

প্রথম ৩ ওভারে ৩৩ ও ১৫ ওভার শেষে ১০২। এমন ভীতের পর টি-টোয়েন্টিতে শেষ পাঁচ ওভারে যেখানে দলীয় সংগ্রহ ১৫০ পেরোয় অনায়েসে সেখানে ভূতুড়ে ব্যাটিং প্রদর্শন করলো বাংলাদেশ। টানা ব্যর্থ ওপেনিং জুটিতে এসেছে রদবদল, আর তাতে দারুণ শুরু পেয়েও পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ১২৩ রানের বেশি লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে পারেনি স্বাগতিকরা।
সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ আজও (৯ আগস্ট) মিরপুরে টস জিতে আগে ব্যাট করে। প্রথম ৫ ওভারে ৪৩ রান নেওয়া বাংলাদেশ শেষ ৯০ বলে তুলতে পেরেছেন মাত্র ৭৯ রান। শুরু আর শেষের অমিলে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করা মিশনে টাইগার বোলারদের আরও একবার দারূন কিছু করতে হবে।
৮ উইকেটে ১২২ রান তোলার পথে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৩ রান আসে ওপেনার নাইম শেখের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান অধিনায়ক রিয়াদের। অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ দুইটি করে উইকেট নাথান এলিস ও ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ানের।
বাংলাদেশ একাদশে এদিন এসেছে দুইটি পরিবর্তন। শরিফুল ইসলাম ও শামীম হোসেনের পরিবর্তে সুযোগ পান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
সিরিজের আগের ৪ ম্যাচে ব্যর্থ মোহাম্মদ নাইম শেখ ও সৌম্য সরকার উদ্বোধনী জুটি। বিশেষ করে সৌম্য ছিলেন নামের মতই শান্ত, ৪ ম্যাচে রান সাকূল্যে ১২। তবে একাদশে টিকে গেলেও আজ ব্যাটিং অর্ডারে হয় অবনমন। নাইমের সাথে ওপেন করতে নামেন শেখ মেহেদী।
দুজনেই শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। দলকে এনে দেন সিরিজে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রানও। ৪.৩ ওভার স্থায়ী জুটিতে স্কোরবোর্ডে উঠে ৪২ রান। অ্যাশটন টার্নারের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে সুইপ শটে মেহেদী হাঁকান চার। অ্যাশটন আগারের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকান নাইম।
এরপর আক্রমণে আসা অ্যাডাম জাম্পার ওভার থেকে নাইম-মেহেদী নেন ১৪ রান। প্রথম ৩ ওভারে ৩৩ রান আসার পর এক ম্যাচ বিরতি দিয়ে একাদশে ফেরা পেসার নাথান এলিসের করা চতুর্থ ওভারে রানের গতি কমেছে, এসেছে মাত্র ২ রান।
পঞ্চম ওভারে টার্নারের নিরীহ এক ডেলিভারিতে বাজে শটে টপ এজ হয়ে মেহেদী (১২ বলে ১৩ রান) ক্যাচ দেন অ্যাশটন আগারকে। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ১ উইকেটে ৪৬ রান। যা পাওয়ার প্লেতে সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সাকিব আল হাসান ও নাইম শেখ করতে পারেননি সুবিধা। ২৩ বলের জুটিতে রান এসেছে মাত্র ১৫। ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ানকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ২৩ বলে ২৩ রান করে ক্যাচ দেন শর্ট থার্ড ম্যানে অ্যাশটন আগারকে। অস্বস্তিতে ভোগা সাকিবও এরপর বেশিক্ষণ টিকেননি, জাম্পার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে থেমেছেন ২০ বলে ১১ রানে।
চার নম্বরে নামা সৌম্য ছন্দ খুঁজে পেতে সংগ্রাম করলেও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৪ বলে ১৯ রানের ইনিংসে দেখিয়েছেন দারুণ কিছুর আশা। তবে অ্যাশটন আগারের বলে টপ এজে দেন ফিরতি ক্যাচ। তাতে ৮৪ রানে ৪ উইকেটে পরিণত হয় বাংলাদেশ।
রিয়াদের বিদায়ের পর ১৪তম ওভারে আগারকে স্লগ সুইপে দারুণ এক ছক্কা হাঁকিয়ে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান সৌম্য। তবে পরের ওভারেই হাত খুলে খেলতে গিয়ে সিরিজে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেন। ক্রিশ্চিয়ানের বলে লং অফে অ্যাশটন টার্নারের হাতে ধরা পড়ার আগে তার ব্যাটে ১৮ বলে ১৬ রান।
ক্রিজে এসেই আফিফ হোসেনের হাঁকানো দুর্দান্ত এক ছক্কায় ১৫ ওভার শেষেই বাংলাদেশ পেরোয় দলীয় ১০০। তবে এরপর নিয়ন্ত্রণ নেয় অজি বোলাররা। নাথান এলিসের করা ১৮তম ওভারে অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টাম্পে টেনে এনে ১৩ বলে ৮ রান করে বিদায় নেন নুরুল হাসান সোহান।
ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও আফিফ হোসেন যেন বলই ব্যাটে লাগাতে পারছিলেন না। এলিসের দ্বিতীয় শিকার হয়ে আফিফ ফেরেন ১১ বলে ১০ রান করে। শেষ ৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২০ রান। বড় সংগ্রহের আভাস দিয়ে দলীয় সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১২২ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (১ম ইনিংস শেষে):
বাংলাদেশ ১২২/৮ (২০), মেহেদী ১৩, নাইম ২৩, সাকিব ১১, সৌম্য ১৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, নুরুল ৮, আফিফ ১০, মোসাদ্দেক ৪, সাইফউদ্দিন ০, মুস্তাফিজ ০*; টার্নার ২-০-১৬-১, অ্যাগার ৪-০-২৮-১, জাম্পা ৪-০-২৪-, এলিস ৪-০-১৬-২, ক্রিশ্চিয়ান ৪-০-১৭-২।