

ড্রিম ইলেভেন আইপিএলে ১৮ অক্টোবর ছিল ডাবল হেডার। প্রথম ম্যাচে এক দফা সুপার ওভারে নিষ্পত্তি হয়েছে ম্যাচ। দ্বিতীয় ম্যাচে দুই দফা সুপার ওভারের নাটকীয়তায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়েছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।
দুবাই স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মুম্বাইয়ের রোহিত-কুইন্টন ডি ককের উদ্বোধনী জুটি ২৩ রান পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। ৩য় ওভারে মাত্র ৯ রান করে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের আর্শদ্বীপ সিংয়ের বলে বোল্ড হন রোহিত। পরের ওভারে সুরিয়াকুমার যাদবকে আউট করে মুম্বাইকে বিপদে ফেলে দেন পাঞ্জাবের মোহাম্মদ শামি।
ইশান কিশান মাত্র ৭ রান করে সাজঘরে ফিরে দলকে আরো বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেন। সেখান থেকে ৪র্থ উইকেট জুটিতে ক্রুনাল পান্ডিয়ার সাথে ৫৮ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেন ডি কক। ক্রুনাল ৩৪ করে আউট হলেও ডি কক এক প্রান্ত আগলে ধরে রেখে অর্ধশতরান তুলে নেন। হার্দিক পান্ডিয়া ৮ রান করে আউট হবার পরের ওভারে ডি ককও ৫৩ রান করে বিদায় নেন।
শেষদিকে কাইরন পোলার্ড ও নাথান কোল্টারনাইলের ঝড়ো ব্যাটিং ও অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক স্কোর দাঁড় করায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। পোলার্ড মাত্র ১২ বলে ৩৪ এবং কোল্টারনাইল ১২ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন। পাঞ্জাবের পক্ষে আর্শদ্বীপ ও শামি ২টি করে উইকেট নেন।
১৭৭ রানের জবাবে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই ডি ককের বদান্যতায় রক্ষা পান ইনফর্ম ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল। পরের ওভারে আগারওয়ালের ক্যাচ ফেলে মুম্বাইয়ের হতাশা বাড়ান সুরিয়াকুমার। অন্যপ্রান্তে পাঞ্জাবের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল রানের ফোয়ারা ছোটাতে থাকেন। দলীয় ৩৩ রানের মাথায় আগারওয়ালকে বোল্ড করে মুম্বাই শিবিরে হাসি ফোটান জাসপ্রীত বুমরাহ।
এরপর ক্রিস গেইলের সাথে স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করতে থাকেন রাহুল। রাহুল চাহারের বলে গেইল ২৪ রানে আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসে মারমুখী ব্যাটিং শুরু করে নিকোলাস পুরান। তবে তাকেও ২৪ রানে থামান বুমরাহ। পরের ওভারে রাহুল চাহারের লেগস্পিনে বোকা বনে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এরপর ৫ম উইকেটে দিপক হুদার সাথে ৩৮ রানের জুটি গড়েন লোকেশ রাহুল। তুলে নেন এবারের আইপিএলের ৫ম অর্ধশতরান।
চমৎকার খেলতে থাকা রাহুলকে সরাসরি ইয়র্কারে বোল্ড করেন বুমরাহ। শেষদিকে দিপক ও ক্রিস জর্ডান জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেলেও বুমরাহ ও ট্রেন্ট বোল্টের দৃঢ়তায় ম্যাচ টাই হয়। দিপক ২৩ এবং জর্ডান ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
মুম্বাইয়ের পক্ষে বুমরাহ ৩টি ও রাহুল চাহার ২টি উইকেট নেন।
সুপার ওভারে মুম্বাইয়ের বুমরাহর বোলিং দাপটে মাত্র ৫ রানেই পুরান ও রাহুল আউট হলে ইনিংস শেষ হয়ে যায় পাঞ্জাবের।
৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অসাধারণ বোলিং করে মুম্বাইয়ের দুই ওপেনার ডি কক ও রোহিতকে আটকে দেন শামি। শেষ বলে ২য় রান নিতে গিয়ে ডি কক রানআউট হলে ম্যাচ আবারও টাই হয়, আবারও সুপার ওভারে গড়ায় ম্যাচ।
এবার মুম্বাই আগে ব্যাটিংয়ে নেমে পাঞ্জাবের ক্রিস জর্ডানের ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১১ রান সংগ্রহ করে। পোলার্ড চমৎকার ব্যাটিং করলেও মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ফিল্ডিং নৈপুণ্যে শেষ বলে ছক্কা থেকে বঞ্চিত হয় মুম্বাই।
১২ রানের লক্ষ্যে পাঞ্জাব ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই বোল্টকে লং অনের উপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকান গেইল। ২য় বলে ১ রান নিলেও ৩য় বলে এক্সট্রা কাভার অঞ্চল দিয়ে চার মেরে স্কোর টাই করেন আগারওয়াল। শেষ বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে পাঞ্জাবকে জয় এনে দেন আগারওয়াল।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সঃ ১৭৬/৬ (২০ ওভার), ডি কক ৫৩, ক্রুনাল ৩৪, পোলার্ড ৩৪*; শামি ২/৩০, আর্শদ্বীপ ২/৩৫
কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবঃ ১৭৬/৬ (২০ ওভার), রাহুল ৭৭, গেইল ২৪, পুরান ২৪; বুমরাহ ৩/২৪, রাহুল চাহার ২/৩৩
ফলাফলঃ কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব সুপার ওভারে জয়ী।
ম্যাচসেরাঃ লোকেশ রাহুল (কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব)।