

তরুণ ক্রিকেটাররা জাতীয় দলে লম্বা সময় পার করেও দায়িত্ব কাঁধে নিতে না পারার অভিযোগ বয়ে বেড়িয়েছেন। সিনিয়রদের আড়ালে তাদের পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন করা হয়েছে খুব কমই। সাম্প্রতিক সময়ে চোট, বিশ্রামে সিনিয়রদের এক সাথে না পাওয়ার সুযোগে সামনে এলো তরুণদের পারফরম্যান্স। জিম্বাবুয়ে সফরের পর চলতি অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও তার প্রমাণ মিলেছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলছেন যুব বিশ্বকাপ জয়ের পরই বদলেছে চিত্রটা।
মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবালকে নিয়ে বাংলাদেশের পঞ্চ পান্ডব। বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সাফল্য মানেই এ কজনের পারফর্ম করা। তবে ছোট ছোট অবদান থাকতো তরুণদের, সেসব সামনে আসতো খুব কমই।
ধীরে ধীরে পঞ্চপান্ডবকে একসাথে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি অঘোষিত অবসরে, বাকিরাও নিয়মিত ছুটি কিংবা চোটে পড়ে একসাথে খেলছেন খুব কমই। যে কারণে তরুণদের পারফরম্যান্স আসছে সামনে।
সাম্প্রতিক সময়ে আফিফ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাইম শেখ, শেখ মেহেদী হাসানরা কুড়িয়েছেন আস্থা। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারার মানসিকতাও তৈরি হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে যেমন স্পিনার নাসুম আহমেদ রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। সাকিব আল হাসানের সাথে মুস্তাফিজ, শরিফুলরাও ছিলেন ছন্দে। ব্যাট হাতে আফিফ ছিলেন কার্যকর।
দ্বিতীয় ম্যাচে মুস্তাফিজতো রীতিমত কাঁপন ধরান অজি শিবিরে, শরিফুলও সে পথে যোগ দেন নিজস্ব অস্ত্র নিয়ে। ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়ার উপক্রম এমন সময়ই জ্বলে উঠলে আফিফ ও নুরুল হাসান সোহান। খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে দলকে পৌঁছান জয়ের বন্দরে।
তরুণদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ণ করতে গিয়ে বিসিবি সভাপতি বলছেন ২০২০ যুব বিশ্বকাপ জয়ই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার নিতে গিয়ে আজ (৫ আগস্ট) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহীদ শেখ কামাল অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন পাপন। সেরা ক্রীড়া সংস্থা বিভাগে পদক পেয়েছে বিসিবি।
পাপন বলেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতার পর আমার মনে হয় তরুণদের বিশ্বাসটা আরো বেড়েছে। ওরা এখন নামেই জেতার জন্য, যার সাথেই হোক ভয় পায়না। আমাদের যে দলটা খেলছে, আপনি যদি এক এক করে দেখেন। সৌম্য, নাইম, সাকিবের পর রিয়াদ, এরপর সোহান আছে, আফিফ আছে, আফিফের পর শামীম আছে।’
‘এই শামীম, আফিফ, নাইম, মেহেদীরা তো এসব বড় প্লেয়ারের সামনে খেলা তো দূরে থাক দেখা হয়েছে কিনা সন্দেহ। মিচেল স্টার্ক, হ্যাজেলউড, জাম্পা, ওদের টপ ক্লাস বোলার – প্রথমে নেমে সাহস করে খেলছে এটাই তো অনেক ব্যাপার। আগে বাংলাদেশ খেলতে নামলেই আমরা ভাবতাম হেরে যাবে। হার মেনে নিয়েই খেলতাম। কিন্তু এখন এই যে হার জিত বড় কথা না, ছোট ছোট তরুণ ছেলেগুলো যে সাহস নিয়ে মাঠে নামে।’
‘নিজেদের সমস্তটা দিয়ে ফিল্ডিং করছে। এই সিরিজে বোলিং এবং ফিল্ডিং অনেক ভালো করেছে। ব্যাটিং কিন্তু ভালো হয়নি। কিন্তু আশা করি সামনে ভালো হবে আরো। তবে আমার যেটা ভালো লেগেছে যে মাঠে নামলে জিততে পারি জেতার জন্য খেলবো এই বিশ্বাসটা থাকা অনেক গুরত্বপুর্ন। এই জিনিসটা ছিল মাঠে, মাঝের একটা বছর একটু কেমন যেন হয়ে গেছে, এখন ঠিক হয়ে গেছে।’