

ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্টের যে কয়টি পদ্ধতি আছে তার মধ্যে ইয়ো ইয়ো টেস্ট অন্যতম। ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড কিংবা শ্রীলঙ্কাতে বিষয়টি বেশ পুরোনো হলেও বাংলাদেশে প্রথমবারের মত ইয়ো ইয়ো টেস্টের সাথে পরিচিত হতে যাচ্ছে ক্রিকেটাররা। আসন্ন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি লিগের আগে ফিটনেস যাছাইয়ে ইয়ো ইয়ো টেস্টই রাখা হচ্ছে অনেকটা নিশ্চিত।
তার আগে আজ (২ নভেম্বর) কয়েকজন ক্রিকেটারকে দিয়ে ট্রায়াল করিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবির) হেড অব ফিজিক্যাল পারফরম্যান্স নিকোলাস ট্রেভর লি। তামিম ইকবাল, আল আমিন হোসেন, সৌম্য সরকার, আবু হায়দার রনিরা প্রথমবারের মত নিলেন অভিজ্ঞতা। দিন কয়েকের মধ্যে চূড়ান্ত ইয়ো ইয়ো টেস্টের আগে ট্রায়ালে বেশ ভালোই করেছেন রনি, আল আমিন, সৌম্যরা।
এর আগে বিপ টেস্টের মাধ্যমে ক্রিকেটারদের ফিটনেসের অবস্থা পরখ করে দেখা হত। এবার নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়ার আগে ট্রায়ালে ২০.১ তোলা বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি জানালেন দুটোর পার্থক্য। ক্রিকেটীয় দিক বিবেচনায় তার চোখে ইয়ো ইয়ো টেস্টই কার্যকর মনে হয়েছে।
‘ক্রিকেট৯৭’ এর সাথে আলাপে রনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশে আগে থেকেই ইয়ো ইয়ো টেস্ট চালু আছে। আমাদের দেশে হয়তো এবারই প্রথম হচ্ছে। আমার কাছে মনে হয় বিপ টেস্টের তুলনায় এটা কিছুটা কমফোর্টেবল। কারণ ক্রিকেটীয় দিক বিবেচনায় নিলে এটাই যথাযথ মনে হয়েছে।’
‘দেখা যাচ্ছে এখানে বিপ টেস্টের মত অনবরত রানিং করতে হচ্ছে না। মাঝে মাঝে ১০ সেকেন্ডের একটা বিরতি থাকে। আর মাঠেও একজন বোলার কিন্তু অনবরত রানিং করেনা, দেখা যায় একজন বোলার বল করার সময় কিংবা ফিল্ডিংয়ের সময় বল ধরতে গিয়ে রানিং করে। একজন ব্যাটসম্যান কেবল রান নেওয়ার সময়টাতে রানিং করতে হয়। সে দিক থেকে হিসেব করলে ইয়ো ইয়ো টেস্টই যথাযথ মনে হচ্ছে।’
মিরপুর একাডেমি মাঠে আজ (২ নভেম্বর) সকালে রনি, আল আমিন, সৌম্য প্রথম দফায় শুরু করেন ইয়ো ইয়ো টেস্ট। পরে তাদের সাথে যোগ দেন তামিম ইকবাল, তাইজুল ইসলাম, মুমিনুল হকরা। সবচেয়ে বেশি স্কোর তুলেছেন বরাবরই ফিটনেস বিবেচনায় উপরের দিকে থাকা পেসার আল আমিন হোসেন।
ইয়ো ইয়ো টেস্টের মানদন্ড একেক দেশে একেক রকম। ভারতে ১৬.১, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় ১৭.৪, ইংল্যান্ড ও নিউ জিল্যান্ডে ১৯। তবে টাইগার ক্রিকেটারদের জন্য ট্রায়ালে সেটি ১৭-১৮ পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। যা বেশ ভালোভাবেই উতরে গেছেন রনি, সৌম্য, আল আমিনরা। খুব একটা খারাপ করেননি বাকিরাও।
তবে নির্ধারিত বেঞ্চ মার্ক অতিক্রমের আগে ক্লান্ত হওয়ার বিষয়টিও জানান রনি, ‘আজকে শুরুতে আমি, সৌম্য সরকার ও আল আমিন অংশ নিয়েছি। পরে আরও কয়েকজন যোগ দিয়েছে। আমি ২০.১, সৌম্য ২১ ও আল আমিন ২২.১ মার্ক তুলেছে। আজকে অবশ্য কিছু জায়গায় ছাড় ছিল, মূল পরীক্ষায় আরও কঠিন হবে। ১৬ তোলার পরই কিছুটা ক্লান্তি ভর করতে শুরু করে।’
‘আসলে গতকাল আমি জানিয়েছি রানিং করতে চাই। আজ সকালে এসে জানতে পারি আমাদের নতুন ট্রেনার নিকোলাস ট্রেভর লি রানিংয়ের অংশ হিসেবে ইয়ো ইয়ো টেস্টের একটা ট্রায়ালের ব্যবস্থা করেছে। এটা একদমই প্রাথমিক পর্যায়ের, টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের আগে চূড়ান্ত ফিটনেস পরীক্ষাতেও ইয়ো ইয়ো টেস্ট হবে। আজকে পুরোপুরি প্রয়োগ হয়নি,আমাদেরকে ২০ মিটার করে সোজা রানিং করতে হয়েছে।’
এদিকে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের আগে ইয়ো ইয়ো টেস্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের ক্রিকেটারদের। এইচপি স্কোয়াডের স্কিল ক্যাম্পের শুরুর দিনে গত ১ অক্টোবর আকবর আলি, আফিফ হোসেন ধ্রুব, সুমন খানদের হয় ইয়ো ইয়ো টেস্ট। পরীক্ষা শেষে ইতিবাচক ফল দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন এইচপি ট্রেনার তুষার কান্তি হাওয়ালাদার।