

উপমহাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে ‘জিতলে তালি, হারলে গালি’ এমন একটা বিষয়ের চর্চা হয় বছরের পর বছর ধরে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে দেখা যায় বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের একটা অংশ ক্রিকেটারদের খারাপ সময়ে গঠনমূলক সমালোচনার বাইরে গিয়ে রাগ ঝাড়েন গালি দিয়ে, ব্যক্তিগত আক্রমণে। ক্ষোভটা মাঝে মাঝে গ্যালারি থেকে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারকে উদ্দেশ্য করে এমনভাবে প্রকাশ করেন যা নিয়ন্ত্রণ করা যে কারও জন্যই কষ্টকর। তবুও ক্রিকেটাররা দিনের পর দিন সেটা হজম করে যান, কারণ ভালো কিছু করলে তাদের কাছে থেকেই সর্বোচ্চ ভালোবাসাটা পান।
বাংলাদেশ দলের নয়া ওয়ানডে কাপ্তান তামিম ইকবাল এসব কিছুর সাথে পরিচিত বেশ লম্বা সময় ধরে। একযুগের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে ভক্তদের অসংখ্য ভালোবাসায় যেমন সিক্ত হয়েছেন তেমনি খারাপ সময়ে গ্যালারি কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকবারই বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। একটা সময় আক্রমণটা তার পরিবারেও করা শুরু করে কিছু উগ্র ভক্ত।
প্রতিনিয়ত এমন সব ঘটনার সম্মুখীন হয়েও নিজেকে কিভাবে সামলে নেন ক্রিকেটাররা? জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর একটি ভিডিও সেশনে বাংলাদেশ দলের ড্যাশিং ব্যাটসম্যান ও বর্তমান ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম দিয়েছেন সে উত্তর।
তামিম বলেন, ‘এতো পরিমাণ বকাবকি করে মাঝে মাঝে আসলে নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন, খুব। কিন্তু তারপরেও কোন না কোনভাবে হয়ে যায়। খারাপ লাগে কি চোখের সামনে যখন কোন কিছু যেমন ধরেন একটা জুতা দেখাচ্ছে, স্যান্ডেল দেখাচ্ছে এগুলো খুব খারাপ লাগে।’
‘এগুলো আসলে হওয়া উচিৎ না কোনভাবেই। এরপরেও নিয়ন্ত্রণ করি। আমার কথা হল যে আপনাকে নিয়ে যদি দুইটা মানুষ ফেসবুকে খারাপ স্ট্যাটাস দেয় আপনি কিন্তু সারাদিন ঐ দুইটা স্ট্যাটাস দেখতে থাকবেন। সে জায়গায় আমাদেরকে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ অনেক কিছু বলে।’
নিজেদের পেশাটাকেই এসবের সাথে মানিয়ে নেওয়ার কারণ হিসেবে দেখেন তামিম। গালি, বিদ্রুপের বিপরীতে মানুষের ভালোবাসাও তারা অন্যদের চাইতে বেশি পান উল্লেখ করে যোগ করেন,
‘এটা আসলে আমাদের পেশার সাথেই আছে। এটা নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। যতটুক ভালোবাসা পাই ওটাও অনেকে পায়না। এটাও স্বীকার করতে হবে যে আমরা ছোট ছোট কোন কাজ করলে, ভালো ইনিংস খেললে, ভালো ম্যাচ জিতলে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাই তাদের থেকে এটাও কেউ পায়না। সেরকম আমাদের উপর রাগটাও ওভাবে নামায় যেটা আসলে একটু কষ্ট হয়ে যায় হজম করা।’