

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টাইগার স্পিন বিষে নীল হয়ে লো স্কোরিং ম্যাচে ২৩ রানে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ শেষে মিচেল মার্শ বলেছেন বাংলাদেশে এসে স্পিন খেলা কঠিন হবে জানতেন আগেই। তবে আজ (৪ আগস্ট) দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জানা বিপদের সাথে যোগ হয় মুস্তাফিজুর রহমান-শরিফুল ইসলামদের পেস বোলিং জাদু। আর তাতে ৭ উইকেটে ১২১ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা।
আগের ম্যাচের মত এদিনও অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান এসেছে মিচেল মার্শের ব্যাট থেকে। মার্শ খেলেছেনও সমান ৪৫ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান এসেছে ময়সেস হেনরিকসের ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের হয়ে শুরুর সাফল্য স্পিনাররা এনে দিলেও লাগাম টেনে ধরার কাজটা করেন পেসাররাই। অস্ট্রেলিয়ার হারানো ৭ উইকেটের ৫ টিই নিয়েছেন দুই বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজ ও শরিফুল।
টস জিতে আগে ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়ান দুই ওপেনার অ্যালেক্স ক্যারি ও জশ ফিলিপ ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েও খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। উদ্বোধনী জুটি টিকেনি ১৩ রানের বেশি।
আগের ম্যাচে ইনিংসের প্রথম বলে বোল্ড হওয়া ক্যারি এদিন বেশ সাবলীল শুরু পান। নাসুম আহমেদের করা দ্বিতীয় ওভারে রিভার্স সুইপে দুই চার হাঁকান। তবে বেশি দূর যেতে পারেননি আরেক দফা শেখ মেহেদী হাসানের শিকার হলে। ১১ বলে ১১ রান করে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে স্লগ খেলতে গিয়ে মিড অনে ধরা পড়েন নাসুমের হাতে।
ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে পেস আক্রমণে আনেন টাইগার দলপতি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জশ ফিলিপকে (১৪ বলে ১০) টানা স্লোয়ারে বিভ্রান্ত করে সাফল্যও এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১১৩ কিঃমিঃ গতির বলে লেগ স্টাম্প ভাঙে অজি ডানহাতির। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৩২ রান স্কোরবোর্ডে।
সেখান থেকে মিচেল মার্শ ও ময়সেস হেনরিকস জুটি পথ দেখানোর চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়াকে। তবে প্রথম ১০ ওভারে বাড়েনি রানের গতি, স্কোরবোর্ডে রান উঠেছে ২ উইকেটে ৫৩।
১৪তম ওভারে প্রথমবার রান রেট ৬ পেরোয় অজিদের। মার্শ-হেনরিকস জুটিতে যোগ করে ৫৭ রান। সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হয়ে হেনরিকস ফিরলে ভাঙে জুটি। ২৫ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় করেছেন ৩০ রান।
আগের ম্যাচের মত এদিনও ক্রিজে টিকে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি মার্শ। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের করা ১৭তম ওভারের প্রথম বলেই ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার লেংথের ডেলিভারিকে লং অন দিয়ে করতে চেয়েছেন সীমানা ছাড়া। ব্যাটে-বলে সংযোগ না হওয়ায় উইকেট রক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দেন ৪২ বলে ৫ চারে ৪৫ রান করে।
সিরিজ শুরুর আগে অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড জানিয়েছেন অনভিজ্ঞ অজি ব্যাটিং বিভাগে নিজে রাখতে চান বড় ভূমিকা। তবে প্রথম ম্যাচের পর ব্যর্থ হয়েছেন এই ম্যাচেও, মুস্তাফিজুর রহমানকে স্কুপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ৪ রান করে।
অফ কাটার আর স্লোয়ারের মিশেলে পরের বলে অ্যাশটন অ্যাগারকে (০) বোকা বানিয়ে উইকেটের পেছনে সোহানের ক্যাচে পরিণত করেন মুস্তাফিজ। তাতে জেগেছিল হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। পরের ওভারে অ্যাশটন টার্নার (৭ বলে ৩) শরিফুলের স্লোয়ার বুঝতে না পেরে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে।
শেষ দিকে মিচেল স্টার্কের ১০ বলে ১৩ রানে অস্ট্রেলিয়া থামে ৭ উইকেটে ১২১ রানে। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট মুস্তাফিজ, ২ টি নেন শরিফুল। একটি করে শিকার সাকিব ও শেখ মেহেদীর। আগের ম্যাচে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি নাসুম এদিন ছিলেন উইকেট শূন্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (১ম ইনিংস শেষে):
অস্ট্রেলিয়া ১২১/৭ (২০), ফিলিপ ১০, ক্যারি ১১, মার্শ ৪৫, হেনরিকস ৩০, ওয়েড ৪, টার্নার ৩, অ্যাগার ০, স্টার্ক ১৩*, টাই ৩*; মেহেদী ৩-০-১২-১, সাকিব ৪-০-২২-১, মুস্তাফিজ ৪-০-২৩-৩, শরিফুল ৪-০-২৭-২।