

বোলারদের দূরদর্শিতায় হারতে থাকা ম্যাচে জয় পেল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ১৪তম আইপিএলে নিজেদের ২য় ম্যাচে সাকিব আল হাসানের কোলকাতা নাইট রাইডার্সকে তারা হারিয়েছে ১০ রানের ব্যবধানে। সাকিব আল হাসান চার ওভারে ২৩ রানে ১ উইকেট নিয়ে ইকোনমিকাল বোলিং করলেও ব্যাটিংয়ে মাত্র ৯ রান করে দলের হারের সঙ্গী হন।
কেকেআরের একাদশ অপরিবর্তিত থাকে। অন্যদিকে আগের ম্যাচে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার ক্রিস লীনকে বাদ দিয়ে কুইন্টন ডি কককে অন্তর্ভূক্ত করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মুম্বাই শুরুতে ডি কককে হারিয়ে হোঁচট খেয়ে বসে। তবে ঈর্ষণীয় ফর্মে থাকা সুরিয়া কুমার যাদব এবং রোহিত শর্মার ব্যাটিংয়ে বিপর্যয় কাটিয়ে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। বিশেষ করে সুরিয়া কুমার যাদব নিজের সাবলীল ব্যাটিং করে অর্ধশতক আদায় করে নেন।
এদিন চমৎকার বোলিং করতে থাকেন সাকিব আল হাসান। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে নিজের শেষ ওভারে সফলও হন তিনি। তার বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে শুবমান গিলের হাতের ধরা পড়েন মুম্বাইয়ের সর্বোচ্চ স্কোরার সুরিয়া কুমার (৫৬)। চার ওভার বল করে মাত্র ১টি বাউন্ডারি হজম করে ২৩ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন ১টি।
View this post on Instagram
সাকিবের ইকোনমিকাল স্পেল এবং সুরিয়া কুমারের বিদায়ের পর ব্যাটিং লাইনআপে আগের দিনের মত এদিনও মড়ক ধরে মুম্বাইয়ের। রোহিত একপ্রান্ত আগলে রাখলেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় দ্রুত উইকেট যেতে থাকে তাদের। ইশান কিশান, হার্দিক পান্ডিয়া, কাইরন পোলার্ড কিংবা ক্রুনাল পান্ডিয়া, কেউই ব্যাটিংয়ে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। রোহিত ৪৩ রান করে আউট হন।
সাকিবের পাশাপাশি প্যাট কামিন্স ও বরুণ চক্রবর্তী চমৎকার লাইন লেন্থ বজায় রেখে বল করতে থাকেন। কামিন্স ২টি এবং বরুণ ১ উইকেট নেন। তবে স্লগ ওভারে বোলিংয়ে এসে শেষ ৫টি উইকেটই নিজের করে নেন কেকেআরের মারকুটে অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। ২ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট প্রাপ্তি টি-টোয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।
View this post on Instagram
পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করলেও ১৫২ রানে সবকয়টি উইকেট হারায় মুম্বাই। ১ম ম্যাচেও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হারশাল প্যাটেলের ৫ উইকেট প্রাপ্তিতে অলআউট হয়েছিল মুম্বাই।
১৫৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দারুণ শুরু করেন কেকেআরের দুই ওপেনার নিতিশ রানা এবং শুবমান গিল। দুইজনের ৭২ রানের জুটিতে তাদের জয়ের পথে এগিয়ে যেতে থাকে। গিল ৩৩ রান করে আউট হন।
টানা দুই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান নিতিশ রানা। আগের ম্যাচের মত এ ম্যাচেও দলের সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি।
রানা ও গিল ছাড়া আর কোন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান ব্যাটিংয়ে কৃতকার্য হতে পারেননি। ব্যাটিং ব্যর্থতার পরিচয় দেন সাকিবও (৯)।
শেষ ৫ ওভারে হাতে ৬ উইকেটে মাত্র ৩১ রানের দরকার পড়লেও জাসপ্রীত বুমরাহ ও ট্রেন্ট বোল্টের তোপে পড়ে ১০ রানে ম্যাচ হেরে বসে।
মুম্বাইয়ের দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার রাহুল চাহার ও ক্রুনাল পান্ডিয়া দুর্দান্ত বোলিং করেন। কেকেআরের ১ম ৪টি উইকেটই রাহুল দখল করেন। অন্যদিকে শুধু সাকিবের উইকেট নিলেও ৪ ওভার বোলিংয়ে মাত্র ১৩ রান দিয়েছেন ক্রুনাল। শেষ ওভারে চমৎকার বোলিংয়ে ২ উইকেটের পাশাপাশি দলের জয় নিশ্চিত করেন বোল্ট।
৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন মুম্বাইয়ের লেগ স্পিনার রাহুল চাহার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সঃ ১৫২/১০ (২০), রোহিত ৪৩, ডি কক ২, সুরিয়া কুমার ৫৬, কিশান ১, হার্দিক ১৫, পোলার্ড ৫, ক্রুনাল ১৫, জেনসেন ০, রাহুল ৮, বুমরাহ ০, বোল্ট ০* ; হরভজন ২-০-১৭-০, বরুণ ৪-০-২৭-১, সাকিব ৪-০-২৩-১, কামিন্স ৪-০-২৪-২, কৃষ্ণা ৪-০-৪২-১, রাসেল ২-০-১৫-৫
কোলকাতা নাইট রাইডার্সঃ ১৪২/৭ (২০), রানা ৫৭, গিল ৩৩, ত্রিপাঠি ৫, মরগান ৭, সাকিব ৯, কার্তিক ৮*, রাসেল ৯, কামিন্স ০, হরভজন ২*; বোল্ট ৪-০-২৭-২, জেনসেন ২-০-১৭-০, বুমরাহ ৪-০-২৮-০, ক্রুনাল ৪-০-১৩-১, পোলার্ড ১-০-১২-০, রাহুল ৪-০-২৭-৪, রোহিত ১-০-৯-০
ফলাফলঃ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ১০ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরাঃ রাহুল চাহার (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)।