

চট্টগ্রামের খান পরিবারের দুই ভাই নাফিস ইকবাল ও তামিম ইকবাল গায়ে চাপিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি। দুজনেই ওপেনার হলেও জাতীয় দলে এক সাথে ওপেন করা সুযোগ হয়নি। কিশোর বয়সেই তামিমের অভিষেক, বড় ভাই নাফিসও তখন ক্যারিয়ারের মাঝ বেলায়। পড়তি ফর্মে নাফিস যখন দলে ফিরতে মরিয়া ততদিনে ওপেনিংয়ে এক প্রান্তে স্থায়ী হয়ে যান বর্তমান ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম। ২০০৭ বিশ্বকাপের আগে ৩০ সদস্যের দলে ছিলেন দুই ভাই, বিশ্বকাপে সুযোগ না আসলেও নিকট ভবিষ্যতে হয়তো ঠিকই ইনিংস শুরু করতেও পারতেন দুই সহোদর।
কিন্তু সেটি আর হল কই? হয়তো ক্রিকেট বিধাতাই চাননি মধুর এই দৃশ্যের সাক্ষী হোক টাইগার ভক্তরা। তাইতো ছোট ভাই তামিমের খেলা শটেই চোখের হাড় ভেঙে লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে দারুণ সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয় দলে আসা নাফিস ইকবালকে।
সেই যে জাতীয় দলের সাথে দূরত্ব বেড়েছে আর কখনোই মেলেনি সুযোগ। যদিও ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন নিয়মিত। বলা হয়ে থাকে তামিমের শটে চোখের সেই আঘাত না পেলে নাফিসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে আরও একবার প্রত্যাবর্তনের সুযোগ ছিল।
পেশাদার ক্রিকেটে ইতি টেনেছেন, তবে আছেন ক্রিকেটের সাথেই। কখনো কোচ তো কখনো ম্যানেজারে ভূমিকায় ৩৪ বছর বয়সী সাবেক এই ব্যাটসম্যান। গতকাল (৩ জুন) ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘বিডিক্রিকটাইমের’ লাইভ আড্ডায় অতিথি হিসেবে আসা নাফিস জানিয়েছেন ঐ দুর্ঘটনার দায় তামিমের নয় বরং তার নিজেরই।
তিনি বলেন, ‘এটা একটা দুর্ঘটনা ছিল। সেই সময় বিশ্বকাপের জন্য ৩০ সদস্যের একটা ক্যাম্প চলছিল। আমি আর তামিম একটু আগেই চলে গিয়েছিলাম। তালহা জুবায়ের ছিল সেখানে। আমি আগে ব্যাট করে তালহা জুবায়ের সাথে কথা বলছিলাম। তামিম তখন নেটে ব্যাট করে।’
‘তামিম কিন্তু ছোটবেলা থেকেই অনেক জোরে জোরে ব্যাট করে। সেদিন ও ডাউন দ্য উইকেটে এসে একটা বল মেরেছিল, যেটা সরাসরি এসে আমার মুখে লাগে। ওখান থেকে আমাকে সরাসরি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর জানলাম, আমার চোখের উপরে হাড় ভেঙে গেছে ওখানে প্লেট বসাতে হবে। আসলে এটা খারাপ একটা স্মৃতি।’
পুরো ব্যাপারটিকে স্রেফ দূর্ঘটনা উল্লেখ করা সাবেক এই ওপেনার জানালেন তামিমের অনুতপ্ত হওয়ার কিছু ছিলনা, ‘দেখেন যার কাছ থেকেই লাগতো তারই কিন্তু বিষয়টা খারাপ লাগার কথা। আর সেদিন আসলে তামিমের কোন ভুল ছিল না, ভুলটা আমারই ছিল। কারণ, তামিম যে নেটে ব্যাট করছিল ঠিক তার সোজাসুজি আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম’
‘আসলে এখানে অনুতপ্ত হবার কিছু নাই। তারপরও সেই সময় তামিমের সাথে আমার এই বিষয়ে কথা হয়েছিল, ও তখন খুবই ছোট বলা যায়। এটা আসলে হয়ে গেছে। দুর্ঘটনায় ছিল বলতে হবে। এমন না যে ওর কারণেই বিষয়টা হয়েছে। দোষটা আমারই ছিল।’