

২০০৯ সালে মাশরাফি ছিলেন বল হাতে তার সেরা সময়ে। ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজেও ছিলেন চেনা ছন্দে,মিতব্যয়ী বোলিংয়ে তিন ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৬ টি। লঙ্কানদের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সাঙ্গাকারার উইকেট সহ তিন উইকেট শিকার করেন। ফাইনালে জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও মুরালিধরনের হঠাৎ ব্যাটসম্যান রূপে আবির্ভাবে স্বপ্ন ভঙ্গের সাক্ষী টাইগার শিবির। উজ্জ্বল ছিলেন মাশরাফি, উইকেট নিয়েছেন একটি তবে পুরো ১০ ওভারে রান খরচ করেছেন মাত্র ১৮। ফাইনাল হারের দিন রাতেই সাঙ্গাকারার কাছ থেকে পেয়েছিলেন দারুণ কিছুর ইঙ্গিত।
২০০৯ আইপিএল মৌসুমে বাংলাদেশের অন্যতম সফল পেসার মাশরাফিকে নিয়ে নিলামে রীতিমত যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছিল। ৫০ হাজার ডলার ভিত্তিমূল্যের একজন ক্রিকেটার বিক্রি হন ৬ লাখ ডলারে। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব মিডিয়াতেই বেশ নজর কাড়ে এমন ঘটনা। নিলামে কাড়াকাড়ি করা কোলকাতা নাইট রাইডার্সই শেষ পর্যন্ত মাশরাফিকে দলে ভেড়ায়। অথচ তার আইপিএল খেলার পথটাই তৈরি করে লড়াইয়ে হেরে যাওয়া কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।
দুই দলের মালিকই ছিলেন বলিউড তারকা, কোলকাতার অন্যতম স্বত্বাধিকারী জুহি চাওলা ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের প্রীতি জিনতা। ত্রিদেশীয় সিরিজে ভালোর করার ফলে সাবেক লঙ্কান তারকা ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারার নজরে পড়েন মাশরাফি। তার সুপারিশেই কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব টাইগারদের সফল এই অধিনায়ককে দলে ভেড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। সাঙ্গাকারা তখন আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলছিলেন।
জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল ‘বিডিনিউজ২৪ডটকম’ এর সাথে ভিডিও আড্ডায় মাশরাফি তুলে ধরেন তার আইপিএল খেলার পেছনে সাঙ্গাকারার সূত্রপাত। তিনি বলেন,
‘ঐ সময়ে আমি সেরা ফর্মে বলতে পারেন, খুব ভালো অবস্থানে ছিলাম। ফাইনালে (২০০৯ ত্রিদেশীয় সিরিজ) আমি আর নাজমুল (নাজমুল হোসেন) স্ট্রাইক বোলিং করেছিলাম। আমরা ১৫১ (মূলত ১৫২) সম্ভবত করেছিলাম ওদের (শ্রীলঙ্কার) ৫ রানে ৩-৪ উইকেট পড়ে গিয়েছিল (মূলত ৬ রানে ৫ উইকেট) । ঐ ম্যাচেও আমি ১০ ওভারে ১৮ রান দিয়েছিলাম।’
‘ঐ পুরো টুর্নামেন্ট আমি ভালো বোলিং করেছি। তার আগেও আমি ভালো বোলিং করছি, ক্লাব ক্রিকেটেও ভালো বোলিং করছি। আমি খুব ভালো ছন্দে ছিলাম। ফাইনাল শেষে রাতে যখন ডিনারে গেলাম সাঙ্গাকারা আমাকে বলছিল দেখা হবে শীঘ্রই। আমি ভাবতেছিলাম তাদের সাথেতো সম্প্রতি আমাদের কোন সিরিজ নাই ‘সি ইউ সুন’ কেন বলল? ভাবলাম আচ্ছা, বলার দরকার হয়তো বলছে।’
আইপিএল খেলতে যাওয়ার পর বন্ধু যুবরাজ সিংয়ের কাছ থেকে মাশরাফি জানতে পারেন মূল কাহিনী, ‘পরে আইপিএলে যখন আমাকে পিক করে, আমি সাউথ আফ্রিকায় যাই খেলতে। যুবরাজ সিংয়ের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক, এখনো আছে। তো আমাকে বলতেছিল তোর ব্যাপারে সাঙ্গাকারা আমাকে বাংলাদেশ থেকে ফোন করেছিল যে যদি তোমরা চাও মাশরাফিকে নিতে পারো। এটা আসলে পরে বুঝতে পেরেছি আরকি।’
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ঐ মৌসুমে যুবরাজ সিং ও কুমার সাঙ্গাকারা কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলেছেন। দুই পক্ষের কাড়াকাড়ির পর আইপিএলে ৬ লাখ ডলারে আইপিএল দল পাওয়া মাশয়ারফির কপালে অবশ্য পুরো মৌসুমে জোটেনি একটির বেশি ম্যাচ। প্রায় দুই মাস বসে থাকা মাশরাফি সেই ম্যাচে করেছেন বেশ বাজে পারফরম্যান্স, ৪ ওভারে খরচ করেন ৫৮ রান। ওখানেই শেষ হয় খেলোয়াড় মাশরাফির আইপিএল অধ্যায়।