

নীরবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বছরের পর বছর সার্ভিস দিয়ে গেছেন সাবেক বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ রফিক। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা স্পিনার বিবেচনা করা হলে এখনো উপরের দিকে থাকবেন তিনি। এক যুগের বেশি সময়ের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে বল হাতে আছে নানা অর্জন, কীর্তি। তবে মানুষ হিসেবে শান্ত প্রকৃতির রফিক ব্যাট হাতেও রীতিমত তান্ডব চালিয়েছেন বহুবার।
২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে টেস্টে হাঁকিয়ে বসেন সেঞ্চুরিও। খোলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনেছেন এক যুগ আগে। করোনা পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সংকটময় সময়ে নিজ উদ্যোগে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি নিলামে তুলতে যাচ্ছেন টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকানো ব্যাটটিও।
বল হাতে স্পিন ঘূর্ণিতে ব্যাটসম্যানকে খাবি খাওয়ানো রফিক ২০০৪ সালে বর্তমান ড্যারেন সামি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ক্যারিনিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তুলে নেন সেঞ্চুরি। হাবিবুল বাশারের ১১৩ রানের সাথে রফিকের ব্যাট থেকে আসে ১১১ রানের ইনিংস। বোলার রফিকের ওটাই একমাত্র সেঞ্চুরি।
দেশের ক্রান্তি লগ্নে ক্রিকেটাররা নিজেদের প্রিয় স্মারক তুলে দিচ্ছেন নিলামে। মোহাম্মদ আশরাফুল নিজের দুটি প্রিয় ব্যাট তুলতে যাচ্ছেন নিলামে আর তার প্রস্তাবেই মোহাম্মদ রফিকও এগিয়ে আসছেন টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকানো ব্যাট নিয়ে। যদিও তার কাছে প্রিয় স্মারক টেস্টে দেশের হয়ে প্রথম ১০০ উইকেট নেওয়া ম্যাচের একটি ছবি, তুলে দিতে চেয়েছেন সেটিও।
ব্যাট নিলামে তোলা প্রসঙ্গে সাবেক এই তারকা স্পিনার ‘ক্রিকেট৯৭’ কে বলেন , ‘আশরাফুল আমাকে নক দিয়েছিল শুরুতে যে রফিক ভাই দেশের এই পরিস্থিতিতে আপনি আপনার একটা স্মারক নিলামে তুলতে পারেন। আমিতো পুরো বিষয়গুলো ওভাবে বুঝিনা, তো আজ (১ মে) তার ব্যাট নিলামে ওঠার কথা ছিল পরে সেটা পিছিয়েছে আগামী সপ্তাহে উঠবে । আমি তাকে বললাম তুই দেখ কিভাবে কি করা যায়, আমি আমার টেস্টে ১০০ উইকেট নেওয়া ম্যাচের একটা ছবি আছে সেটা দিব।’
‘আশরাফুল বলল না ভাই ছবি অতটা দাম নাও উঠতে পারে আপনি আপনার টেস্ট সেঞ্চুরি করা ম্যাচের ব্যাটটা দেন। আমি বলছি ঠিক আছে তাহলে সেটাই দিব। আমার এই ব্যাট বিক্রি হয়ে যদি কিছু মানুষের একবেলা খাবারও জোটে আমি বেশ খুশি হব। দেশের যে পরিস্থিতি রোজার মাস চলে, সামনে ঈদ আসছে। মানুষের বেশ দুর্ভোগ চলছে।’
ব্যাট নিলামে তোলার আগেই নিজ উদ্যোগে সংকটময় এই সময়ে নিজ এলাকার মানুষের পাশে আছেন নরম মনের মানুষ মোহাম্মদ রফিক। দেশের হয়ে ১০০ টেস্ট ও ১২৫ ওয়ানডে উইকেটের মালিক রফিক জানান,
‘আসলে দেখেন আমি কিন্তু সব সময়ই গরীব মানুষের কথা চিন্তা করি। আমার পাড়া মহল্লায় অনেক বাইরের লোক আছে যারা কাজের সূত্রে এখানে বসবাস করে। তাদের মধ্যে অনেকেই লজ্জায় এই সময়টায় কারও কাছে চাইতে পারেনা।’
‘আমার পাড়া, মহল্লার লোক এরা আমি তাদের ভালো করে চিনি কে সমস্যায় আছে। আমি নিজ দায়িত্বে রোজার আগে, রোজার মধ্যেও চাল কিনে দিয়েছি, পরিবারের সদস্য হিসেব করে কাউকে ২৫ কেজি, কাউকে ২০ কেজি, যাদের সদস্য কম তাদের ৫ কেজি করে নিজে হাতে দিয়ে এসেছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসপত্র যেমন ডাল, তেল, লবন এসবও নিয়মিতও দিচ্ছি।’