

সিরিজ জুড়েই দুই দলের ব্যাটসম্যানদের মাঝে যেন বাজে ব্যাটিং প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতা চলছে। তবে মিরপুরের মন্থর উইকেটে বোলারদের কল্যাণে টানা ৩ ম্যাচ জিতে আগেরদিন সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চেয়েছেন শেষ দুই ম্যাচে যতটা সম্ভব ব্যাটিংয়ে উন্নতি। তবে ধারাবাহিক ব্যর্থ ওপেনিং জুটি সহ অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে আগে ব্যাট করে আজ (৭ আগস্ট) মুখ থুবড়েই পড়ে টাইগাররা।
টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া বাংলাদেশ মিরপুরে চতুর্থ টি-টোয়েন্টি অস্ট্রেলিয়ার জন্য মাত্র ১০৫ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান ওপেনার নাইম শেখের ব্যাটে। শেষদিকে আফিফ হোসেনের ২১ ও শেখ মেহেদীর ২৩ রানে লজ্জা এড়ায় টাইগাররা।
অ্যাডাম জাম্পার বিশ্রামে সিরিজে প্রথম খেলতে নামা লেগ স্পিনার মিচেল সুইপসন নিয়েছেন কঠিন পরীক্ষা। ১৩ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট।
দল জিতলেও আগের তিন ম্যাচে সাকূল্যে ৪ রান করা সৌম্য সরকার ও ৪০ (শেষ দুই ম্যাচে ১০) রান করা নাইম শেখ সুযোগ পেয়েছিলেন আরেক দফা। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ সৌম্য, কিছুটা সফল নাইম। দুজনে আজ দারুণ কিছুর আভাস দিয়েও বেশি দূর যেতে পারেনি। ৩.৩ ওভার স্থায়ী জুটিতে আসে ২৪ রান।
জশ হ্যাজেলউডের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে টানা দুই চার হাঁকান নাইম। প্রথমটি পুল শটে স্কয়ার লেগে, পরেরটি ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে। পরের ওভারে অ্যাশটন টার্নারকে লং অফ দিয়ে ছক্কা হাঁকান সৌম্য।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই অবশ্য ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ফিরেছেন সৌম্য। হ্যাজেলউডের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিকে ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে টপ এজে ক্যাচ দেন শর্ট কাভারে অ্যালেক্স ক্যারিকে। থেমেছেন ১০ বলে ৮ রান করে। সিরিজের আগের ৩ ম্যাচে তার রান ৪।
৩ নম্বরে নামা সাকিব আল হাসান রান তোলাতে দেখান তাড়াহুড়ো। তবে পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে উঠেনি ৩০ রানের বেশি। ১০ম ওভারে হ্যাজেলউডকে ৪ মেরে ৪৩ বল পর বাউন্ডারি খরা কাটান সাকিব।
১ বলের ব্যবধানেই অবশ্য ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে কাট খেলতে গিয়ে আউট হন ২৬ বলে ১৫ রান করে। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪৮।
১১তম ওভারে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে খালি হাতে ফেরান সিরিজে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা লেগ স্পিনার মিচেল সুইপসন। আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো রিয়াদ পড়েন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। পরের বলে নুরুল হাসান সোহানেরও (০) একই পরিণতি, জাগে হ্যাটট্রিক সম্ভাবনা।
১ উইকেটে ৪৮ থেকে ৪ উইকেটে ৫১ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ক্রিজে টিকেও ওপেনার নাইম প্রয়োজনীয় সময়ে করতে পারেননি আসল কাজ। সুইপসনের টানা স্পেলের শেষ ওভারে ফিরেছেন গুগলি পড়তে না পেরে। স্লগ সুইপ করে ক্যাচ দেন উইকেট রক্ষক ম্যাথু ওয়েডকে। ৩৬ বলে ২ চারে সাজান ২৮ রানের ইনিংস।
১৬তম ওভারে অ্যাশটন আগারের ফুলটস বলকে বড় ছক্কায় পরিণত করা আফিফ হোসেন বিদায় নেন ২ বল বিরতি দিয়ে। সলগ সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ময়সেস হেনরিকসের হাতে ধয়ার পড়েন ১৭ বলে ২১ রান করে। ৭৮ রানে নেই বাংলাদেশের ৬ উইকেট।
শামীম হোসেন (৬ বলে ৩) আবারও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়ে অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে ক্যাচ দেয় শর্ট মিড উইকেটে অ্যালেক্স ক্যারিকে। শেষদিকে শেখ মেহেদীর ১৬ বলে সমান একটি করে চার, ছক্কায় ২৩ রানের ইনিংসে ১০০ পেরোয় স্বাগতিকরা। মেহেদী সহ ইনিংসের শেষ ওভারে টাই টানা নেন দুই উইকেট, শরিফুল ইসলাম ফিরেছেন খালি হাতে।
অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ টি করে উইকেট টাই ও সুইপসনের। জশ হ্যাজেলউড নেন ২ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (১ম ইনিংস শেষে):
বাংলাদেশ ১০৪/৯ (২০), নাইম ২৮, সৌম্য ৮, সাকিব ১৫, মাহমুদউল্লাহ ০, নুরুল ০, আফিফ ২০, শামীম ৩, মেহেদী ২৩, নাসুম ২, শরিফুল ০; হ্যাজেলউড ৪-০-২৪-২, অ্যাগার ৪-০-২২-১, টাই ৩-০-১৮-৩, সুইপসন ৪-০-১২-৩।