বাবরের সেঞ্চুরিতে অনায়াসে রান পাহাড় টপকাল পাকিস্তান

বাবরের সেঞ্চুরিতে অনায়াসে রান পাহাড় টপকাল পাকিস্তান
Vinkmag ad

সেঞ্চুরিয়ানের সুপারস্পোর্ট পার্ক এমনিতেই রান প্রসবা। টি-টোয়েন্টিতে ২২২ রান তাড়া করে জেতার ঘটনাও আছে এই মাঠে। পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে আবারও দেখা মিলল রান বন্যার ম্যাচের। বাবর আজমের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির সাথে মোহাম্মদ রিজওয়ানের অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ২০৪ রানের লক্ষ্যটাও যেন কম হয়ে গেল পাকিস্তানের জন্য।

২০৪ রানের লক্ষ্য ৯ উইকেট ও ১২ বল হাতে রেখে জয়ের মাধ্যমে ৪ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে সফরকারী পাকিস্তান এগিয়ে গেল ২-১ ব্যবধানে। বাবর আজম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের আরেক অর্জনের দিনে। এ দিনই ভিরাট কোহলিকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মত ওয়ানডে ব্যাটসম্যানদের র‍্যাংকিংয়ে এক নম্বরে উঠে আসেন।

দলকে জয় থেকে মাত্র ৭ রান দূরে রেখে আউট হওয়ার আগে গড়েছেন পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ড। ২০১৪ সালে আহমেদ শেহজাদের খেলা অপরাজিত ১১১ রানের ইনিংসকে পেছনে ফেলে বাবর খেললেন ১২২ রানের ইনিংস। বাবর-রিজওয়ানের ১৯৭ রানের উদ্বোধনী জুটি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ডও।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৬৪ ও ১০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে তোলেন ১০১ রান। ৯ম ওভারের প্রথম বলে লিন্ডেকে চার মেরে ২৭ বলে ফিফটিতে পৌঁছান বাবর। পরের ফিফটি তুলতে খেলেছেন ২২ বল। বাঁহাতি চায়নাম্যান তাব্রাইজ শামসির করা ১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে ৯৬ রানে পৌঁছান পাকিস্তানি কাপ্তান। মাঝে ওয়াইড বলের বিরতি শেষে চতুর্থ বলেই কাভার দিয়ে চার মেরে সেঞ্চুরি উদযাপনে মাতেন।

বাবরের সাথে তাল মিলিয়ে চার-ছক্কা হাঁকাতে থাকেন প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ের নায়ক রিজওয়ান। ৩২ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ততক্ষণে পেয়ে যান ফিফটির দেখা। দুজনের জুটি থেমেছে দলীয় ১৯৭ রানে। যা যেকোন উইকেটে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটি, যেকোন উইকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ।

লিজাড উইলিয়ামসের করা ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে বাবর ফিরেছেন উইকেট রক্ষক হেনরিখ ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৫৯ বলে ১২২ রানের ইনিনহসটি সাজিয়েছেন ১৫ চার ও ৪ ছক্কায়। বাবরের বিদায়ের পর টানা দুই বলে চার হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন নতুন ব্যাটসম্যান ফখর জামান। ৪৭ বলে ৫ চার ২ ছক্কায় ৭৩ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনারও এনে দিয়েছিলেন উড়ন্ত সূচনা। এইডেন মার্করাম-ইয়ানেমান মালান ১০.৪ ওভার স্থায়ী জুটিতে যোগ করে ১০৮ রান। দুজনে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে স্কোরবোর্ডে তোলে ৬৫ রান, ১০ ওভারে ঠিক ১০০ রান। জুটিতে মালানের চেয়ে আক্রমণাত্মক মার্করাম, ২৫ বলে ছুঁয়েছেন ফিফটি।

টানা তৃতীয় ফিফটি তুলে নেওয়ার পথে হাঁকিয়েছেন ৫ চার ৩ ছক্কা। শেষ পর্যন্ত বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজকে স্লগ খেলতে গিয়ে বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন ৩১ বলে ৬ চার ৪ ছক্কায় ৬৩ রান।

মার্করামের বিদায় নিলেও চার-ছক্কার ফুলঝুরি মুগ্ধ করেছে মালান। জর্জ লিন্ডের সাথে জুটি ৩৩ রানের, ১১ বলে ১ চার ২ ছক্কায় লিন্ডে আউট হয়েছেন ২২ রান করে। ২ রানের ব্যবধানে ফিরে যান মালানও, ততক্ষণে তুলে নেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ফিফটি। ৩৬ বলে ফিফটি ছোঁয়া মালান নওয়াজের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে করেছেন ৪০ বলে ৫ চার ২ ছক্কায় ৫৫ রান।

মার্করাম-মালানে পাওয়া ভীত কাজে লাগিয়ে সিরিজে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ভ্যান ডার ডুসেন, অধিনায়ক হেনরিখ ক্লাসেন ও আন্দিলে ফেলুকওয়ায়ো’র ছোট তবে কার্যকরী ইনিংসে ভর করে বড় সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। ৫ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২০৩ রান।

ডুসেন অপরাজিত ছিলেন ২০ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ৩৪ রানে। হাসান আলির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ক্লাসেন করেছেন ১০ বলে ১৫। ইনিংসের শেষ বলে শাহীন শান আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়া ফেলুকওয়ায়ো করেন ৮ বলে ১১ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

দক্ষিণ আফ্রিকা ২০৩/৫ (২০ ওভার), মালান ৫৫, মার্করাম ৬৩, লিন্ডে ২২, ডুসেন ৩৪*, ক্লাসেন ১৫, ফেলুকওয়ায়ো ১১; আফ্রিদি ৪-০-৩৯-১, নওয়াজ ৪-০-৩৮-২, হাসান ৪-০-৪৭-১, রউফ ৪-০-৪০-০, ফাহিম ৪-০-৩৭-১।

পাকিস্তান ২০৫/১ (১৮ ওভার), রিজওয়ান ৭৩*, বাবর ১২২, ফখর ৮*; লিন্ডে ৪-০-৩৮-০, হেন্ড্রিকস ৪-০-৫৫-০, উইলিয়ামস ৪-০-৩৪-১, তাব্রাইজ ৩-০-৩৯-০, মাগালা ৩-০-৩৮-০।

ফলাফলঃ পাকিস্তান ৯ উইকেট ও ১২ বল হাতে রেখে জয়ী

ম্যাচসেরাঃ বাবর আজম (পাকিস্তান)।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

সাকিব ও আগারওয়ালের মাঝে যোগাযোগের সেতু হিথ স্ট্রিক!

Read Next

করোনা টেস্টে পজিটিভ আনরিখ নরকিয়া

Total
72
Share