

২০১৯ সাল থেকে জাতীয় দলের প্রাথমিক কিংবা চূড়ান্ত স্কোয়াডে থাকাটা ইয়াসির আলি রাব্বির জন্য নিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। রঙিন কিংবা সাদা পোশোকের মূল স্কোয়াডে ডাক পাচ্ছেন নিয়মিত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজের মূল স্কোয়াডেও ছিলেন চট্টগ্রামের এই ব্যাটসম্যান। তবে এখনো পর্যন্ত কোন ফরম্যাটেই হয়নি অভিষেক। প্রায় দুই বছর ধরে দলের সাথে ঘুরে বেড়ালেও অভিষেকের প্রহরটা গুনতে হচ্ছে আরও।
তবে জাতীয় দলের বিবেচনায় বেশ ভালোভাবেই আছেন এই ব্যাটসম্যান। সাম্প্রতিক সময়ে সাদা পোশাকের স্কোয়াডেই তার ডাকটা সীমাবদ্ধ হয়ে আছে বলে বোঝাই যাচ্ছে ক্রিকেটের রাজকীয় ফরম্যাট দিয়েই হয়তো অভিষেক হতে পারে এই ডানহাতির। ‘ক্রিকেট৯৭’ কে এমনটাই আভাস দিলেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। রাব্বিকে টেস্ট ফরম্যাটের জন্যই বিবেচনা করছেন, কম্বিনেশনের কারণে এতদিনে সুযোগ না আসলেও ভবিষ্যতে আসবে এমনটাই বলছেন প্রধান নির্বাচক।
তিনি বলেন, ‘এখন হচ্ছেনা তবে আস্তে আস্তে সামনে হয়তো সুযোগ আসবে। এখন দলের সাথে থেকে সে পরিবেশটার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া শিখছে। আমরা মূলত তাকে টেস্ট ফরম্যাটের জন্যই বিবেচনায় রাখছি।’
এদিকে ‘ক্রিকেট৯৭’ কে রাব্বি জানিয়েছেন তিন ফরম্যাটেই জাতীয় দলের হয়ে খেলার ইচ্ছে তবে দল যে ফরম্যাটের জন্য তাকে বিবেচনা করবে প্রতিদান দিতে চান সেখানেই। লম্বা সময় ধরে দলের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বেশ কয়েকটি সিরিজে চূড়ান্ত স্কোয়াডে থেকেও এখনো অভিষেক না হওয়াটা কখনো কখনো খারাপ লাগায়। কিন্তু সেসব পাশ কাটিয়ে জাতীয় দলের সাথে থেকে সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা নিতে পারাটাকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। এই সময়ে ভালো মানের কোচদের সাথে কাজ করে উন্নতি হয়েছে টেকনিক্যাল, ট্রেকটিক্যাল ও মেন্টাল তিন বিভাগেই।
২৫ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘আসলে ২০১৯ সালে ছিলাম, ২০২০ সালেও স্কোয়াডে ছিলাম তবে ২০২০ সালকে মাঝখান থেকে বাদ দেয়াটাই ভালো। কারণ ২০২০ সালে আমরা খুব বেশি ক্রিকেট খেলতে পারিনি। জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর পাকিস্তান সিরিজে অভিষেক হওয়ার একটা কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে খেলাই বাতিল হওয়াতে এটা নিয়ে এখন আর আফসোস করে লাভ নেই। জাতীয় দলের সাথে থাকাটাই অনেক বড় ব্যাপার। থাকি, ইন শা আল্লাহ হয়তো সুযোগ হয়ে যাবে একদিন।’
‘একটুতো মাঝে মাঝে কষ্ট লাগে কিন্তু আসলে ওসব জিনিস পাশে ফেলে কিভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় সেটা মূল বিষয়। কারণ কেউই দলের খারাপ চায়না, দলের ভালোর জন্যই সবকিছু সাজানো হয়। কোনো কম্বিনেশনের কারণে হচ্ছে না, হয়তো সামনে হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ। এ জিনিসটাই মাথায় থাকে সবসময়।’
জাতীয় দলের কোচদের সাথে কাজ করা প্রসঙ্গে রাব্বি বলেন, ‘অবশ্যই এ জিনিসগুলোই ইতিবাচক দিক। জাতীয় দলের সাথে থাকতেছি, ভালো ভালো কোচের অধীনে অনুশীলনের সুযোগ পাচ্ছি। আল্লাহর রহমতে আমার নিজেরই টেকনিক্যাল, ট্রেকটিক্যাল, মেন্টাল দিকগুলো ভালো হচ্ছে।’
‘আর সবচেয়ে যে জিনিসটা ভালো হচ্ছে সেটা হল দলের সাথে অনেকদিন ধরে আছি, পরিবেশটা বুঝছি যে ভবিষ্যতে কি হতে পারে, আমি যখন সুযোগ পাবো তখন কি কি চ্যালেঞ্জ আসতে পারে আমার জন্য। এ জিনিসগুলো এখনই বুঝতেছি, আশা করি হয়তো এগুলো ভবিষ্যতে কাজে দিবে ইন শা আল্লাহ।’
‘আসলে আপনি যদি দেখেন আমি যে পজিশনে খেলি সেখানে ওয়ানডেতে সুযোগটা কম। আমি আসলে এসব নিয়ে চিন্তাও করছিনা আমার চিন্তা হল যে ফরম্যাটেই আমাকে নেয়া হোক আমি যেন ভালো খেলতে পারি। ইচ্ছে তো বাংলাদেশের জার্সিতে তিন ফরম্যাটেই খেলার।’
উল্লেখ্য, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট পরিসংখ্যান রাব্বির হয়ে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য বেশ ভালোভাবেই কথা বলে। ৫৪ ম্যাচে ৫১.২০ গড়ে ইতোমধ্যে ৮ সেঞ্চুরি ২৪ ফিফটিতে রান করেছেন ৩৭৮৯। অন্য দুই ফরম্যাটের পরিসংখ্যানও বিবেচিত হওয়ার মতই। ৭৭ টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ৩৪.৭৭ গড়ে ১৮৭৮ ও ৪০ টি স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ২৬.২৩ গড়ে ৮৯২ রান নামের পাশে।