

প্রথম দুইদিনেই চালকের আসনে থাকা ইংল্যান্ড তৃতীয় দিন শেষেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের লাগাম টেনে ধরে রেখেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৯৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে ১৭২ রানের লিড পাওয়া ইংলিশরা ২ উইকেটে ২২৬ রানেই দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে।
৩৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় মাত্র ১০ রান তুলতেই ২ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করে ক্যারিবিয়ানরা। ম্যাচে ইতোমধ্যে ৮ উইকেট তুলে নিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। হাতছানি দিচ্ছে টেস্টে ৫০০ উইকেট শিকারি ক্লাব।
৬ উইকেটে ১৩৭ রান নিয়ে দিন শুরু করে ক্যারিবিয়ানরা। অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ও শেন ডাওরিচ ২৭ রানের জুটিকে টেনে নেন সামনের দিকে। দুজনে তৃতীয় দিন সকালে যোগ করেন আরও ৪১ রান। ততক্ষণে ফলো অন এড়িয়ে ফেলে ক্যারিবিয়ানরা। আগেরদিন দুই উইকেট নেওয়া স্টুয়ার্ট ব্রডের তোপে অবশ্য বেশিক্ষণ টিকেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।
৪৬ রান করা হোল্ডারকে ফিরিয়ে শুরু, ১৯ রানের মধ্যে সবকটি উইকেট তুলে নেন ব্রড। ক্যারিয়ারের ১৮ তম বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করেন দ্বিতীয় ইংলিশ বোলার হিসেবে ৫০০ টেস্ট উইকেটের দ্বারপ্রান্তে থাকা এই পেসার। শেষদিকে ৩৭ রান করে শেন ডাওরিচ কেবল ইংলিশদের লিড কমানোর কাজটাই করেছেন।
১৭২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা ইংল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার ররি বার্নস ও ডমিনিক সিবলি। ২০১৬ সালের পর ঘরের মাঠে ইংলিশ ওপেনিং জুটিতে ১০০ বা তার বেশি রান আসে। দুজনের ১১৪ রানের জুটি ভাঙ্গেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। সিবলিকে ৫৬ রানে ফিরিয়ে ৯ম অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন হোল্ডার।
সিবলির উইকটেটির মাধ্যমে ক্যারিবিয়ান দলপতি স্পর্শ করেন আরও দুটি মাইলফলক। চতুর্থ অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই ১০০ উইকেটের মালিক বনে যান হোল্ডার। চতুর্থ টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ১৫০০ রান ও ১০০ উইকেট শিকারি ক্লাবেও প্রবেশ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ কাপ্তান।
অবশ্য এতগুলো মাইলফলক স্পর্শের দিনে বেশ বিপাকেই তার দল। সিবলিকে ফেরালেও অধিনায়ক জো রুটকে নিয়ে আরও ১১২ রান যোগ করে ফেলেন ররি বার্নস। ক্রিজে এসেই দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকেন জো রুট। ৫৬ বলে ৮ চার ১ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ৬৮ রানে। তবে ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন ররি বার্নস, সিরিজে চতুর্থবারের মত ফিরেছেন রস্টন চেজের বলে।
View this post on Instagram
Rory Burns must be disappointed with himself! It could be his third test hundred. #ENGvWI
১১১ বলে ফিফটি ছোঁয়া বার্নস বদলি ফিল্ডার জশুয়া ডি সিলভাকে (শেন ডাওরিচ আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়লে বদলী হিসাবে খেলতে নামেন) ক্যাচ দেওয়ার আগে করেন ১৬৩ বলে ১০ চারে ৯০ রান। বার্নসের বিদায়ের পরই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় ইংলিশ কাপ্তান জো রুট। দুইদিনের বেশি সময় হাতে থাকার পরও ৩৯৮ রানের লিডকেই জয়ের জন্য যথেষ্ট মনে করেন তিনি।
শেষ বিকেলে মাত্র ৬ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগে পাওয়া ক্যারিবিয়ানরা হারিয়ে বসে দুই উইকেট। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ৩৮৯ রান। ৪ রানে শাই হোপ ও ২ রানে অপরাজিত আছেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। স্কোরবোর্ডে ১০ রান যোগ হওয়ার আগেই ওপেনার জন ক্যাম্পবেল (০) ও নাইট ওয়াচম্যান কেমার রোচকে (৪) ফেরান স্টুয়ার্ট ব্রড।
এক দিনে ৬ উইকেট শিকার করেন এই ইংলিশ পেসার। এই নিয়ে ক্যারিয়ারে ১৩ বার এমন কীর্তি গড়েছেন নতুন বলের রাজা। তার চাইতে বেশিবার এমন কীর্তি গড়েছেন কেবল রঙ্গনা হেরাথ (১৯) ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন (১৪)।
পেসারদের মধ্যে তার পরে অবস্থান স্বদেশী জিমি অ্যান্ডারসনের (৯)। ৪৯৯ উইকেট নিয়ে ব্রডের অপেক্ষা সবমিলিয়ে ৭ম ও দ্বিতীয় ইংলিশ বোলার হিসেবে ৫০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক স্পর্শের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকি ৮ উইকেটের অন্তত একটি পেলেই অভিজাত এই ক্লাবে প্রবেশ করবেন ব্রড।
View this post on Instagram
Stuart Broad will go to bed tonight on 499 Test wickets! What a day he had today! #ENGvWI
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ তৃতীয় দিন শেষে
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: প্রথম ইনিংস ১৯৭ ও দ্বিতীয় ইনিংস ১০/২ (৬ ওভার), ব্র্যাথওয়েট ২*, ক্যাম্পবেল ০, রোচ ৪, হোপ ৪*; অ্যান্ডারসন ৩-২-২-০, ব্রড ৩-১-৮-২।
ইংল্যান্ড: প্রথম ইনিংস ৩৬৯ ও ২য় ইনিংস ২২৬/২ (৫৮ ওভারে ইনিংস ঘোষণা), বার্নস ৯০, সিবলি ৫৬, রুট ৬৮*, রোচ ১১-৪-৩৪-০, গ্যাব্রিয়েল ৫-০-১৯-০, হোল্ডার ৯-২-২৪-১, চেজ ১৪-২-৬১-১, কর্নওয়াল ১৯-২-৭৯-০।
শেষ দুই দিনে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ৩৮৯ রান, হাতে ৮ উইকেট।