

এক সময় মূল অস্ত্র ছিল কাটার, সাথে দুর্দান্ত ইয়র্কার। এই দুইয়ের মিশেলে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানানোটা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। সময় গড়িয়েছে, পারফরম্যান্সে পড়েছে ভাটা; মুস্তাফিজ হয়েছেন বিবর্ণ। নিজেই বুঝতে পেরেছেন বোলিংয়ে আনতে হবে বৈচিত্র, কাজও শুরু করেছেন কিছুদিন আগে থেকে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া মুস্তাফিজ মনে করেন আরও অনুশীলন করলে পাবেন সুফল।
মুস্তাফিজকে ছাড়া জাতীয় দল ভাবা যেতনা একটা সময়। পারফরম্যান্স বিবেচনায় নির্বাচক, কোচের লাল বলের ভাবনা থেকে অনেকটা হাওয়া হয়ে গেছেন মুস্তাফিজ। লাল বলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও পড়েছেন বাদ। সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও ছন্দহীন সময় কাটানো বাঁহাতি এই পেসার বিপিএলের পর জিম্বাবুয়ে সিরিজে দিয়েছেন ফেরার ইঙ্গিত। জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রয়োগ করেছেন বল ভেতরে ঢোকানোর কৌশল।
বল ভেতরে ঢোকানোর তালিম নেওয়া মুস্তাফিজ নিজেকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার কাছে ভালোই মনে হচ্ছে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে দুটো ওয়ানডে খেলছি, দুটো টি-টোয়েন্টি খেলছি। বিশেষ করে ওয়ানডে দুটোয় সময় পাওয়া গেছে। প্রথম থেকেই চেষ্টা করছি বল ভেতরের ঢোকানোর। পুরোপুরি নাহলেও অল্প দুই একটা বল ভালো হয়েছে।’
সময় দিলে ভাল করবেন বিশ্বাস বাঁহাতি এই পেসারের, ‘একদিনেই তো সব ঠিক হয়ে যায়না। দুই সপ্তাহ এ নিয়ে কাজ করেছি, আশা করি আস্তে আস্তে যত সময় যাবে তত ভালো হবে ইনশাল্লাহ।’
বাংলাদেশ দলের নবনিযুক্ত বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের বিশেষ তত্বাবধানে ছিলেন শুরু থেকেই। টেস্টের একাদশ রাখা হবেনা জানিয়ে দলের সাথে রাখা হয় কেবল গিবসনের সাথে বাড়তি কাজ করার সুযোগ দিতে। বল ভেতরে ঢোকানোর কৌশলটা তার কাছেই শিখছেন মুস্তাফিজ, ‘ওটিস গিবসনের সাথে কাজ করেছি। ওরকম বেশি কিছুনা। শুধু একটা গ্রিপ দেখিয়ে দিয়েছে, হাতের কিছু কাজ। কব্জিটা ঠিক রাখার জন্য, কঠিন কিছুনা।’
বলা হয়ে থাকে দেশের মাটি কিংবা স্লো উইকেটেই কার্যকর মুস্তাফিজ। মিরপুর একাডেমি মাঠে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আজ (১৮ মার্চ) তিনি নিজেই জানালেন কি ধরনের উইকেটের জন্য নিজেকে উপযুক্ত মনে করেন, ‘কিছু কিছু উইকেট আছে যে আপনি দেখলে বুঝবেন ৩৫০ রান হবে। এখন আরেকটায় মনে করেন ২৫০ রান হবে। আমার জন্য ২৫০ রানেরটা ভালো হবে।’
নিজের ব্যর্থতার দায় অবশ্য মুস্তাফিজ উইকেটের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন না। ক্রিকেটে উত্থান পতনের বাস্তবতা যে বেশ ভালোভাবে বুঝে গেছেন ২৪ বছর বয়সী এই পেসার, ‘কিছু কিছু সময় ভালো খারাপ থাকতেই পারে, আমার পছন্দের উইকেট থাকতেই পারে। উত্থান পতন থাকবেই ক্রিকেটে। এটাই মেনে নিতে হবে। যদি মেনে নিতে না পারে তাহলে সে বড় খেলোয়াড় হতে পারবেনা।’
এখনো পুরোনো আত্ববিশ্বাস ফিরে না পাওয়া মুস্তাফিজ মনে করেন তাকে করতে হবে আরও অনুশীলন, ‘আমার মনে হয় কিছু জায়গায় সমস্যা হচ্ছিল। এখনা আবার কিছুটা ভালো হচ্ছে । আসলে আত্ববিশ্বাস পাচ্ছিনা। আরও অনুশীলন করতে হবে। আমার মনে হয় সার্জারির পর হাতটা একটু পরিবর্তন হয়েছে, আহামরি কোন পরিবর্তন নয়। ওটা ঠিক হয়ে যাবে।’