

একুশে পদক পাওয়া জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শোক জানানো হয়।
শোকবার্তায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘ডক্টর জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যু আমাদের দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। দেশ ও দেশের বাইরে তিনি সর্বোচ্চ সম্মানিত ও ভীষণ প্রশংসিত এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন।’
‘বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে তার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য, বেশ কিছু মেগা প্রজেক্টে তার ভূমিকার জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে আমি তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত দুইটার সময় ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয় জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর। ৪ টার দিকে তার স্বজনরা তাকে রাজধানীর এক প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তাকে প্রাণে বাঁচানো যায়নি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
১৯৪৩ সালের ১৫ নভেম্বর সিলেট শহরে জন্মগ্রহণ করেন এই গুনী ব্যক্তিত্ব। ১৯৬৩ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রী নিয়ে সেখানেই শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। যুক্তরাজ্য থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে বুয়েটেই শিক্ষকতা করেন।
১৯৭৬ সালে পদোন্নতির ধারায় অধ্যাপক হন জামিলুর রেজা চৌধুরী। ২০১৮ সালে এসে পান জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদা। বুয়েট থেকে অবসরে যেয়ে ২০০১ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন তিনি। ২০১০ সাল পর্যন্ত সেই দায়িত্ব পালন শেষে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্যের দায়িত্ব নেন। মৃত্যু পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ছিলেন তিনি।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দেখভাল করেন তিনি। তার হাত ধরেই বাংলাদেশে অনলাইন ইন্টারনেটের শুরু। দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে সরকার তাকে একুশে পদক দেয়। ২০১৮ সালের জুনে আরও দুইজন শিক্ষকের সঙ্গে তাকেও জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করা হয়।
জাতির এই সম্মানিত গুনী ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, বুয়েট ও ঢাবির উপাচার্য, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী, নোবেল বিজয়ী ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস সহ অনেকেই শোক জানিয়েছেন। ধানমন্ডি ঈদগাহ মসজিদে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে।