আমার একটা বিশ্বাস ছিল যে আমি প্রথম ম্যাচে সুযোগ পাবো। আগের সিরিজের আত্মবিশ্বাস ছিল। সেদিনই চিন্তা করেছি যা করার আজকেই করতে হবে (বিশ্বকাপ দলে জায়গা নিশ্চিত) পরের আশায় থাকলে হবেনা। ৫ রানে ২ উইকেট পেলাম আলহামদুলিল্লাহ…তবে অস্ট্রেলিয়া সিরিজই ছিল আমার বিশ্বকাপ ভাবনায় অগ্রাধিকার। আমি ভেবেছি ওটাই টার্নিং পয়েন্ট।
ক্রিকেট৯৭: মাঝে পারিবারিকভাবেও আপনি একটু সমস্যায় ছিলেন। আপনার বাবা নিখোঁজ হল, যদিও পরে পাওয়া গিয়েছে। এসব কি কোনোভাবে মানসিকভাবে আপনাকে প্রভাবিত করেনি?
নাসুম: আমার আম্মু মারা গেছে জুনের ২১ তারিখ। তার কিছুদিন পরের ঘটনা রমজানে, উনি বাইরে গিয়েছে। কিন্তু বাসায় আসছিল না। উনি উনার এক ভাগ্নের বাসায় গেছে। কেউ আসলে বলতে পারছিলনা, উনি কিন্তু উনার শশুর বাড়িতে গিয়ে গিয়ে বসে আছেন। ওখানে সবাইকে নিষেধ করছে খোঁজ না দিতে। উনি আসলে আম্মুর মৃত্যুতে কিছুটা ভেঙে পড়ে। পরে কোথাও না পেয়ে আমি ছোট বোনকে নিয়ে থানায় গিয়ে জানাই আব্বুর মিসিংয়ের কথা।
তাদের নিষেধও করেছি এটা যেন কোনোভাবে নিউজে না আসে। একটা পারিবারিক ব্যাপার বলে কথা। কিন্তু পরে সিলেটের একটা স্থানীয় পত্রিকায় খবর প্রকাশ হল।
আমি আসলে আপনাকে আগেই বলেছি কথা বলতে একটু দ্বিধা বোধ করি। আমি নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করি। তো সেদিক থেকেই এসব ব্যাপার এক পাশে রেখে মাঠের ক্রিকেটে মনযোগ দিয়েছি।
ক্রিকেট৯৭: নাসুম আহমেদের শক্তির জায়গা কোনটি বলে মনে করেন?
নাসুম: আমার আর্ম বলটাই মূল শক্তির জায়গা। একটা জায়গায় টানা বল করতে পারি। এখন যে উইকেটে খেলতে যাচ্ছি সেখানে অবশ্য আর্ম বলা করা লাগবেনা এমনিতেই হয়ে যাবে (হাসি)। হেরাথের সাথে জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকেই টার্ন নিয়ে কাজ করছি।
ম্যাচের আগে অন্তত ৪০-৪৫ মিনিট ড্রিল করি আরেকটু বেশি টার্ন পাওয়ার জন্য। নেটে বা ব্যক্তিগত অনুশীলনেও এই ড্রিলগুলো থাকে। আমার একটা বড় অভ্যাস হল বল ঘুরাতে পছন্দ করি। বল ঘুরার সময় বাতাসে একটা শব্দ করে আমার বলে। এই ড্রিলগুলোই করি আর এসব দিয়েই এখনো পর্যন্ত সফল।
ক্রিকেট৯৭: নাসুমের আদর্শ কে?
নাসুম: বোলিংয়ে আমি যত বাঁহাতি স্পিনার আছে সবাইকেই দেখি। যার কাছে যেটা ভালো আমি সেটাই নেওয়ার চেষ্টা করি। হেরাথ বল করলেও তাকিয়ে থাকি, সাকিব ভাই বল করলেও তাকিয়ে থাকি, তাইজুল ভাই বল করলেও তাকিয়ে থাকি, সিলেটে এনাম ভাই বল করলেও তাকিয়ে থাকি। আমিতো দেখি, আমার মনের ভেতর যেটা ধরে যায় সেটা প্রয়োগের চেষ্টা করি। প্রয়োগ করতে গিয়ে যেটা সফল হয় সেটা করতে থাকি, আর যেটা সফল হয়না সেটা আর করিনা।
এখনতো হেরাথকে দেখছি, ও যখন নেটে একটা-দুইটা বল করেনা, আমি দেখি ও কি করতে চায়, ওর বলে ব্যাট করেছি। আমি ওর বলে ব্যাট করি যেন দেখতে পাই ও কি করতে চায়। আমাকে বলার চেয়ে আমার মনে হয় আমি নিজে কাছ থেকে কাউকে দেখে আরও বেশি শিখতে পারি। আমি যতক্ষণই অনুশীলন করি নেটে ততক্ষণ এসবই অনুসরণ করতে থাকি।