

নীড়ে ফেরার আনন্দ সবকিছুকেই ছাপিয়ে যায়। পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পর তাসকিন আহমেদের জন্য মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেট সত্যিকার অর্থেই ঘর বাড়ি হয়ে গিয়েছিল। চোটে পড়ে মাঠের বাইরে গেলেও পুনর্বাসনের জন্য মিরপুরেই আসতে হয়েছে, ফলে পদচারণায় খুব দীর্ঘ কোন বিরতি সেভাবে তৈরি হতনা। কিন্তু করোনা প্রভাবে প্রায় ৫ মাস প্রিয় আঙিনায় পা ফেলেননি, বল হাতে নেওয়া কিংবা ট্রেনিং তো বহু দূরের কথা।
অবশেষে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অনুশীলনের অনুমতিতে মিরপুরে দেখা মিলছে চিরচেনা দৃশ্যের। যদিও ঐক্যবদ্ধ অনুশীলন নয় একদমই ব্যক্তিগতভাবে একজন একজন করে মোট ৬ জন ক্রিকেটার মিরপুরে রানিং, জিম ও স্কিল নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। দেশের চারটি ভেন্যুতে সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১২ জনের। আজ (২৩ জুলাই) প্রথমবার সুযোগ হয় পেসার তাসকিনের। মাঠে ফিরতে পেরে তাসকিনের সবসময়ের হাসিমুখটা যেন আরও চওড়া হয়ে গেল।
করোনাকালে নিজের ফিটনেস নিয়ে বেশ কাজ করেছেন ডানহাতি এই পেসার। বাড়ির গ্যারেজ থেকে বাসার পাশে বালুর মাঠে ঘাম ঝরিয়েছেন নিয়ম করে। তবে ক্রিকেটারদের জন্য সবুজ ঘাস মানেই যে এক টুকরো প্রশান্তি। সেই ঘাসে মোড়ানো চিরচেনা মিরপুর স্টেডিয়ামে ফিরতে পেরে বাঁধ ভাঙা আনন্দের জোয়ার এই পেসারের কণ্ঠে।
মিরপুরে রানিং শেষে এক ভিডিও বার্তায় তাসকিন বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো লাগছে কারণ এতদিন পরে মিরপুর স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারা। রানিং করেছি ভালো লাগতেছে কিন্তু তার চেয়েও বেশি ভালো লাগতেছে স্টেডিয়ামে ঢুকতে পেরেছি। ড্রেসিং রুমে এতদিন পর ঢোকা, আসলেই অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে। বাসা থেকে যতটুকু পেরেছি ট্রেনিং করেছি কিন্তু মিরপুর স্টেডিয়ামে আসার সুযোগ হয়নি। আজকে যখন প্রায় ৫ মাস পর মিরপুর স্টেডিয়ামে ঢুকলাম একটা স্বস্তি লাগছে।’
‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে অনেকদিন খেলতে না পারা, ঘরে থাকা মানে একঘেয়েমি চলে আসছিল। আমার কাজই খেলাধুলা কিন্তু আমি খেলতে পারছিনা। অনেকেরই চাকরি শুরু হয়েছে , বিভিন্ন কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু আমার খেলাই বন্ধ তো অবশ্যই খারাপ লাগছে। আল্লাহ যদি চায় যত দ্রুত ফেরা যায় আর দেশের পরিস্থিতিও যেন ভালো হয় সেটাই কামনা করছি।’
করোনাকালে বাসায় থাকা ক্রিকেটারদের অন্তত ফিটনেস ঠিক রাখতে বিসিবির বেশ ভালো ভূমিকা ছিল। ট্রেনারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের ব্যবস্থা, নিজস্ব সূচি তৈরি করে দেওয়া থেকে করোনা অ্যাপসের অধীনে আনা ও সবশেষ ফিটনেস সরঞ্জাম বাসায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়। আর এখন তো অনুমতি সাপেক্ষে ব্যক্তিগত অনুশীলনও করতে পারছে অনেকে।
মাঠে ফেরা তাসকিনও ধন্যবাদ জানাতে ভুলেননি বিসিবিকে, ‘অসংখ্য ধন্যবাদ বিসিবিকে, এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। এর বাইরে ব্যক্তিগতভাবে বাসায় ফিটনেস নিয়ে কাজ করার জন্য যে যেমন চেয়েছে সাইকেল, ওয়েট সরঞ্জাম আলাদা আলাদা বাসায় পাঠানো হয়েছে। তো এটার জন্যও অসংখ্য ধন্যবাদ। বিসিবি তাদের তরফ থেকে যতটুকু পারছে করছে। এখন শুধু আমাদের সাবধানতা মেনে চলা দরকার। আমি নিশিচত সবাই এটা করছে।’