

টানা হারে ক্লান্ত বাংলাদেশের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে আমূলে বদলে দেন দলের চিত্রই। মাশরাফির অধীনে টাইগাররা ওয়ানডে ফরম্যাটে পায় এখনো পর্যন্ত সেরা সাফল্য। তার নেতৃত্বের পরশ যেখানেই লেগেছে সেখানেই সোনা ফলেছে। এত অর্জনের কৃতিত্ব অবশ্য পারফর্ম করা ক্রিকেটাররাও পান। অধিনায়কত্বের বিদায় লগ্নে নিজেও সেটি বারবার তুলে ধরেছেন মাশরাফি। ক্রিকেটাররা পারফরম্যান্স করেছে, দল ভালো করেছে বলেই একজন অধিনায়ক মাশরাফি দেশের ক্রিকেটে নায়ক বনে যান। নতুন অধিনায়ক তামিম বলছেন দল ভালো না করলে অধিনায়ক ভালো হলেও তা সামনে আসবেনা।
মাঠের চাইতে মাঠের বাইরে সতীর্থদের চাঙ্গা রাখতেন, দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াতেন মাশরাফি। মাঠের বাইরে ক্রিকেটারদের মনোবল শক্ত করার অদ্ভুত এক গুণ ছিল ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিকের। এর বাইরে টিম ম্যানেজমেন্ট, বোর্ড কর্তাদের সামলে নিয়ে সুনিপুনভাবে আদায় করে নিতেন দলের স্বার্থে প্রয়োজনীয় যেকোন কিছু। ম্যান ম্যানেজমেন্টের এই দিকটায় মাশরাফি এগিয়ে বাকি সব অধিনায়কের তুলনায় এমন একটা কথা প্রচলিত আছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে।
মাশরাফির স্থলাভিষিক্ত টাইগারদের নয়া কাপ্তান তামিম মনে করেন দল হিসেবে মাশরাফির অধীনে বাংলাদেশ ভালো করেছে বলেই অধিনায়কের গুণগুলো সামনে এসেছে। দল ভালো না করাতে মাশরাফির চাইতেও ম্যান ম্যানেজমেন্টের দিক থেকে ভালো কেউ থাকলেও আসেনি প্রকাশ্যে এমনটাই মত বাঁহাতি এই ওপেনারের, ‘আমার ১০ টা ভালো গুণ আছে। কিন্তু দল ভালো করছেনা আমার এই ১০ টা গুণ কোন দিন সামনে আসবেনা। আমার নেতিবাচক দিকগুলোই সামনে আসবে। মাশরাফি ভাইয়ের ২০ টা ভালো গুণ আছে। এগুলো সবগুলো কেন সামনে আসছে কারণ তার দল ভালো করেছে। সে নিজে ব্যক্তিগতভাবে ভালো করেছে।’
‘যখনই ভালো খেলা শুরু করে, দল ভালো খেলে সে নিজে ভালো খেলবে তখন অটোমেটিক তার ঐ ২০ টা গুণ সামনে আসবে। হয়তোবা ওনার চেয়ে ভালো ম্যান ম্যানেজমেন্টের কেউ ছিল কিন্তু দল ভালো করেনি। সুতরাং এই জিনিসগুলো কখনোই ভালো হয়ে আসেনা। এসব জিনিসগুলো আসলে অনেক পরের বিষয় আমার কোন জিনিস ভালো বা কোন জিনিস খারাপ। যখনই দেখবেন যে আমার অধীনে দল ভালো করা শুরু করছে অথবা আমি নিজে ভালো করা শুরু করেছি তখন আপনারাই আমার ভালো জিনিসগুলো খুঁজে নিবেন।’
মাশরাফির মত সফল একজন অধিনায়কের জায়গা নিয়েছেন তামিম। দায়িত্ব পেয়েই সোজা মাশরাফির মত সাফল্য এনে দিবেন এমনটা ভাবলে অবিচার করা হবে বলে জানান তামিম, ‘আপনি যদি সোজা আমার কাছ থেকে ঐ সাফল্য আশা করেন তাহলে এটা আমার জন্য অবিচারই বলতে হবে। কিন্তু আমি চেষ্টা করবো, আমি বলছিনা যে পারবনা বা এই দল পারবেনা।’
‘এ কারণেই আমি বললাম যে একটু সময় দিয়েন আমাকে। কারণ এটা এমন একটা জিনিস যে এক রাতে সব পরিবর্তন হয়ে যাবেনা। পৃথিবীর সব জায়গাতেই দেখতে পারেন। যত কম সময়ে এটা আমি নিতে পারি আমার জন্য দলের জন্য তত ভালো।’
বোর্ড বলছে তামিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লম্বা সময়ের জন্য। সেক্ষেত্রে অধিনায়ক হিসেবে তামিমের পরবর্তী বিশ্বকাপ ভাবনায় রেখেই সামনে এগোনোর কথা। তবে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান বলছেন এখনই এত দূর ভাবতে চাননা, ‘সত্যি কথা আমি ওরকম কোন কিছু চিন্তা করিনা। আমার কাছে মনে হয় দীর্ঘ মেয়াদে হওয়া ভালো, বোর্ড দিয়েছে। কিন্তু আমি যেটা বললাম আমার সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করে দেখবো, আমি সম্ভব সবকিছু করবো যাতে বাংলাদশ ক্রিকেট সঠিক পথে এগোয়।’
‘যেটা বললাম যদি দেখি আমি ভালো করছি, দল ভালো করছে তাহলে হয়তো ২০২৩ নিয়ে ভাববো। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল কিছু বিষয় নির্দিষ্ট করা, এরপর যদি আমরা পাকিস্তান যাই সেটা আসবে প্রথমে।’