

জিতলেই চলমান ঢাকা প্রিয়িয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএলে) রানার আপ হওয়ার সুযোগ ছিল প্রাইম দোলেশ্বরের সামনে। অন্যদিকে টানা ৪ ম্যাচে হারা মোহামেডানের জন্য কেবলই জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করার উপলক্ষ্য ছিল। মিরপুরে আজ (২৬ জুন) মুখোমুখি লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলো মোহামেডানই।
বৃষ্টি আইনে প্রাইম দোলেশ্বরকে ২৫ রানে হারানো ম্যাচে আগুন ঝরানো বোলিং করলেন দলটির দুই পেসার রুয়েল মিয়া ও ইয়াসিন আরাফাত মিশু। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি রুয়েলের প্রথম ৫ উইকেট শিকারের দিনে মিশুর ৪ উইকেটে লণ্ডভণ্ড দোলেশ্বর ইনিংস।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টি বাঁধায় পড়ে মোহামেডান। ১৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে অধিনায়ক শুভাগত হোমের ৮ বলে ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংসে দলীয় সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১০৩। জবাবে দারুণ শুরু পেয়েও মিশুর ৩ ওভারের টানা স্পেলে খেই হারায় প্রাইম দোলেশ্বর। পরে সেই নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে রুয়েল উইকেট উৎসবে মাতলে আত্মসমর্পণ করতে হয় ফরহাদ রেজার দলকে।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারাতে পারতো প্রাইম দোলেশ্বর। রুয়েল মিয়ার করা শর্ট অব লেংথের বলে পুল করে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন ইমরান উজ্জামান। মাহমুদুল হাসান লিমন সহজ ক্যাচটি না ছাড়লে খালি হাতেই ফিরতে হত ইমরান উজ্জামানকে। তবে ঐ ওভারে দুইটি বাউন্ডারি হাঁকান লিগে প্রথম খেলতে নামা আরেক ওপেনার তৌফিক খান (৮)। যদিও ফিরতে হয়েছে শেষ বলে লিমনের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
দ্বিতীয় ওভারে স্পিনার আসিফ হাসানকে একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান নতুন ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান। আবু হায়দার রনির করা তৃতীয় ওভারে ইমরান উজ্জামান হাঁকান আরও ২ ছক্কা। ৩ ওভারেই প্রাইম দোলেশ্বর স্কোরবোর্ডে ৩৫ রান।
তবে এরপরই পেসার ইয়াসিন আরাফাত মিশুর ৩ ওভারের অগ্নিঝরা স্পেল। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ১ বলের ব্যবধানে ফিরেছেন ইমরান (১৫) ও সাইফ (১১)। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে মিশু ফেরান মার্শাল আইয়ুবকেও (৫)।
মিশুর দেওয়া বাউন্সার খেলতে গিয়ে দ্বিধায় ভুগে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মার্শাল। তৃতীয় ওভার করতে এসে অধিনায়ক ফরহাদ রেজাকে শর্ট পিচ ডেলিভারিতে শর্ট ফাইন লেগে আব্দুল মজিদের ক্যাচে পরিণত করে এই ডানহাতি পেসার। আর তাতেই ৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে প্রাইম দোলেশ্বর। মিশুর স্পেল ৩-০-১১-৪!
এরপর উইকেট শিকারে যোগ দেন ইনিংসের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেয়া রুয়েল মিয়া। নিজের দ্বিতীয় স্পেলে শিকার করেন ৪ উইকেট। ২.৪ ওভারের স্পেলে ২১ রান খরচায় ম্যাচে উইকেট নিলেন ৫ টি। এর আগে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি তার উইকেটই ছিল ৫ টি। ৮১ রানে গুটিয়ে ২৫ রানে হারতে হল প্রাইম দোলেশ্বরকে। ফজলে রাব্বির ১৬ রান ছাড়া শেষদিকে বলার মত রান নেই কারও ব্যাটেই। অন্যতম ভরসার নাম শামীম পাটোয়ারী ফিরেছেন ৮ রান করে।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ২.৩ ওভার খেলার পরই নামে বৃষ্টি। বৃষ্টি শেষে ম্যাচ নেমে আসে ১৩ ওভারে। কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১০ রান তোলা মোহামেডান বৃষ্টি শেষে আবারও ব্যাট করতে নেমে ৭ বলের মাথায় হারায় প্রথম উইকেট। স্পিনার মোহাম্মদ শরিফউল্লাহর বলে স্টাম্পড হন অভিষেক মিত্র (১২ বলে ৩)। ধীরগতিতে শুরু করা মোহামেডান ৬ ওভারে ১ উইকেটে ২৮ রানের বেশি তুলতে পারেনি।
তবে তিন নম্বরে নামা শাকিল হোসেনকে নিয়ে ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করেন ইমন। ফরহাদ রেজার করা ৮ম ওভারে আসে ২ চারে ১৩ রান। তবে এনামুল হক জুনিয়রের করা ৯ম ওভারেই আবার ছন্দ পতন। প্রথম বলে ইমন ফিরেছেন ২১ বলে ২৬ রান করে, শাকিলকে থামতে হয় ১৯ বলে ১৮ রানে।
এখনো পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা বোলার কামরুল ইসলাম রাব্বির করা ১১তম ওভারে মোহামেডান হারায় আরও ২ উইকেট। শামসুর রহমান শুভকে (৯) সাইফ হাসানের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করার পর ইরফান শুক্কুরকে (৭) সরাসরি থ্রোতে রান আউট করেন রাব্বি।
১২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৭৫ রান তোলা মোহামেডান শেষ ওভারে অধিনায়ক শুভাগত হোম ও মাহমুদুল হাসান লিমনের ব্যাটে তোলে ২৮ রান। যেখানে শুভাগতই নিয়েছেন ২ চার, ২ ছক্কায় ২১ রান। ৮ বলের ক্যামিওতে শুভাগত অপরাজিত ছিলেন ২৩ রানে, ৬ বলে ৯ রানে অপরাজিত লিমন। মোহামেডান থেমেছে ৫ উইকেতে ১০৩ রানে।