

খর্ব শক্তির দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্টে নেতৃত্ব দিবেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। দলটির ব্যাটিং বিভাগের সবচেয়ে অভিজ্ঞও এই ডানহাতি ব্যাটসমান। মূল লড়াই শুরুর আগে আজ (২৯ জানুয়ারি) থেকে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট হাতে প্রস্তুতিটা ভালোই সারলেন। দলের বিপর্যয়ে এক পাশ আগলে রেখে লড়াকু ইনিংস খেলার রিহার্সেলটাও যেন সেরে নিলেন খালেদ আহমেদ, রিশাদ হোসেনদের বিপক্ষে।
আগে ব্যাট করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭৯.১ ওভার ব্যাট করে অল আউট হওয়ার আগে করেছে ২৫৭ রান। যেখানে ওপেন করতে নেমে অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট ক্রিজে টিকেছিলেন সাড়ে চার ঘন্টার বেশি সময়, ১৮৭ বল খেলে করেছেন সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ৮৫ রান।
ব্র্যাথওয়েটের দারুণ এক ইনিংসের বিপরীতে বল হাতে কারিশমা দেখালেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ও পেসার খালে আহমেদ। রিশাদের ৫ উইকেটের সাথে খালেদের শিকার তিন উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৭ রানে অল আউট হওয়ার পর ৮ ওভার ব্যাট করতে পারা বিসিবি একাদশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ২৪ রান।
দিনের প্রথম সেশনেই এমএ আজিজের ঘাসে ভরা উইকেটে বিসিবি একাদশের দুই পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও খালেদ আহমেদ ভালোই পরীক্ষা নেন ক্যারিবিয়ান দুই ওপেনার জন ক্যাম্পবেল ও ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের। তবে সময়ের সাথে সাথেই সাবলীল হতে থাকেন দুজন। জুটিতে যোগ করে ফেলেন ৬৭ রান। তবে স্পিন ভয়ে ভীত ক্যারিবিয়ানদের প্রথম উইকেটের পতন স্পিনেই।
৪৪ রান করে শাহাদাত হোসেন দিপুর অফ স্পিনে ক্যাম্পবেল বিদায় নিলেও শ্যাইনে মোসেলেকে নিয়ে লাঞ্চের আগে আর কোন বিপর্যয় ঘটতে দেননি ব্র্যাথওয়েট। ১ উইকেটে ৮৯ রানে লাঞ্চে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে লাঞ্চের পরের সেশনেই পুরো নিয়ন্ত্রণ বিসিবি একাদশের বোলারদের। স্রোতের বিপরীতে কেবল লড়াইটা করে গেছেন ব্র্যাথওয়েট। ১৫ রান করা মোসেলেকে বোল্ড করে দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙার পাশাপাশি নিজের পাঁচ উইকেট শিকারের প্রথমটি ঝুলিতে পুরেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। এরপর তার সাথে উইকেট শিকারে যোগ দেন পেসার খালেদ আহমেদও।
ক্রুমাহ বোনারকে (২) লাফিয়ে উঠা বলে উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের দারুণ এক ক্যাচে পরিণত করেন খালেদ। মাঝে জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে (৯) ইয়াসির আলি ক্যাচে পরিণত করান রিশাদ। উইকেট রক্ষক জশুয়া ডা সিলভাকে নিয়ে ১৩১ রানে ৫ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও পথ দেখানোর চেষ্টা ব্র্যাথওয়েটের।
তবে জুটিতে ৩৪ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি দুজন। পার্ট টাইম অফ স্পিনার সাইফ হাসানের বলে ডা সিলভা (২০) ফিরেছেন রিশাদকে ক্যাচ দিয়ে। শেষ পর্যন্ত চা বিরতির আগে ১৮৬ রানে থামে ক্যারিবিয়ানরা। ৬ উইকেটে এই সংগ্রহের পথে ৭২ রানে অপরাজিত আছেন ব্র্যাথওয়েট, তাকে সঙ্গ দেওয়া কাইল মায়ের্স অপরাজিত ২০ রানে।
চা বিরতির পর দুজনের জুটি থামে ৫৩ রানে। ৪০ রান করা মায়ের্সকে বোল্ড করেন রিশাদ। মায়ের্সের বিদায়ের পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকেনি ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস। সেষ সেশনে চার উইকেট হারিয়ে অল আউট হওয়ার আগে থামে ২৫৭ রানে। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন খালেদ। ১০ চারে ৮৫ রানের ইনিংসটি সাজান ক্যারিবিয়ান দলপতি। মাঝে তিন চার দুই ছক্কায় আলঝারি জোসেফ খেলেন ২৫ রানের ইনিংস।
২৩.১ ওভারে ৭৫ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার রিশাদ হোসেনের। ২১ ওভারে ৪৬ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন খালেদ আহমেদের। একটি করে উইকেট ভাগাভাগি করেন সাইফ হাসান ও শাহাদাত হোসেন দিপু।
শেষ বিকেলে ৮ ওভার খেলার সুযোগ পেয়ে বিসিবি একাদশ তোলে ২৪ রান। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, কেমার রোচদের সাবলীলভাবে সামলে ১৫ রানে অপরাজিত আছেন সাইফ হাসান, ৩ রানে অপরাজিত বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (১ম দিন শেষে):
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ ২৫৭/১০ (৭৯.১ ওভার), ব্র্যাথওয়েট ৮৫, ক্যাম্পবেল ৪৪, মোসেলে ১৫, বোনার ২, ব্ল্যাকউড ৯, হজ ০, জশুয়া ২০, মায়ের্স ৪০, জোসেফ ২৫, রোচ ৫*, গ্যাব্রিয়েল ৪; খালেদ ২১-৫-৪৬-৩, মুগ্ধ ১৪-৫-৩৬-০, শাহীন ৮-০-৩৯-০, দিপু ৫-১-২৯-১, রিশাদ ২৩.১-৩-৭৫-৫, সাইফ ৮-১-২৬-১।
বিসিবি একাদশ প্রথম ইনিংসঃ ২৪/০ ০৮ ওভার), সাইফ ১৫*, সাদমান ৩*; রোচ ৩-২-৫-০, গ্যাব্রিয়েল ৪-২-৯-০, কর্নওয়াল ১-০-৬-০।