

ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিশ্বকাপ হলে, ২০১৯ বিশ্বকাপে নিঃসন্দেহে শিরোপা উঠতো সাকিব আল হাসানের হাতে। স্বপ্নের মতো বিশ্বকাপ কাটানো সাকিব আল হাসান অবশ্য ফিরেছেন শুন্য হাতে। দলীয় ব্যর্থতায় সেমিফাইনালে ওঠা হয়নি বাংলাদেশের। সাকিবের অমন দাপুটে পারফরম্যান্সের পরেও বিশ্বকাপে ভরাডুবির কারণে আক্ষেপ ঝরল মাশরাফি বিন মর্তুজা ও তামিম ইকবালের কণ্ঠে।
সোমবার (৪ মে) রাতে ফেসবুকে লাইভে আসেন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও সদ্য বিদায়ী ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সেখানে দারুণ আড্ডায় আসে বিশ্বকাপ ও সাকিবের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গ।
বিশ্বকাপে তিন নম্বরে খেলে ২ সেঞ্চুরি ও ৫ ফিফটিতে ৬০৬ রান করেন সাকিব আল হসান, গড়টা ঈর্ষনীয়ই বটে- ৮৬.৫৭! অথচ বিশ্বকাপের আগে সাকিব তিনে খেলতে চাইলেও আপত্তি ছিল অনেকের। তবে সাকিবের ওপর ভরসা রেখে তার সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি।
মাশরাফি বলেন, ‘সাকিব যখন লাস্ট ওয়ার্ল্ড কাপে তিনে খেলে, ওকে তিনে খেলানো নিয়ে কিন্তু তোর (তামিম ইকবাল) অনেক কথা আছে। এটা তুইও জানিস। ফার্স্ট অব অল সাকিব সবচেয়ে বেশি কনফিডেন্ট ছিল তিনে খেলার ব্যাপারে। আমরা প্রায় সবাই, ইভেন তুইও কনফিউজড ছিলি।’
তামিম সেকথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি অ্যাকচুয়ালি মনে করি নাই যে ওর তিনে খেলা উচিৎ ছিল। কারণ আমার কাছে মনে হচ্ছিল যদি ধরেন আমি আর ও একসাথে আউট হয়ে যাই তাহলে টিমের ওপর অনেক বড় প্রেশার পড়বে। বাট আপনি একজন ছিলেন, আর সাকিব অবভিয়াসলি অনেক কনফিডেন্ট ছিল। ও তিনে ব্যাট করতে চেয়েছিল। আর আপনি ওকে সাপোর্ট করেছেন, আমার মনে আছে।’
সবাই এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ছিল বলে জানান মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘কোচ বিপক্ষে ছিল, সবাই বিপক্ষে ছিল। সাকিব সবচেয়ে বেশি কনফিডেন্ট ছিল যে ও হ্যান্ডেল করতে পারবে ও সেটা সে খেলবে। আমার যেটা পয়েন্ট অব ভিউ ছিল, সাকিব যদি ঐখানে তিনে নামে। এরপর ব্যাটিংয়ে যদি ১ থেকে ২ ম্যাচ রান না করে তাহলে সাকিবের চেয়ে কনসার্ন বেশি আর কেউ হবে না। সাকিব জানে, কীভাবে এসব চাপ সামাল দিতে হয়।’
দলীয় ব্যর্থতায় নিজেদের দায় আছে স্বীকার করে মাশরাফি ও তামিমের কণ্ঠে আক্ষেপ ঝরেছে।
মাশরাফি বলেন, ‘সেই জায়গা থেকেই সাকিব যখন চেয়েছিল যে ও তিনে ব্যাট করবে আমি ওকে ফুল ব্যাকাপ করতে চেয়েছি। কারণ, আমি জানি ও বেশি ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারবে। আল্টিমেটলি ওর ইমপ্যাক্টটা আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। হয়তো আমিও ভাল খেলিনি, ওর ইমপ্যাক্টটা কাজে লাগাতে পারিনি।’
তামিমের ভাষ্য, ‘যেটা বললাম ভাই, আমি আর আপনি যদি ২৫ শতাংশ, ২৫ শতাংশ করে ভাল খেলতাম তাহলে আমরা সেমিফাইনাল খেলতাম। এটা আমার বিশ্বাস। আপনি যে নতুন বলে উইকেটটা নিতেন যেটা আমরা পাইনি বিশ্বকাপে। যেটা আপনি সবসময় করে আসতেন, ওটা একটা প্রবলেমে পড়ে গেছি আমরা। আর আমি যে সাকিবের সঙ্গে বড় একটা পার্টনারশিপ করবো, এটাও আমি করতে পারিনি।’
মাশরাফি সহমত জানিয়ে বলেন, ‘একশ ভাগ সত্যি কথা।’