

১৯৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় যেভাবে শুরু করেছিল বেক্সিমকো ঢাকা সেখান থেকে জয়টা মনে হচ্ছিল অসম্ভবই। বিশেষ করে একপাশ আগলে ওপেনার নাইম শেখ যেভাবে ধীর গতির ইনিংস খেলছিলেন তাতে জয়ের পথটা ছিল কঠিনই।
অথচ ফিফটির আগে জীবন পেয়ে নাইম শেখ তুলে নেন সেঞ্চুরি। প্রথম ফিফটি ছুঁয়েছেন ৪৩ বলে, পরের ফিফটি এসেছে ১৭ বলের এক তান্ডবে। কিন্তু এমন ইনিংসও দলকে জেতাতে পারেনি। ২ রানে হেরেছে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে এসে প্লে-অফ নিশ্চিত করা ফরচুন বরিশালের কাছে।
পাওয়ার প্লেতে মিরাজের করা চতুর্থ ওভারটি মেইডেন হওয়ার পরও ৬ ওভারে ঢাকার স্কোরবোর্ডে উঠে ৫২ রান। বড় লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরুই বলা যায়। কিন্তু টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বাঁহাতি স্পিনার সোহরাওয়ার্দী শুভর তোপে ১০ রানের ব্যবধানে ওপেনার সাব্বির রহমান (১৯), মুশফিকুর রহিম (৫) ও আল আমিন জুনিয়র (০) ফিরে গেলে ব্যাকফুটে চলে যায় ঢাকা।
৬২ রান তিন উইকেট হারানো ঢাকাকে এরপর টেনে ওপেনার নাইম শেখ ও ইয়াসির আলি রাব্বি। দুজনে মিলে ৫৯ বলে যোগ করেন ১১০ রান। যেখানে অবশ্য ভাগ্যের সহায়তা পেয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন নাইম শেখ। ব্যক্তিগত ৪৯ রানে কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ ছাড়েন পারভেজ হোসেন ইমন। এরপর ৫৬ রানে রান আউটের সহজ সুযোগ মিস করেন কামরুল ইসলাম রাব্বি নিজেই। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফিফটি তোলার পরের ১৭ বলেই তিন অঙ্কে পৌঁছে যান নাইম।
তবে শেষ পর্যন্ত বৃথা যায় তার সেঞ্চুরি হাঁকানো ইনিংসটি। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সুমন খানের বলে আউট হওয়ার আগে ফিরেছেন ৬৪ বলে ৮ চার ৭ ছক্কায় ১০৫ রান করে। তার বিদায়ের পর দ্রুত ফিরেছেন ইয়াসির আলি রাব্বিও। ৩৮ রানে জীবন পাওয়া রাব্বি থেমেছেন ৪১ রানে। শেষ ওভারে ঢাকার জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ১৭ রান। কিন্তু আকবর আলি (৯*), মুক্তার আলিরা (৬) নিতে পারেননি ১৪ রানের বেশি।
২ রানে হেরে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে বেক্সিমকো ঢাকা। চতুর্থ হয়ে প্লে-অফ খেলবে ফরচুন বরিশাল।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ফরচুন বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসানও দারুণ শুরু পান। দুজনে মিলে জুটিতে যোগ করেন ৫৯ রান। ১৯ রান করে তামিম ইকবাল ফিরলে ভাঙে জুটি, পারভেজ হোসেন ইমন করতে পেরেছেন ১৩ রান। প্রথম ১০ ওভারে ৮০ রান তোলা বরিশাল অবশ্য ছন্দ হারায় পরের ৫ ওভারে। যেখানে তুলতে পারে মাত্র ৩৫ রান। ততক্ষণে বিদায় নেয় ফিফটি তোলা সাইফ হাসানও। ৪৩ বলে ৮ চারে ইনিংসটি সাজান সাইফ।
১৫ ওভার শেষে বরিশালের স্কোরবোর্ডে ৩ উইকেটে ১১৫ রান। এরপরের গল্পটা কেবলই আফিফ হোসেন ধ্রুব ও তৌহিদ হৃদয়ের। অবিচ্ছেদ্য চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৩৮ বলে ৯১ রান। দুজনেই পেয়েছেন ফিফটির দেখা। তবে তাদের ক্ষেত্রেও সহায় হপ্যেছে ভাগ্য। ব্যক্তিগত ১২ রানে জীবন পান আফিফ। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৫ বলে ১ চার ৫ ছক্কায় ৫০ রানে।
অন্যদিকে তৌহিদ হৃদয় ছিলেন আরও আক্রমণাত্মক, প্রথম ১০ বলে ১৬ রান করা এই ডানহাতি ফিফটিতে পৌঁছেছেন ২২ বলে। ইনিংসের শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকানোর মাধ্যমে ছুঁয়েছেন ফিফটি, দল পেয়েছে ৩ উইকেটে ১৯৩ রানের সংগ্রহ। শেষ ৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৭৬ রান।
১৪ ডিসেম্বর প্লে-অফ পর্বের প্রথম ম্যাচে এলিমেনিটর ম্যাচে মুখোমুখি হবে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে থাকা ঢাকা ও বরিশাল। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম কোয়ালিফায়ারের মুখোমুখি হবে পয়েন্ট টেবিলের প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ও জেমকন খুলনা।