

সিলেটের সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। এই ম্যাচের সকল খুঁটিনাটি আপডেট এই লাইভ রিপোর্টে।
ওয়ানডে ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়ঃ
২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৩ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেটিই ছিল ওয়ানডে ইতিহাসে রানের বিচারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। সেটাকে আজ দুইয়ে ফেলে দিলো মাশরাফি বাহিনী। সিলেটে জিম্বাবুয়েকে বাংলাদেশ হারালো ১৬৯ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশ ৩২১/৬ (৫০), লিটন ১২৬ (রিটায়ার্ড হার্ট), তামিম ২৪, শান্ত ২৯, মুশফিক ১৯, মাহমুদউল্লাহ ৩২, মিঠুন ৫০, সাইফউদ্দিন ২৮*, মিরাজ ৭, মাশরাফি ০*; পোফু ৬৮/২, মুম্বা ৪৫/১, মাধেব্রে ৪৮/১, টিরিপানো ৫৬/১, মুতোম্বোজি ৪৭/১।
জিম্বাবুয়ে ১৫২/১০ (৩৯.১), কামুনুকামে ১, চিবাবা ১০, চাকাভা ১১, টেইলর ৮, মাধেব্রে ৩৫, সিকান্দার ১৮, মুতাম্বামি ১৭, মুতোম্বোজি ২৪, টিরিপানো ২, মুম্বা ১৩, পোফু ৯*; মুস্তাফিজ ২২/১, সাইফউদ্দিন ২২/৩, মাশরাফি ৩৫/২, তাইজুল ২৭/১, মিরাজ ৩৩/২।
ফলাফলঃ বাংলাদেশ ১৬৯ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরাঃ লিটন দাস (বাংলাদেশ)।
সাইফউদ্দিনের ৩য় শিকার মুম্বাঃ
প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ দারুণভাবে স্মরণীয় করে রাখতে সম্ভাব্য সবকিছুই করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ১২ বলে ১ টি করে চার ও ছক্কায় ১৩ রান করা মুম্বাকে সাইফউদ্দিন ফেরান বোল্ড করে।
রান আউটে কাটা পড়লেন মুতাম্বামিঃ
যখনই মনে হচ্ছিলো মুতোম্বোজি-উতাম্বামি জুটি জমে উঠেছে তখনই সাজঘরে ফিরলেন মুতাম্বামি। ১৪ বলে ২ ছক্কায় ১৭ রান করে রান আউটে কাটা পড়েছেন তিনি। নতুন উইকেটে আসা ডোনাল্ড টিরিপানো টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১৩ বলে ২ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের ২য় শিকার হয়েছেন মিরাজকেই ক্যাচ দিয়ে।
ফিরলেন মাধেব্রেঃ
অভিষিক্ত ওয়েসলি মাধেব্রের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফিরলেন সিকান্দার রাজা। ১৮ রান করে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। পরের ওভারে দারুণ খেলতে থাকা মাধেব্রে (৪৪ বলে ৩৫) ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজের ১ম শিকার হয়ে।
টেইলরকে ফেরালেন তাইজুলঃ
ব্রেন্ডন টেইলরকে (১৫ বলে ৮) বোল্ড করে সাজঘরে ফেরালেন তাইজুল ইসলাম। প্রতিপক্ষ হিসাবে জিম্বাবুয়েকে বরাবরই পছন্দ তাইজুলের। ৭ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি দিয়ে তাইজুলের উইকেট ৭, যার ৫ টিই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে (২ ম্যাচে)।
অবশেষে কাটলো মাশরাফির উইকেট খরাঃ
২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে উইকেট শুন্য ছিলেন মাশরাফি। বিশ্বকাপের শুরুর দুই ম্যাচেও কোন উইকেট না পাওয়া মাশরাফি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পেয়েছিলেন এক উইকেট। বিশ্বকাপে পরের ৫ ম্যাচে কোন সফলতার মুখ দেখেননি মাশরাফি। মাশরাফির উইকেট খরা অবশেষে কাটলো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক চামু চিবাবাকে (১০) মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মাশরাফি।
তিনাশেকে ফেরালেন সাইফউদ্দিনঃ
ইনিংসের ২য় বলে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে সাজঘরে ফিরতে পারতেন তিনাশে কামুনুকামে। তবে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আউট না দিলে রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ। রিপ্লেতে দেখা যায় স্পষ্ট আউট ছিলেন তিনি। যদিও পরের ওভারেই সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হন তিনি। নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে ব্যাট হাতে শেষদিকে ঝড় তোলা সাইফউদ্দিন নিজের করা প্তহম ওভারেই দলকে এনে দেন সাফল্য। নিজের চতুর্থ ওভারে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে রেজিস চাকাভাকেও (১১) ফেরান সাইফউদ্দিন।
৩০০ পেরিয়ে বাংলাদেশঃ
ইনিংসের শেষ ওভারটি করতে এসে প্রথম বলটি ওয়াইড দেন পোফু। বাংলাদেশের ইনিংসে ৩০০ রান পূর্ণ হয় এই অতিরিক্ত রান থেকেই। পরে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৩ ছক্কা সহ ঐ ওভার থেকে নেন আরো ২১ রান। ৬ উইকেটে ৩২১ রান করে শেষ হয় বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দকৃত ৫০ ওভার। এটি ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
ফিফটি করেই সাজঘরে ফিরলেন মিঠুনঃ
পোফুর বলে চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেন মোহাম্মদ মিঠুন (৪০ বলে)। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫ম ফিফটি পূর্ণ করার পরের বলেই অবশ্য লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে ফেরেন সাজঘরে। পরের ওভারে চার্ল মুম্বার প্রথম শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আউট হবার আগের বলেই অবশ্য হাঁকিয়েছিলেন দারুণ এক ছক্কা।
রিভিউ নিয়ে সফল হলো জিম্বাবুয়েঃ
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে রিভিউ নিয়ে সাজঘরে ফেরালো জিম্বাবুয়ে। ২৮ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ৩২ রান করে পোফুর বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন মাহমুদউল্লাহ। শুরুতে অবশ্য অন ফিল্ড আম্পায়ার আউট দেননি, রিভিউ নিয়ে সফল হয় জিম্বাবুয়ে। ৭ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন লিটনঃ
১৯.১ ওভারে দলীয় ১০০ রান পূর্ণ করা বাংলাদেশ দলীয় ২০০ রানে পৌঁছায় ৩৬.১ ওভারে। ওয়েসলে মাধেব্রের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে মাহমুদউল্লাহ দলীয় ২০০ পূর্ণ করার পরের বলে স্লগ সুইপে মিড উইকেট অঞ্চল দিয়ে ছক্কা হাঁকান সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস। তবে এই ছক্কা হাঁকাতে গিয়েই হ্যামস্ট্রিং চটে পড়েন এই ব্যাটসম্যান, ব্যথার তীব্রতা বেশি হওয়ায় তাকে ছাড়তে হয় মাঠও। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে নামের পাশে লেখান ১০৫ বলে ১৩ চার ২ ছক্কায় ১২৬ রান। এটিই ওয়ানডে ফরম্যাটে তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস।
ফিরলেন মুশফিকঃ
বাংলাদেশের ইনিংসের ৩৪ তম ওভারটি ঘটনাবহুলই বলা চলে। ওভারের ১ম বলে ডোনাল্ড টিরিপানোকে চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন দাস। ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে মুয়াম্বামিকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। ২৬ বলে কোন বাউন্ডারি ছাড়া ১৯ রান করেন মুশফিক।
লিটনের সেঞ্চুরিঃ
১৭ মাস ও ১৫ ইনিংস পর ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন লিটন কুমার দাস। তামিম ইকবালের সাথে ওপেনিং করতে নেমে জুটিতে যোগ করেন ৬০ রান। ২৪ রান করে তামিম ও ২৯ রান করে শান্ত ফিরে গেলেও লিটন তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক। ৪৫ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো লিটন ৩৪ তম ওভারের প্রথম বলে টিরিপানোকে চার মেরে সেঞ্চুরি তুলে নেন ৯৫ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায়।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে লিটনের সবশেষ সেঞ্চুরি ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইতে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে। ঐ সেঞ্চুরিটিই তার একমাত্র ওয়ানডে সেঞ্চুরি হয়ে ছিল এতদিন। ৩৪ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে আজ নিয়ে ২০তম বার ওপেন করতে নেমেছেন লিটন। এশিয়া কাপের ফাইনালের সেঞ্চুরিটিও ছিল ওপেন করতে নেমে।
ফিরলেন শান্তঃ
উইকেটে এসে লিটন দাসের সঙ্গে জমে গিয়েছিলেন। তবে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে সাজফরে ফিরতে হলো নাজমুল হোসেন শান্তকে। ৩৮ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২৯ রান করা শান্ত ফিরেছেন মুতোম্বোজির বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে। যদিও রিপ্লেতে দেখা যায় ইমপ্যাক্ট ছিল আউটসাইড দ্যা লাইন।
লিটনের ফিফটিঃ
৪৫ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৫০ পূর্ন করলেন লিটন দাস। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে এটি লিটনের ৪র্থ ফিফটি। ২০ তম ওভারে যেয়ে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ পার করেছে ১০০ রানের গন্ডি। দ্রুততম সময়ে (৪৮ বলে) লিটন-শান্ত’র জুটি পূর্ণ করেছে ৫০।
ফিরে গেলেন তামিমঃ
আগের ওভারেই চার্ল মুম্বার বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে ফিরতে পারতেন। তবে জিম্বাবুয়ে রিভিউ না নিলে বেঁচে যান তামিম। পরের ওভারে ওয়েসলে মাধেভ্রের বলে অবশ্য রিভিউ নেন তামিম নিজেই (কুমার ধর্মসেনা আউট দিয়েছিলেন)। যদিও রিভিউ নষ্ট হয়েছে বাংলাদেশের। অভিষেক ওয়ানডেতে তামিমকে দিয়েই উইকেট পাবার শুরু মাধেব্রের। ৪৩ বলে ২ চারে ২৪ রান করেছেন তামিম। তিনে ব্যাট করতে নেমেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বাংলাদেশ একাদশঃ
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মুস্তাফিজুর রহমান।
জিম্বাবুয়ে একাদশঃ
চামু চিবাবা (অধিনায়ক), তিনাশে কামুনুকামে, ব্রেন্ডন টেইলর (উইকেটরক্ষক), সিকান্দার রাজা, রেজিস চাকাভা, রিচমন্ড মুতাম্বামি, টিনোটেন্ডা মুতোম্বোজি, ডোনাল্ড টিরিপানো, ওয়েসলি মাধেব্রে, ক্রিস মোফু ও চার্ল মুম্বা।
টসঃ
৮ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ কাপ্তান মাশরাফি বিন মর্তুজা। তামিমের সাথে ওপেন করবেন লিটন দাস। চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরা সাইফউদ্দিন আছেন একাদশে। তিন পেসার, দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ।