

প্রথম তিন ম্যাচে জয় পাওয়া সাকিব আল হাসানের মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবার হ্যাটট্রিক করলো হারের। ব্যাট হাতে সাকিবের আরও একটি ব্যর্থ হবার দিনে লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জের কাছে ৯ উইকেটে হেরেছে মোহামেডান। শুভাগত হোম ফিফটি না হাঁকালে ব্যাটিং ইনিংসে হয়তো আরও বড় লজ্জাই অপেক্ষা করছিল সাকিবদের জন্য।
২৭ রানে ৬ উইকেট হারানো মোহামেডানের সম্মান বাঁচানো পুঁজি এনে দেয় শুভাগত হোমের ৫২ রানের ইনিংস। ৯ উইকেটে তাদের তোলা ১১৩ রান ১১ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে টপকায় লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ। ফিফটি হাঁকিয়েছেন লিগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ওপেনার পিনাক ঘোষ। লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জের এটি দ্বিতীয় জয়।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নেমে একদম সাবলীল শুরু পায় লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ। দুই ওপেনার পিনাক ঘোষ ও মেহেদী মারুফ ১৩.৫ ওভার স্থায়ী জুটিতে তুলে ফেলেন ৮৯ রান। লক্ষ্য ছোট হওয়াতে তাড়াহুড়ো ছিল না দুজনেরই। যদিও সাকিব আল হাসানের করা প্রথম ওভারেই ছক্কা হাঁকান পিনাক। সময়ের সাথে সাথে দুজনেই রান তোলাতে হয়েছেন ধীর।
মাহমুদুল হাসান লিমনের স্পিনে বোল্ড হওয়ার আগে মারুফের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ বলে ৬ চারে ৪১ রান। জয়ের পথে বাকি কাজটা পিনাক ঘোষ সেরেছেন সাব্বির রহমানকে নিয়ে। দল জিতেছে ৯ উইকেট ও ১১ বল হাতে রেখে। ১৭তম ওভারে ফিফটির দেখা পাওয়া পিনাকও টি-টোয়েন্টির সাথে বেমানান ইনিংস খেলেছেন। লক্ষ্য বিবেচনায় ছাড় ছাড় পেতেই পারেন এই বাঁহাতি।
৫০ বলে ফিফটি ছুঁয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৫১ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৫১ রানে। ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই সাকিবকে জয়সূচক ছক্কা হাঁকানো সাব্বির অপরাজিত ছিলেন ৯ বলে ১৪ রানে।
টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ভূতুড়ে শুরু মোহামেডানের। সোহাগ গাজী, নাইম ইসলাম ও মোহাম্মদ শহীদের তোপে ২৭ রানেই হারায় ৬ উইকেট। আউট হওয়া প্রথম ৬ ব্যাটসম্যানের তিনজনই ফিরেছেন খালি হাতে, দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল পারভেজ হোসেন ইমন (১০)। লিগে ব্যাট হাতে চরম ব্যর্থ সাকিব আজ ফিরেছেন ৬ বলে কোন রান না করেই, শহীদের বলে ক্যাচ দেন পিনাক ঘোষকে। লিগে দ্বিতীয় বার ফিরলেন শূন্য রানে।
সেখান থেকে আবু হায়দার রনিকে নিয়ে ৬৬ রানের জুটি শুভাগত হোমের। বাংলাদেশী কোন স্বীকৃত টুর্নামেন্টের সর্বনিম্ন স্কোরের লজ্জা যখন হাতছানি দিয়ে ডাকছে তখনই এই শুভাগত তুলে নেন ফিফটি।
১৭তম ওভারে মোহাম্মদ শহীদের করা চতুর্থ বলে দারুণ এক ছক্কায় ২৯ বলে ছুঁয়েছেন ফিফটি। ফিফটির পথে শুভাগত হাঁকান ১ চারের সাথে ৫ টি দারুণ ছক্কা। অবশ্য ফিরতে হয়েছে ৩ বল পরই। মুক্তার আলির বলে উইকেটের পেচনে ক্যাচ দিয়েছেন ৩২ বলে ৫২ রান করে।
যদিও ক্যাচ নিয়ে তার ছিল সন্দেহ, আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে কিছুটা অবাকও হন। ২৫ বল খেলে ১৫ রান করে আউট হন রনি। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১১২ রানে থামে মোহামেডান।
লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জের হয়ে সর্বোচ্চ দুইটি করে উইকেট সোহাগ গাজী, মোহাম্মদ শহীদ, নাইম সিওলাম ও কাজী অনিকের। মাত্র ৪ ওভারে ৮ রান খরচায় ২ উইকেট নেয়া সোহাগ গাজী হয়েছেন ম্যাচসেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ১১৩/৯ (২০), মাহমুদুল ০, ইমন ১০, শুভ ৫, সাকিব ০, নাদিফ ০, শুক্কুর ৯, শুভাগত ৫২, রনি ১৫, মিশু ৬, রাহি ৮*, আসিফ ৫*; গাজী ৪-২-৮-২, শহিদ ৪-০-২১-২, নাইম ২-০-৬-২, অনিক ৩-০-২৯-২, মুক্তার ২-০-১২-১
লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ ১১৭/১ (১৮.১), পিনাক ৫১*, মেহেদী ৪১, সাব্বির ১৪*; মাহমুদুল ৩-০-১১-১
ফলাফলঃ লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরাঃ সোহাগ গাজী (লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ)।