

দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সফল কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তার অধীনে দুইবার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফ্র্যাঞ্চাইজি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এ ছাড়া দেশের আরেক সফল কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের অধীনে বিপিএল শিরোপা ঘরে তুলেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। তবে এমন সাফল্যের ভীড়েও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আস্থা বরাবরই বিদেশিদের উপর।
চলতি বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে অবশ্য বিদেশি ক্রিকেটারের সাথে নেই বিদেশি কোচও। দেশি কোচদের মূল্যায়ন নিয়ে আরেকবার হতাশা ঝরল ফাইনাল নিশ্চিত করা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের কোচ সালাউদ্দিনের কণ্ঠে। এমনিতে দেশি কোচদের কদর বাংলাদেশ ক্রিকেটে খুব একটা হয়না। বিশেষ করে পারিশ্রমিক ইস্যুতে তারা বেশ পিছিয়ে। যা নতুনদের অনুৎসাহী করে বলে মনে করেন সালাউদ্দিন।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ‘ডি’ ক্যাটাগরির একজন ক্রিকেটার পারিশ্রমিক হিসেবে পাচ্ছেন ৪ লাখ টাকা। অথচ একজন কোচ সেটাও পাচ্ছেন না, ক্যাটাগরি বিবেচনায় নিলে দলগুলোর প্রধান কোচদের পাস্রিশ্রমিকই ‘ই’ ক্যাটাগরিতে। সেক্ষেত্রে সহকারী কোচ কিংবা অন্যান্য সাপোর্ট স্টাফদের অবস্থা আরও খারাপ।
আগামীকাল (১৮ ডিসেম্বর) টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ও মিজানুর রহমান বাবুলের জেমকন খুলনা। গাজী গ্রুপে চাকরি করেন বলে পারিশ্রমিক নিচ্ছেননা কোচ সালাউদ্দিন, তবে অন্য কোচদের পারিশ্রমিক নিয়ে আক্ষেপ আছে তার। গাজী গ্রুপের বিভিন্ন ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে কাজ করেন সালাউদ্দিনই। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স খেলে তার অধীনেই।
আজ (১৭ ডিসেম্বর) মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি এখানে কোন পারিশ্রমিক নিচ্ছি না। গাজী গ্রুপে আমি জব করি। কোচের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে আমি খুব লজ্জিত। আমি সারাজীবনই চেয়েছি বাংলাদেশে যেন কোচেরা আসে, আরও প্লেয়ার আসুক যারা কোচিং করতে আসে। তারা যেন একটা ভালো স্ট্যাটাস নিয়ে বাচতে পারে। আমার কাছে মনে হয় এ ধরণের পারিশ্রমিকে কখনই কোন ছেলেকে বলবো না তোমরা কোচিংয়ে আসো।’
‘এদেশে কোন মূল্যায়ন হয় কীনা ,আমি জানিনা। দেখেন, আমরা ‘ই’ গ্রেডের মানুষ। ‘ডি’ গ্রেডের একটা খেলোয়াড় যা পাচ্ছে, তা কিন্তু একটা কোচও পাচ্ছে না। তাহলে কেন আমি আরেকটা কোচকে বলবো তুমি এই পেশায় আসো। আমরা ‘ই’ গ্রেডের মানুষ, অ্যাসিস্ট্যান্ট কোচরা হয়তো ‘এফ’ গ্রেডের মানুষ। ট্রেইনার জি, এইচ অথবা এমন হবে আরকি।’
কোচদের সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত উল্লেখ করে দেশের অন্যতম সফল এই কোচ আরও যোগ করেন, ‘আমার মনে হয় সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত। আমাদের কোচদের মূল্যায়ন না করা মানে হচ্ছে টিমের প্রতি আমাদের কোন ইমপ্যাক্ট নাই। যদি আপনি বলেন যে কোচদের অনেক ইমপ্যাক্ট থাকে প্লেয়ারদের উপর। আমরা আসলে আছি শুধু একটা ম্যাচ চালিয়ে দিবো, একটা টুর্নামেন্ট চালিয়ে দিবো। এর বাইরে আমাদের আর কিছু করার নাই।’