

১৭ মাস পর সাদা পোশাকের ক্রিকেট ব্যাট হাতে নিলেন। দলে তার অন্তর্ভূক্তিও ছিল শেষ মুহূর্তে নাটকীয়ভাবে। অথচ হারারে টেস্টের প্রথম দিন খাদের কিনারায় থাকা দলকে টেনে তোলায় লিটন দাসের সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় দিন তাসকিন আহমেদকে নিয়ে প্রথম সেশনেই বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনটা রাঙালেন সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে। ১০ নম্বরে নামা তাসকিন আহমেদকে নিয়ে আগেরদিনের ২৪ রানের জুটি আজ লাঞ্চের আগেও অবিচ্ছেদ্য আছে। ততক্ষণে জুটিতে যোগ হয়েছে ১৩৪ রান। তাসকিনও পেয়েছেন প্রথম ফিফটির দেখা। ইতোমধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৪০৪ রান। মাহমুদউল্লাহ ১১২ ও তাসকিন ৫২ রানে অপরাজিত আছেন।
৮ উইকেটে ২৯৪ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ৫৪ ও তাসকিন ১৪ রান নিয়ে ক্রিজে আসেন এদিন। লাঞ্চের আগে ২৪ ওভারে দুজনে মিলে তোলেন ১১০ রান।
তাসকিন আহমেদ যেভাবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন তাতে মনে হওয়ার উপায় নেই ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছেন। দুজনে আজকে শুরু থেকেই রান তোলাতে দিয়েছেন বাড়তি মনযোগ। ততক্ষণে জিম্বাবুয়ের দুই পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও ভিক্টর নিয়াউচির সাথে বাগ বিতন্ডায়ও জড়ায় তাসকিন-মাহমুদউল্লাহ।
৮৫তম ওভারে মুজারবানির দেওয়া শর্ট বল ছেড়ে দিয়ে কিছুটা নাচের অঙ্গভঙ্গি করেন তাসকিন। আর তাতেই রেগে যান মুজারাবানি, এক পর্যায়ে তাসকিনের সাথে কথা কাটাকাটিও হয়। তাসকিনের হেলমেটে মুখ ঠেকিয়ে কিছু বলতে যান মুজারাবানি।
Now this is something!
Muzarabani and Taskin get into each other’s faces!
🎥 Rabbitholebd #ZIMvBAN #BANvZIM #Cricket pic.twitter.com/mJmR8QfpFI
— Shihab Ahsan Khan (@shihabahsankhan) July 8, 2021
নিয়াউচির সাথে মাহমুদউল্লাহ উত্তেজিত হন ৮৮তম ওভারে এসে। ওভারের প্রথম বল করতে গিয়ে এক পর্যায়ে স্বাভাবিক ডেলিভারি না করে কিপারের দিকে বল ছুঁড়ে মারেন নিয়াউচি। বলটি ডেড ঘোষণা করে আম্পায়ার। পরের বল করতে এসেই পপিং ক্রিযে থেমে যান এই ডানহাতি।
এবার রান আপের দিকে এগোতে থাকা নিউয়াউচিকে ডেকে উত্তেজিত কন্ঠে কথা বলেন মাহমুদউল্লাহ। এর আগে ৮৬তম ওভারেও স্ট্রাইকে থাকা মাহমুদউল্লাহকে বল করতে গিয়ে থেমে যান।
ব্যক্তিগত ৩২ রানে জীবন পান তাসকিন। রিচার্ড এনগারাভার বলে দ্বিতীয় স্লিপে দুইবারের চেষ্টাতেও তালুবন্দী করতে পারেননি মিল্টন শুম্বা। অবশ্য এর আগে পরে এই টাইগার পেসার ছিলেন পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান ভূমিকায়। ৯৩তম ওভারে মুজারাবানিকে কাভার দিয়ে হাঁকানো বাউন্ডারিটি ছিল দৃষ্টিনন্দন।
তাসকিনের যোগ্য সঙ্গে পেয়ে মাহমুদউল্লাহ নিজের প্রত্যাবর্তন ইনিংসকে মহামূল্যবান করার সবটুকু প্রয়াস দেখিয়েছেন। এনগারাভাকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে পৌঁছান ৮৫ রানে। একই বোলারকে চার মেরে ৯৫ তে যান এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
পরের ওভারে পার্ট টাইম স্পিনার রয় কায়াকে পয়েন্ট দিয়ে টানা দুই চার মেরে ছুঁয়েছেন তিন অঙ্ক। ১৯৫ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি হাঁকানোর পথে মেরেছেন ১১ চার ও ১ ছক্কা। পরের ওভারেই ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দেখা পেয়ে যান তাসকিনও। শেষ পর্যন্ত সেশনে কোনো উইকেট হারানো ছাড়াই লাঞ্চে গেল বাংলাদেশ।
২১৫ বলে ১১ চার ১ ছকায় মাহমুদউল্লাহ ১১২ ও ৮৯ বলে ৮ চারে ৫২ রানে অপরাজিত আছেন তাসকিন। অবিচ্ছেদ্য ১৩৪ রানের জুটিতে দলীয় সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৪০৪। ইনিংসের লিটন দাসের সাথে মাহমুদউল্লাহর জুটি ছিল ১৩৮ রানের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (২য় দিন, লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত):
বাংলাদেশ ৪০৪/৮ (১০৭), সাইফ ০, সাদমান ২৩, শান্ত ২, মুমিনুল ৭০, মুশফিক ১১, সাকিব ৩, লিটন ৯৫, মাহমুদউল্লাহ ১১২*, মিরাজ ০, তাসকিন ৫২*; মুজারাবানি ২২-৩-৭২-৩, এনগারাভা ২০-৫-৬৯-১, টিরিপানো ১৯-৪-৫১-২, নিয়াউচি ১৫-১-৮২-২।