

প্রায় এক বছর পর সাদা পোশাকে খেলতে নামলো মুমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করা টাইগাররা দিনের প্রথম সেশন শেষ করেছে ২ উইকেটে ৬৯ রান তুলে। দারুণ শুরু পাওয়া বাংলাদেশ সেশনের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে পারতো সদমান ইসলামের জন্য নিজের ত্যাগ স্বীকার করে নাজমুল হোসেন শান্ত রান আউটে কাটা না পড়লে।
জহুর আহমেদের স্পিন নির্ভর উইকেটে বাংলাদেশ নামছে চার স্পিনারের সাথে মাত্র এক পেসার নিয়ে। আগেরদিন ক্যারিবিয়ান দলপতি ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটও জানিয়েছেন এখানে রাজত্ব করবে স্পিনাররাই। কিন্তু আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ তামিম ইকবালের উইকেট হারিয়েছে কেমার রোচের আড়াআড়ি লেংথে পড়া বলে ব্যাট,প্যাড ছুঁয়ে স্টাম্পে আঘাত হানলে।
৯ রান করা তামিম ইকবাল ও আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম শুরুটা করেছেন বেশ সাবলীল। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও কেমার রোচের পেসকে বুঝেশুনে রানও তুলছেন অনেকটা ওয়ানডে মেজাজে। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে তামিম যখন ফেরেন তখন স্কোরবোর্ডে দলীয় সংগ্রহ ২৩।
View this post on Instagram
৯ রান করে বিদায় নেওয়ার পথে তামিম বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ টেস্ট রান সংগ্রাহক হিসেবে উঠে আসেন। মুশফিকুর রহিমের ৪৪১৩ পেছনে ফেলে তামিম থেমেছেন ৪৪১৪ রানেই। ফলে তিন ফরম্যাটেই বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বাঁহাতি এই ওপেনার।
তামিম বিদায় নিলেও অন্য প্রান্তে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করছিলেন সাদমান ইসলাম। ইনিংসের প্রথম বলেই কাভার ড্রাইভে চার মেরে শুরু করেন ২০১৯ সালের পর টেস্ট খেলতে নামা এই বাঁহাতি। যা ২০১০ সালের পর চার দিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট ইনিংস শুরু হওয়ার ঘটনাও। তিন স্লিপ নিয়ে ফিল্ডিং সাজানো ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ইনিংসের তৃতীয় বলেই পরিবর্তন আনতে বাধ্য হন। তিন নম্বর স্লিপে দাঁড়ানও ক্রুমাহ বোনারকে নিয়ে যান শর্ট কাভারে।
View this post on Instagram
নিজের প্রথম কয়েক ওভারে ব্যাটসম্যানকে খুব একটা অস্বস্তিতে ফেলতে না পারা কেমার রোচ সময়ের সাথে সাথে জানিয়েছেন চ্যালেঞ্জ। গুড লেংথ ও শর্ট বলে বেশ কয়েকবারই করেছেন পরাস্ত। নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলামের জমে যাওয়া জুটিতে ৯ম ওভারে আক্রমণে আসেন ক্যারিবিয়ানদের মূল অস্ত্র অফ স্পিনার রাখিম কর্নওয়াল। বল করেছেন টানা ১০ ওভার, যদিও তাকে ভালোভাবেই সামলায় সাদমান-শান্ত।
দুজনে মিলে জুটিতে যোগ করে ৪৩ রান, ওয়ানডে সিরিজে তিন নম্বরে নেমে ব্যর্থ হওয়া শান্ত খেলছিলেন দারুণভাবে। কিন্তু কাইল মায়ের্সের করা ২৪ তম ওভারেই তালগোল পাকিয়ে বসেন সদমান ইসলাম। ওভারের প্রথম বলেই ফাইন লেগে ফিল্ডার কেমার রোচের হাতে বল রেখেই দুই রান নেওয়ার চেষ্টা। ১ রান করে প্রান্ত বদল করা শান্ত তখন অবাক বিস্ময়ে ফিল্ডারের দিকে তাকিয়ে, ততক্ষণে সদমান ইসলামের জন্য নিজের ত্যাগ স্বীকার করে ফেলেছেন। কেমার রোচের করা থ্রো উইকেট রক্ষক জশুয়া ডা সিলভা হয়ে বোলার কাইল মায়ের্স ভাঙেন স্টাম্প।
৫৮ বলে ৩ চারে বাঁহাতি এই ব্যাটসমায়নের খেলা ২৫ রানের ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে ত্যাগের মাধ্যমে। লাঞ্চের আগের কয়েক ওভার অধিনায়ক মুমিনুল হক ও সদমান ইসলাম নিরাপদেই পাড়ি দেন। যদিও শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের লাফিয়ে ওঠা বলে অস্বস্তির আভাস মুমিনুলের ব্যাটে। শর্ট লেগে দুইবার ধরা পড়তে পড়তেও বেঁচে যান। ২ উইকেটে ৬৯ রানে লাঞ্চে যাওয়া বাংলাদেশের সাদমান ইসলাম অপরাজিত ৮২ বলে ৩৩ রানে অধিনায়ক মুমিনুল অপরাজিত ২ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (১ম দিন ১ম সেশন শেষে):
বাংলাদেশ ৬৯/২ (২৯), সাদমান ৩৩*, তামিম ৯, শান্ত ২৫, মুমিনুল ২*; রোচ ৬-২-১৫-১।