সালাউদ্দিন বিশ্রাম দিতে চাইলেও প্রত্যাখ্যান করতেন সাকিব

সাকিব আল হাসান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন
Vinkmag ad

তথ্য গোপনের অভিযোগে দুই বছরের (এক বছর স্থগিত) নিষেধাজ্ঞায় পড়া সাকিব আল হাসান আজ (২৯ অক্টোবর) থেকে মুক্ত। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে আপাতত বাধা নেই টাইগার অলরাউন্ডারের। কিন্তু এক বছরের বিরতি শেষে মাঠে ফিরে কেমন করবেন সাকিব? কিংবা শুরুতেই কি পুরোনো ছন্দে দেখা যাবে তাকে? এমন সব প্রশ্ন সামনে আসা স্বাভাবিকই।

নিষেধাজ্ঞার সময়টায় সাকিব মাঠে ফেরার লক্ষ্যে ব্যাট-প্যাড নিয়ে নেমেছিলেন গতমাসে। আইসিসির নিষেধাজ্ঞা বলে অনেকটা লোক চক্ষুর আড়ালে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপিতে) নিবিড়ভাবে অনুশীলন করেন। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তাকে পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন তার শৈশব কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও নাজমুল আবেদিন ফাহিম।

কোচ সালাউদ্দিন সাকিবকে কতটা বোঝেন সেটা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের তকমা গায়ে লাগার পরও যেকোন সমস্যায় সাকিব ছুটে যেতেন সালাউদ্দিনের কাছেই। সেই শিষ্য নিষেধাজ্ঞা মুক্তির আগের সময়টা তার সংস্পর্শে থেকেই অনুশীলন করেছে, স্বাভাবিকভাবে তারই সবচেয়ে ভালো জানার কথা মাথে ফেরার আগে সাকিবের ফিটনেস, স্কিলের সর্বশেষ অবস্থা।

ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ‘অনুশীলনে ম্যাচের পরিস্থিতি ছিল। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ বলে সে (সাকিব) কখনো ম্যাচ অনুশীলনের অভাব অনুভব করেনি। সে হয়তো ভাবতে পারে তার কিছু ম্যাচ সময় লাগতে পারে মানিয়ে নিতে কিন্তু আমি সেটা মনে করিনা। আমি মনে করি সে ক্রিকেট অনেক ভালো বোঝে এবং সে ক্রিকেটার হিসেবেই ভাবে। আর এটিই তাকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখে।’

বিকেএসপিতে অনুশীলনের সময়টায় সাকিবকে সঙ্গ দিয়েছেন অ্যাথলেটিক কোচ আব্দুল্লাহ হেল কাফি ও বক্সিং কোচ আরফুল করিম। তারা মূলত সাকিবের ফিটনেস সংক্রান্ত বিষয়ে তদারকি করেছেন।

সালাউদ্দিন বলেন, ‘ক্রিকেটের অনেক জিনিসই বক্সিংয়ের সাথে মিল রয়েছে যেমন ফুটওয়ার্ক, হাতের সমন্বয় ও শক্তির ব্যবহার। অনেকগুলো বক্সিং পজিশনও মিল আছে ব্যাটিং, বোলিং, থ্রোয়িংয়ের সাথে।’

‘এটি কোন প্রতিচ্ছবি নয় কিন্তু কীভাবে শক্তি তৈরি করতে হয়, ব্যাটিংয়ের জন্য সেরা পজিশন কীভাবে পাওয়া যায় এসব। যেমন একজন বক্সার চোখের পলকে তার সেরা পজিশন নিয়ে নেয়, সুতরাং এভাবেই সে তার প্রতিপক্ষকে কঠিনভাবে আঘাত করতে পারে। এসব আপনি ক্রিকেটের সাথেও মিলিয়ে নিতে পারেন।’

তবে সাকিবও অনুশীলন চলাকালীন কিছু ক্ষেত্রে সংগ্রাম করেছেন যা কোচ সালাউদ্দিনের চোখে প্রথমবারের মত ধরা পড়ে। তিনি যোগ করেন, ‘সম্ভবত প্রথমবারের মত আমি সাক্ষী হয়েছি যে সে সংগ্রাম করছে যখন এসব প্রোগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু কখনোই হাল ছাড়েনি। কঠিন সব প্রোগ্রামের ক্ষেত্রেই এরকম হয়েছে কিন্তু সে পিছু হটেনি। বিকেএসপির সময়টায় সে খুব উৎসাহী ছিল। আমি মনে করি সে এসব লোড নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল।’

‘এমন হয়েছে যে মাঝে মাঝে আমি তাকে সন্ধার সেশনে বিশ্রাম দিতে চেয়েছি কিন্তু সে প্রত্যাখ্যান করতো। বলতো ‘আমি এখানে এসেছি সব ধরণের যন্ত্রণা সহ্য করতে এবং নিজেকে প্রস্তুত করতে। সুতরাং কেন আমি এসব সেশন বাদ দেব?’ আমার মনে হয় সে নিজেকে প্রস্তুতের তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়েই এসেছিল। সকাল ৯ টায় তার ট্রেনিং সেশন ছিল কিন্তু সে ভোরে এসে পড়তো। একা একা রানিং করতো এবং রুমে ফিরতো। পরে এসে আমাদের সাথে বাকি সেশনে যোগ দিত।’

পুরো প্রক্রিয়া কাছ থেকে দেখভাল করা দেশের অন্যতম স্বনামধন্য এই কোচ বিশ্বাস করেন তার শিষ্য ফিরবেন বেশ শক্তভাবে। মোহাম্মদ সালাউদ্দিন যোগ করেন, ‘আমার ধারণা সে বেশ শক্তভাবে ফিরে আসবে। আমি তার মানসিকতায় কোন বিশাল পরিবর্তন দেখতে পাইনি। আশা করি সে নিজের স্বভাবজাত খেলাটাই চালিয়ে নিবে। তার স্কিলে কোন ঘাটতি দেখিনি, মনে হচ্ছিল আগের জায়গাতেই আছে।’

‘অবশ্য ফিটনেসের দিক থেকে কিছুটা ঘাটতি আছে। এর কারণ দীর্ঘদিন ধরে ফিটনেস নিয়ে কাজ করেন নি এবং পুনরায় শুরুতে কিছুটা সময় নিয়েছিলেন। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক কথা স্কিলের দিক থেকে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম খুব একটা সমস্যা হয়নি। তার এখন মূল নজর দেওয়ার বিষয় পুরোদমে ফিট হওয়া এবং আমি এটা নিশ্চিত তার যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা তাতে খুব বেশি সময় লাগবেনা।’

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

১ম ওয়ানডের জন্য পাকিস্তানের স্কোয়াড ঘোষণা

Read Next

রেনেগেডসে অভিজ্ঞ তাহিরের সঙ্গে বিস্ময় বালক নুর আহমেদ

Total
0
Share