

২০০৩ সালে বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া সফরে তখনকার অজি অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহকে নিতে হয়েছে কঠিন এক সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশকে পেস আক্রমণ দিয়ে বিপর্যস্ত করতে তৈরি করা হয় সবুজ উইকেট। কিন্তু জেসন গিলেস্পি ও গ্লেন ম্যাকগ্রার সাথে তৃতীয় পেসার হিসেবে বেছে নিতে হবে ব্রেট লি ও অ্যান্ডি বিকেলের মধ্য থেকে একজনকে। আর সেটি করাটাই একটু কঠিন ছিল অজি কাপ্তানের জন্য।
২০০৩ সালে প্রথম ও এখনো পর্যন্ত একমাত্র সফরে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি মাঠে গড়ায় ডারউইনের মারারা ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। মাত্রই টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া বাংলাদেশকে গুটিয়ে দিতে নিজেদের নিয়মিত পেস বান্ধব উইকেট একদম উপযুক্তই ছিল। তিন পেসারের সাথে এক স্পিনার নিয়ে বোলিং আক্রমণ সাজায় অজিরা।
ম্যাকগ্রার সাথে গিলেস্পি আগে থেকেই একাদশে চূড়ান্ত, একমাত্র স্পিনার হিসেবে স্ট্রুয়ার্ট ম্যাকগিলও নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে ব্রেট লি ও অ্যান্ডি বিকেলের একজনকে বাদ পড়তেই হবে কারণ অজিরা ব্যাটিং নির্ভর একাদশই গড়েছিল টাইগারদের বিপক্ষে।
এই দুই পেসারের মধ্য থেকে ব্রেট লিকে বেছে নেওয়া হয় গতির ঝড়ে বাংলাদেশ শিবিরকে লন্ডভন্ড করে দিতে। অন্যদিকে একাদশ থেকে ছিটকে গেলেও বিকেল ঠিকই অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন ব্রেট লি কে।
অ্যান্ডি বিকেলের এমন ত্যাগ স্বীকারের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে স্টিভ ওয়াহ স্কাই স্পোর্টসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টের আগের দিনের ঘটনা। আমাকে ব্রেট লি ও অ্যান্ডি বিকেল এই দুজন থেকে একজনকে বেছে নিতে হবে। বিকেলে অনুশীলন শেষে সবাই আমার কাছ থেকে পালানোর মত অবস্থা। কারণ ম্যাচের আগেরদিন অধিনায়ক কারও সাথে কথা বলা মানেই দুঃসংবাদ।’
‘আমি বিকেলের দিকে যেতেই সে বুঝে গিয়েছে তাকে বাদ পড়তে হচ্ছে। সে মাথা নিচু করে ফেলল। পরদিন সবুজ উইকেটে টস জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিং করতে পাঠাই। আমরা ভেবেছি লাঞ্চের আগেই অলআউট করে দেওয়া যাবে তাদের। কিন্তু সেটি হয়নি (৬ উইকেটে ৬৩ রান তুলে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ)।’
লাঞ্চের পরে অবশ্য বেশি দূর যেতে পারেনি বাংলাদেশ, অল আউট হয় ৯৭ রানে। ব্রেট লি তুলে নেন ৩ উইকেট। তবে শুরুতে খুব একটা ছন্দে ছিলেন না অজি গতি তারকা। আর সে সময় পানি পানের বিরতিতে বাদ পড়া অ্যান্ডি বিকেলই বাড়তি অনুপ্রেরণা দেন ব্রেট লি কে।
মাইকেল আথারটনের সাথে আলাপে অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ বিষয়টি তুলে ধরেন, ‘ব্রেট লি শুরুতে সেভাবে ভালো করতে পারছিলনা। তখন ড্রিংকস ব্রেকে বিকেল ব্রেট লি’র সাথে কথা বলে। তাকে বোঝায় তার কি করতে হবে, কোন জায়গায় বল করা উচিৎ এসব। দলের স্বার্থেই তাকে (বিকেল) ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। পরবর্তী ১৮ মাস আমরা আর পরিবর্তন আনিনি।’