

করোনার প্রথম থাবাকে এক পাশে সরিয়ে ধীরে ধীরে সরব হওয়ার পথে ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটও শুরু হয়েছিল গত মাসে। চলতি বছর সহ আগামী তিন বছরের ঘরোয়া ক্রিকেট ক্যালেন্ডারও হয়েছিল চূড়ান্ত। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবারও সব যেন এলোমেলো। জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএলের) ২২ তম আসর মাঝপথেই স্থগিত হওয়া সহ ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক সিরিজের অনেক কিছুই এখন পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে।
করোনা বাঁধা দূরে সরিয়ে জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছে বাংলাদেশ। এরপর নিউজিল্যান্ড সফর হয়ে ১২ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার উদ্দেশেও রওয়ানা করতে যাচ্ছে টাইগাররা। তবে আগামী মাসেই শ্রীলঙ্কার বাংলাদেশ সফর সহ দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট পুরোটাই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর।
প্রতিদিনই দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। সরকারিভাবে ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনও ঘোষণা হয়েছে। যে কারণে ইতোমধ্যে আরেক দফা স্থগিত হল পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বাংলাদেশ সফর। এক দফা পিছিয়ে ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশে আসার কথা ছিল পাকিস্তানি যুবাদের। ঈদের পর সিরিজটি আয়োজনে বিসিবি তাকিয়ে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
এদিকে এক বছরের বেশি সময় পর গত ২২ মার্চ এনসিএল দিয়ে নিয়মিত ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলো মাঠে গড়ানো শুরু করেছিল। কিন্তু বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার, কোচ, ম্যাচ অফিসিয়াল করোনা পজিটিভ হওয়া সহ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্বিতীয় রাউন্ডের পরই স্থগিত করা হয় লঙ্গার ভার্সনের এই লিগটি।
আজ (১০ এপ্রিল) মিরপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন,
‘এনসিএলের বিষয়টা আপনার জানেন যে আমরা দুইটা রাউন্ড শেষ করেছিলাম তারপর তৃতীয় রাউন্ডের আগে একটা গ্যাপ নিয়েছি। যদি সবকিছু পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকুলে হয় তাহলে আবার এনসিএলটা শুরু করব।’
মে মাসের মাঝামাঝিতে তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা শ্রীলঙ্কার। এখনো পর্যন্ত দুই বোর্ডই সিরিজটি নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানে থাকলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানালেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন,
‘শ্রীলঙ্কা জাতীয় দল বাংলাদেশে যে তিনটা ওয়ানডে এসে খেলবে, আমরা হোস্ট করব। এখন পর্যন্ত মধ্য মে’তে আসার কথা রয়েছে এবং মে’র শেষের দিকে এই তিনটা ম্যাচ আমরা আয়োজন করব। আমরা সবকিছু বিবেচনায় রেখেই প্রোগ্রাম করছি। তারপরও যদি কোনো অসুবিধা হয় আমরা পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে জুনে এশিয়া কাপ শেষে জিম্বাবুয়ে সফরে যাওয়ার কথা বাংলাদেশের। তবে নানা কারণে এশিয়া কাপ যথাসময়ে মাঠে গড়ানো নিয়েও আছে শঙ্কা। মূলত ভারত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিশ্চিত করাতেই হয়েছে বিপত্তি। এশিয়া কাপ চলাকালীনই মাঠে গড়ানোর কথা নিউজিল্যান্ডের সাথে ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল।
তবে বিসিবি প্রধান নির্বাহী জানালেন এশিয়া কাপ ইস্যুতে সঠিত তথ্য দিতে পারবে কেবল এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। যদিও যথাসময়ে আয়োজন হচ্ছে ধরে নিয়ে নিজেদের প্রস্তুতি ঠিকঠাক নিয়ে রাখছে দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
নিজাম উদ্দিন চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন,
‘এশিয়া কাপটা যেহেতু এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল দেখছে। আমার মনে হয় যে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল কথা বলাটটা সঠিক সংস্থা। আমরা সদস্য হিসেবে এটা বলতে পারি যে আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি যদি এশিয়া কাপের কোনো স্লট নির্ধারিত হয় আমরা সেভাবে অংশগ্রহণ করব।’