

ফিটনেস যেকোন অ্যাথলেটের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিন্তু এই ভাবনাটাই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মাথায় এসেছে মাত্র কয়েক বছর আগে আর সেখানে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে ভারতীয় ক্রিকেটাররা। জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালতো স্বীকারই করে নিলেন ভিরাট কোহলিকে দেখে লজ্জাও পেতেন একটা সময়।
‘ইএসপিএনক্রিকইনফো’ এর ভিডিও আড্ডায় ভারতীয় ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের সাথে আলাপে তামিম বলেন, ‘ফিটনেসের গুরুত্বটা বুঝতে আমাদের অনেক সময়ে লেগেছে। গত তিন-চার বছরে হয়তো আমরা বুঝতে পারছি, যথেষ্ট ফিট থাকতে হবে। তখন আমার মানসিকতা ছিল এরকম যে, যতক্ষণ রান করছি, আমাকে কেমন দেখাচ্ছে, সেটা কোনো ব্যাপার নয়। খুব বাজে ধারণা ছিল আমার, এটা মেনে নিতে কোনো লজ্জা নেই।’
২০১৫ সাল থেকে নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন টাইগারদের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। এর পেছনে ফিটনেসকেই দিলেন কৃতিত্ব, ‘আপনি যদি ২০১৫ সালের আমাকে দেখেন, সেখান থেকে আমি ৯ কেজি ওজন কমিয়েছি। ঐ সময়টায় ফিটনেস নিয়ে অনেক খাটতে শুরু করেছি আমি। কৃতিত্ব দিতে হবে আমাদের ট্রেনারকেও। ফিটনেস ভালো থাকলে অনেক সুবিধা আছে। ক্লান্তি ভর করে না, সহজেই বলের কাছে যাওয়া যায়। ইতিবাচক মানসিকতার পাশাপাশি নিজেকে নিয়ে ভালো অনুভূতি হয়।’
নানা দিক দিয়ে ভারতকে অনুসরণ করা বাংলাদেশ কোহলিদের ফিটনেস দেখেও প্রভাবিত হয়েছে উল্লেখ করে বাঁহাতি এই ওপেনার তুলে ধরেন কোহলির ফিটনেস নিজের লজ্জা পাবার কথাও।
‘ভারত যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী দেশ, আমরা অনেক কিছুই অনুসরণ করি। ভারতীয় দল যখন ফিটনেসের দিক থেকে বদলাতে শুরু করল, সেটিই বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে। আমার এটা বলতে কোনো লজ্জাই নেই যে, আমার মনে হয় প্রকাশ করা উচিত, ২-৩ বছর আগে যখন আমি ভিরাট কোহলিকে দেখেছি জিমে কাজ করতে, রানিং ও অন্য সবকিছু, নিজেকে নিয়ে লজ্জা লাগত আমার।’
‘সত্যিই নিজেকে নিয়ে লজ্জা লাগত। মনে হতো, এই ছেলেটি, সম্ভবত আমার বয়সীই, এই ধরনের কাজ করছে, এত ট্রেনিং করছে ও সাফল্য পাচ্ছে, আমি হয়তো তার অর্ধেকও করছি না। তার পর্যায়ে যেতে না পারি, অন্তত তার পথ তো অনুসরণ করার চেষ্টা করতে পারি।’
বিশ্ব ক্রিকেটে ভিরাট কোহলি যদি হয় পরিশ্রমীদের উদাহরণ তবে বাংলাদেশ দলে সেটা নিশ্চিতভাবে মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের নিবেদন আর পরিশ্রমের আরেক দফা প্রশংসা ঝরলো তামিমের কণ্ঠে।
‘আমাদের দলেও দারুণ একজন উদাহরণ আছে, মুশফিকুর রহিম। আমি তার ক্রিকেটীয় দিকে যাব না, ফিটনেসের দিক থেকে সে নিজেকে যেভাবে সামলায়, সেটা বলছি। সে এমন একজন, যাকে অনুসরণ করা যায়। হ্যাঁ, ভিরাট কোহলি অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। মুশফিকও বাংলাদেশ দলে অনেক তরুণ ক্রিকেটারের আদর্শ হতে পারে।’