

রবিবারের দুইটি সুপার ওভারের ম্যাচের পর সোমবার যেন ভিন্ন চিত্র দেখা গেল চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রাজস্থান রয়্যালসের ম্যাচে। ব্যর্থতার বৃত্তে ক্রমাগতই ঘুরপাক খাচ্ছে চেন্নাই। সেখানে আরো একটি পরাজয় বরণ করতে হলো তাদের। এবার রাজস্থান রয়্যালসের কাছে ৭ উইকেটের হার।
একপেশে ম্যাচে রয়্যালসের বোলারদের কাছে অসহায় হয়ে পড়ে চেন্নাই। পরবর্তীতে জস বাটলারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কোন জবাব দিতে পারেনি আইপিএলে তিনবারের শিরোপাধারী দলটি।
আবুধাবি স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনি। ডানহাতি-বামহাতি কম্বিনেশনের জন্য এদিনও চেন্নাই শুরু করে ফাফ ডু প্লেসিস এবং স্যাম কারেনের ব্যাটিং দিয়ে। ক্রমাগত গতির ঝড় তুলতে থাকা রয়্যালসের জফরা আর্চারের বোলিং এদিনও ব্যাটসম্যানদের কোনঠাসা করে ফেলে।
৩য় ওভারেই চেন্নাইয়ের প্রধান ব্যাটসম্যানকে ডু প্লেসিসকে স্মিথের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করে সাজঘরে ফেরান আর্চার। কার্তিক তিয়াগিকে টানা দুইটি চার মারলেও পরের বলে চমৎকার ইনসুইংগারে নাস্তানাবুদ হন তিনে নামা শেন ওয়াটসন। এরপর দলের হাল ধরেন আম্বাতি রায়ডু ও স্যাম কারেন।
শ্লথ গতিতে ব্যাট করতে থাকা স্যাম কারেনকে দলীয় ৫৩ রানের মাথায় আউট করেন শ্রেয়াস গোপাল। ৩ রান পরে রায়ডুকে লেগ স্পিনের ঘূর্ণিতে বন্দী করেন রাহুল তেওয়াটিয়া। এরপর অধিনায়ক ধোনি ও রবীন্দ্র জাদেজা দলের রান বাড়াতে সচেষ্ট হন। তবে ঝড়ো ব্যাটিং কেউই করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২৮ রান করে আর্চারের দুর্দান্ত থ্রোতে রানআউটের শিকার হন ধোনি। শেষের দিকে জাদেজা কিছুটা চেষ্টা করলেও দলের স্কোর বড় করতে পারেননি। ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২৫ রান করে চেন্নাই। জাদেজা ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
রয়্যালসের পক্ষে আর্চার, টিয়াগি, গোপাল ও তেওয়াটিয়া ১টি করে উইকেট পান।
১২৬ রানের মামুলি লক্ষ্যে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে প্রথম ব্যাট করতে নামেন বেন স্টোকস এবং রবিন উথাপ্পা। রানের চাকা সচল রাখতে দ্রুত রান করতে থাকেন স্টোকস। ৪টি বাউন্ডারি হাঁকানোর পর চেন্নাইয়ের দীপক চাহারের বলে বোল্ড হন স্টোকস, ২৬ রানে ১ম উইকেট হারায় তারা। পরের ওভারে জশ হ্যাজেলউডকে স্কুপ করতে গিয়ে ধোনির হাতে ধরা পড়েন উথাপ্পা।
এরপর চাহারের বলে লেগে খেলতে গিয়ে ধোনির দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন সাঞ্জু স্যামসন, ২৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রয়্যালস। তবে পরের গল্পটি বাটলারময়।
অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকে সাথে নিয়ে জুটি গড়ে তোলেন বাটলার। ঝড়ো গতিতে ব্যাটিং শুরু করেন বাটলার। দৃষ্টিনন্দন বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি চোখে পড়ে বাটলারের ব্যাটে। শার্দুল ঠাকুরের অফ সাইডের বল চিপ করে লং অফ দিয়ে ছক্কাটা বাটলারের ব্যাটিংয়ের শৈল্পিক দিক ফুটে ওঠে।
অন্যদিকে লক্ষ্য ছোট থাকায় শুধুমাত্র বাটলারকে স্ট্রাইক দেওয়ার ক্ষেত্রে মনযোগী হন স্টিভ স্মিথ। এই দুইজন ৪র্থ উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্নভাবে ৯৮ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে ১৫ বল বাকি থাকতে দলকে জয় এনে দেন। ৪৮ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৭০ রানে অপরাজিত থাকেন বাটলার, অন্যদিকে স্মিথ অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে।
চেন্নাইয়ের পক্ষে চাহার ২টি ও হ্যাজেলউড ১টি উইকেট পান।
অসাধারণ ব্যাটিং পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান জস বাটলার। এই পরাজয়ের ফলে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে অবস্থান চেন্নাই সুপার কিংসের।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
চেন্নাই সুপার কিংসঃ ১২৫/৫ (২০ ওভার), জাদেজা ৩৫*, ধোনি ২৮; গোপাল ১/১৪, তেওয়াটিয়া ১/১৮
রাজস্থান রয়্যালসঃ ১২৮/৩ (১৭.৩ ওভার), বাটলার ৭০*, স্মিথ ২৬*; দীপক চাহার ২/১৮, হ্যাজেলউড ১/১৯
ফলাফলঃ রাজস্থান রয়্যালস ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরাঃ জস বাটলার (রাজস্থান রয়্যালস)।