

৬১ বছরের খরা কাটিয়ে টেস্টে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজের। ৩২৪ রানের লক্ষ্যে উইন্ডিজ মাত্র ১৬৫ রানে গুটিয়ে গেলে অনায়াসেই জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জিতে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করল ডিন এলগারের দল। পুরো সিরিজে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করা কুইন্টন ডি কক জিতেছেন সিরিজ সেরার পুরষ্কার।
সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয় টেস্টে ১৫৮ রানে হারিয়ে ২ টেস্টের সিরিজ ২-০তে জিতে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক পেয়েছেন কেশব মহারাজ। ১৯৬০ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম প্রোটিয়া ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট হ্যাটট্রিক করেছিলেন জিওফ গ্রিফিন। ৬১ বছরের খরা কাটিয়ে সেন্ট লুসিয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন কেশব।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩২৪। শনিবার তৃতীয় দিন শেষ করেছে তারা কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৫ রান নিয়ে। চতুর্থ দিন সকালে উইন্ডিজ ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম তিন উইকেটের তিনটিই তুলে নেন রাবাদা।
৩৭তম ওভারে পরপর তিন বলে তিন উইকেট শিকার করেন স্পিনার কেশব মহারাজ। ওভারের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বলে কাইরন পাওয়েল, জেসন হোল্ডার ও জশুয়া ডা সিলভাকে ফিরিয়েছেন প্যাভিলিয়নে। পাওয়েল সর্বোচ্চ ৫১ রান ও মায়ের্স ৩৪ রান করেন। উইন্ডিজের স্কোরবোর্ড ৩ উইকেটে ১০৭ রান থেকে ৬ উইকেটে ১০৭ রান হয়ে যায় মহারাজের স্পিন বিষে।
জার্মেইন ব্ল্যাকউডের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রানের ইনিংস। শেষদিকে কেমার রোচের ২৭। এরপর আর বেশি দূর এগোয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। অলআউট হয়ে যায় ১৬৫ রানে। আর তাতেই ১৫৮ রানের বড় জয় নিশ্চিত হয় সফরকারীদের। সঙ্গে সিরিজ জয়ও।
দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়াদের সেরা বোলার কেশব মহারাজ। ৩৬ রান খরচায় তিনি দখলে নেন ৫ উইকেট। দুই ইনিংসে তাঁর উইকেট ৭টি। এছাড়া কাগিসো রাবাদা ৩টি ও লুঙ্গি এনগিডির শিকার ১ উইকেট।
ব্যাটে-বলে সফল কাগিসো রাবাদা ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫ উইকেট (২, ৩) শিকারের পাশাপাশি ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ২১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিরোধ গড়ে ৪০ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংসঃ ২৯৮/১০ (১১২.৪ ওভার) এলগার ৭৭, পিটারসেন ৭, ডুসেন ৭, ভেরেইনা ২৭, ডি কক ৯৬, মুল্ডার ৮, মহারাজ ১২, রাবাদা ২১*; রোচ ২১.৪-৬-৪৫-৩, গ্যাব্রিয়েল ১৬-৪-৬৫-২, সিলস ১৯-৪-৪৪-১, হোল্ডার ২১-৫-৪৭-১, মায়ের্স ১৫-৬-২৮-৩
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংসঃ ১৪৯/১০ (৫৪ ওভার) ব্র্যাথওয়েট ০, পাওয়েল ৫, হোপ ৪৩, চেইস ৪, মায়ের্স ১২, ব্ল্যাকউড ৪৯, হোল্ডার ১০, জশুয়া ৭, রোচ ১, সিলস ০, গ্যাব্রিয়েল ০*; রাবাদা ১৩-৬-২৪-২, এনগিডি ৭-০-২৭-২, নরকিয়া ১২-০-৪১-১, মহারাজ ১৮-২-৪৭-২, মুল্ডার ৪-৩-১-৩
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংসঃ ১৭৪/১০ (৫৩ ওভার) এলগার ১০, পিটারসেন ১৮, ডুসেন ৭৫*, রাবাদা ৪০, রোচ ১৩-১-৫২-৪, মায়ের্স ৯-২-২৪-৩, সিলস ১১-৩-৩৪-১, হোল্ডার ১১-২-২৪-১, ব্র্যাথওয়েট ৩-০-১০-১
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংসঃ (টার্গেট ৩২৪) ১৬৫/১০ (৫৮.৩ ওভার) ব্র্যাথওয়েট ৬, পাওয়েল ৫১, মায়ের্স ৩৪, ব্ল্যাকউড ২৫, রোচ ২৭; মহারাজ ১৭.৩-৭-৩৬-৫, রাবাদা ১৬-৩-৩৪-৩, লুঙ্গি ১০-২-২৯-১
ফলাফলঃ দক্ষিণ আফ্রিকা ১৫৮ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরাঃ কাগিসো রাবাদা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
সিরিজঃ দক্ষিণ আফ্রিকা ২-০ ব্যবধানে জয়ী
সিরিজ সেরাঃ কুইন্টন ডি কক (দক্ষিণ আফ্রিকা)।