

জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি, তবে ঢাকার ক্রিকেটে তিনি নিশ্চিতভাবেই কিংবদন্তী ছিলেন। ১৫ বছর খেলেছেন দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী লিমিটেডের হয়ে। বেশ কয়েকবছর ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভোগা সাবেক তারকা স্পিনার রামচাঁদ গোয়ালা পরলোকগমন করেছেন।
আজ (১৯ জুন) ভোরে ময়মনসিংহের ব্রাহ্মণপল্লীর নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গোয়ালা। জীবনের শেষ সময়গুলো তিনি সেখানেই কাটিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রথম বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। ৫৩ বছর বয়সে ১৯৯৩ সালে ঢাকা লিগ খেলে অবসরে যান রামচাঁদ গোয়ালা।
আজকের সাকিব, রাজ্জাক, রফিকদের পথটা মসৃণ করার পেছনে তার ভূমিকাও কম নয়। তার হাত ধরেই যে বাঁহাতি স্পিন শিল্পের সাথে পরিচিত হয় বাংলাদেশ। বাঁহাতি স্পিনার থেকে একটা সময় অন্যতম কঠিন শিল্প চায়নাম্যানও শুরু করেন।
তিনি যখন জাতীয় দলের হয়ে খেলেন তখনো স্বীকৃত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। টানা ১৫ বছর ঢাকা লিগে খেলা রামচাঁদ গোয়ালা স্পিন বিষে নীল করেছেন ব্যাটসম্যানদের হৃদয়। ৬ মৌসুমে হয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।
শুধুমাত্র ক্রিকেটের প্রতি টান আর ভালোবাসার কারণে বিয়ে পর্যন্ত করেননি ময়মনসিংহের প্রভাবশালী এই ক্রিকেটার। জীবনের অন্তিম সময়টায় রাষ্ট্রীয়ভাবে পাননি কোন সাহায্য সহযোগীতা।
২০১৫ সালে আজীবন সম্মাননা পান ‘বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএসজিএ)’থেকে। আর্থিক সম্মাননা হিসেবে দেওয়া হয় ৫ লাখ টাকা। নিজের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি হিসেবে সেটিকেই উল্লেখ করেছিলেন বছর তিনেক আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। এছাড়া বিসিবি তাকে ১০ লক্ষ টাকা অনুদান দেয় গত বছরে।
ভিক্টোরিয়া ক্লাব দিয়ে ঢাকা লিগ শুরু করা কীর্তিমান এই বাঁহাতি স্পিনার ১৯৭৮ সাল থেকে টানা ১৫ বছর খেলেন আবাহনীতে। তার আগে নিজ শহর ময়মনসিংহের টাউন ক্লাবেও খেলেছেন বেশ কিছুদিন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা লিগে ইতি টেনে ফিরেছেন ঘরের ময়মনসিংহের ক্লাব ক্রিকেটে। খেলেছেন তিন বছরের মত।
রামচাঁদ গোয়ালার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)।