

২০০২ সালের ১৩ জুলাই ইংল্যান্ডের মাটিতে তাদেরকেই হারিয়ে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ জিতে নেয় সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বাধীন ভারত। সিরিজ জয়কে ছাপিয়ে ঐ ম্যাচ শেষে লর্ডসের ব্যালকনিতে জার্সি খুলে গাঙ্গুলির উদযাপনই এখনো ক্রিকেট ভক্তদের মনে দাগ কেটে আছে। একই বছর মুম্বাইতে ভারতের বিপক্ষে জয়ের পর ইংলিশ অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের জার্সি খুলে উদযাপনের জবাবই মূলত দিয়েছিলেন ভারত কাপ্তান।
‘প্রিন্স অব কোলকাতা’ খ্যাত সৌরভ গাঙ্গুলিকে সেদিন এমন উদযাপনের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছিল দলের তরুণ দুই ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ কাইফ ও যুবরাজ সিং। মার্কাস ট্রেসকোথিক ও অধিনায়ক নাসের হুসেইনের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভারতের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩২৬। সে সময় যা অনেকটা অসাধ্য সাধনের চেষ্টা বলা যায়। কিন্তু অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির ফিফটির পর ৬ষ্ঠ উইকেট যুবরাজ-কাইফের ১২১ রান জুটিতে আকাশী – নীল জার্সিধারীরা বিজয় কেতন উড়ায়।
শচীন টেন্ডুলকার, রাহিল দ্রাবিড়ের মত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে ১৪৬ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় ভারত। ৩২৬ রানের লক্ষ্যটা যেন দূরে সরে যাওয়ার উপক্রম। কিন্তু দলের তরুণ দুই ক্রিকেটার যুবরাজ ও মোহাম্মদ কাইফের দারুণ ঐ জুটিতে দুই উইকেট হাতে রেখে জয়ের মাধ্যমে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সৃষ্টি। ৬৩ বলে যুবরাজ খেলেন ৬৯ রানের ইনিংস, ৭৫ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ কাইফ।
ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ জয়ের পর দেশে ফিরে ভক্ত সমর্থকদের উষ্ণ অভ্যার্থনায় সিক্ত হয় ভারতীয় দল। যেদিন নিজেকে বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চনের মত জনপ্রিয় মনে হয়েছিল কাইফের।
সাবেক এই ভারতীয় ব্যাটসম্যান ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ কে বলেন, ‘আমার আরেকটি বিশেষ দৃশ্যের কথা মনে আছে। আমি যখন এলাহাবাদে (তার বাড়ি) ফিরলাম আমাকে একটি খোলা-জিপে নিয়ে মিছিল করা হয়েছিল।’
‘পাঁচ – ছয় কিলোমিটার দূরত্বে আমার বাড়ি পৌঁছাতে প্রায় তিন-চার ঘন্টা সময় লেগেছিল। আমাকে মালা পরিয়ে স্লোগান দিতে দিতে আনন্দ প্রকাশ করে লোকজন। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন অমিতাভ বচ্চনকে দেখেছি নির্বাচনে জয়ের পর আমাদের শহরে এমন খোলা জিপে করে ঘুরতে। আর সেদিন আমার মনে হয়েছিল আমি অমিতাভ বচ্চন।’ যোগ করেন ৩৯ বছর বয়সী সাবেক এই ক্রিকেটার।