

করোনার ভাইরাস প্রভাবে আগামী ৬ মাসে বিশ্বে দৈনিক ৬ হাজার শিশু মারা যেতে পারে ধারণা করছে স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো। মূলত নিরাপদ খাবার পানি, জীবাণু দমনে সাবানের অভাবে নিপীড়িত জনপদগুলোতে অবস্থা শোচনীয় হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। শিশুদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা ইউনিসেফ অবশ্য এই প্রতিকূলতা কাটানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ইউনিসেফ নিউজিল্যান্ডের হয়ে কাজ করছেন দেশটির জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
নিরাপদ খাবার পানি ও সাবানের ব্যবস্থা করতে ডোনেশন চেয়েছেন কিউই তারকা ব্যাটসম্যান। নিউজিল্যান্ডের মত উন্নত দেশ ও করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার পরও দেশটির শিশুদের জন্য উদ্বিগ্ন সংস্থাগুলো। যেখানে এর চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের মত ঘন বসতির দেশগুলো। কিউই দলপতি দিন কয়েক আগে তামিম ইকবালের লাইভ শো তে এসে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে খেলতে আসার কারণে এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কেও আছে ভালো ধারণা।
ইউনিসেফের নিরাপদ পানি ও সাবান ক্যাম্পেইনের অংশ হয়ে কিউই তারকা বলেন, ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নিউজিল্যান্ড ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে যা সত্যি দারুণ ব্যাপার। আমি মনে করি ব্যাপারটা এমন যে আমরা সবাই একে অপরের সাথে যুক্ত এবং গর্বিত। যদিও সামনে চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে। কিন্তু সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ড দুর্দান্তভাবে এগিয়েছে।’
নিজ দেশের অবস্থা ভালো হলেও বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। যা ব্যথিত করে স্পোর্টসম্যানশিপের অনন্য উদাহরণ কিউই দলপতিকে। করোনা ছাড়াও বাংলাদেশের অধিক জনসংখ্যা ও গরমের ব্যাপারটিও তুলে ধরেন উইলিয়ামসন।
তিনি বলেন, ‘দুঃখের বিষয়, আপনি বিদেশের দিকে তাকালে দেখবেন অনেক দেশেই এখনো ভাইরাসটি সংক্রমিত হচ্ছে। আর সেসব জায়গায় কিছু মৌলিক চাহিদাও মেটানো যাচ্ছেনা, যেমন সাবান, নিরাপদ পানি।’
‘সম্প্রতি বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সাথে দীর্ঘক্ষণ আমার ভিডিও (জুমে) আলাপ হয়। এটা পরিষ্কার হতে পেরেছি তার দেশের পরিস্থিতি কতটা কঠিন। বাংলাদেশে মত ঘনবসতিপূর্ণ একটি জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা খুব কঠিন যা ভাইরাস থেকে প্রতিরোধ করবে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি কঠোর। টেস্ট ম্যাচ খেলতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রথম সফরে গরম আর আদ্রতার যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন আমি হয়েছি তা কখনো ভোলা সম্ভব নয়। হাইড্রেটেড সময়ে সবার সজাগ থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছি। উদ্বেগজনকভাবে, সবার সেই সুযোগ নেই।’
আইপিএল খেলার সুবাধে আফগানিস্তান ক্রিকেটার রাশিদ খান খান ও মোহাম্মদ নবির সাথে ভালো সম্পর্ক কেন উইলিয়ামসনের। তাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন নিরাপদ পানির ক্ষেত্রে আফগানরা কতটা অসহায়।
‘গত পাঁচ-ছয় বছর আইপিএল খেলার কারণে রাশিদ খান ও মোহাম্মদ নবির সাথে খেলার সৌভাগ্য হয়েছে। তারা আমাকে চলমান সংকটে আফগানিস্তানে নিরাপদ পানির যোগান দেওয়া কতটা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে সে সম্পর্কে জানিয়েছে। বিশ্বে এমন আরও অনেক জায়গা আছে যেখানে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে হচ্ছে।’