

নিউজিল্যান্ডের স্পিন কিংবদন্তি ড্যানিয়েল ভেট্টোরি গতবছর জুলাইয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাথে। দৈনিক ২৫০০ ডলার পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করবেন গুনে গুনে ১০০ দিন, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে রেকর্ড পারিশ্রমিক প্রদান করা ভেট্টোরিকে অবশ্য সেভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছিলনা।
কেবল সিরিজ ধরে ধরে কাজ করেন বলে সামগ্রিকভাবে স্পিনারদের উন্নতিতে কাজ করা কঠিন। সব সিরিজের স্কোয়াডও এক থাকেনা বলে ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে না পারাটাও একটা সমস্যা। দেরিতে হলেও টনক নড়েছে বিসিবির। ভেট্টোরির সাথে চুক্তির ধরণে এনেছেন পরিবর্তন। জাতীয় দলের সিরিজের ফাঁকা সময়ে কাজ করবেন বয়সভিত্তিক ও বিসিবির অধীনস্থ দলগুলো বিশেষ করে ‘এ’ দল, হাই পারফরম্যান্স দলের সাথে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের পঞ্চম দিন ছিল আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি)। তবে চতুর্থদিনেই ম্যাচ শেষ হওয়ায় আজ থেকেই নতুন চুক্তি অনুযায়ী কাজ করতে শুরু করেন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। জাতীয় দলের অনুশীলন না থাকলেও বিশেষ এক প্রোগ্রামে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরে তিন স্পিনারকে নিয়ে কাজ করেন ভেট্টোরি। লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, বাঁহাতি অর্থোডক্স তানভির ইসলাম ও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য বাঁহাতি অর্থোডক্স হাসান মুরাদকে নিয়ে।
শীষ্যদের বোলিংয়ের বেশ কিছু জিনিস দেখিয়ে দেন ভেট্টোরি। কখনো নিজেই বল করে দেখিয়েছেন। তাদেরকে সামনে বসিয়ে বেশ কিছু টিপসও দিয়েছেন লম্বা সময় ধরে। ট্রেনিং সেশন শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে ভেট্টোরি জানান বাংলাদেশের ভালোমানের স্পিনারদের নিয়ে কাজ করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন।
বাংলাদেশি স্পিনারদের দক্ষতা দেখাটা প্রশান্তি দেয় ভেট্টোরিকে, ‘বাংলাদেশ দলে যেসব তরুণ স্পিনার আসছে তাদের সম্পর্কে ধারণা হচ্ছে। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকা কয়েকজনের খেলা টিভিতে দেখেছি। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার না, উঠতি স্পিনারদের সঙ্গেও নেটে আলাপ হচ্ছে। যদিও দুই গ্রুপের জন্য আমার বার্তা একইরকম, তারা বলও করে একই রকম। তারা খুবই অভিজ্ঞ; ওহ দুঃখিত! তারা খুবই দক্ষ। তাদের স্কিল লেভেল দেখাটা প্রশান্তির।’
মিরপুর টেস্টে ৯ উইকেট নেওয়া নাইম হাসানের উদাহরণ টেনে নিজেকে ভাগ্যবান বলছেন নিউজিল্যান্ড স্পিন কিংবদন্তি, ‘আপনি নাইম হাসানকে দেখতে পারেন। ২ বছর আগে সে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ছিল। এই সময়ে সে নিজের কতটা উন্নতি করেছে, কতটা স্কিলফুল সে। আমি খুবই ভাগ্যবান এমন ভালো মানের স্পিনারদের সঙ্গে কাজ করতে পারছি। যত দিন যাবে তারা তত অভিজ্ঞ হবে , তারা বুঝতে পারবে আরো বেশি ভালো করতে তাদের কি করতে হবে। কিভাবে পারফর্ম করতে হবে তা অবশ্য বেশিরভাগই জানে।’
বিপ্লবের সাথে আগেই কাজ করার সুযোগ হয়েছে, তানভির-মুরাদ একদমই নতুন ছাত্র ভেট্টোরির ক্লাসে। তাদের কেমন দেখলেন প্রথম দিনের সেশনে জানতে চাইলে টাইগার স্পিন কোচ বলেন,’তারা বেশ ভালো বল করে। নেটে বল করা আর ম্যাচে বল করাটা ভিন্ন। নেটে তাদের সঙ্গে কাজ করে তাদেরকে মাঠে খেলতে দেখাটা গুরুত্বপূর্ন। এই মুহূর্তে আমার উদ্দেশ্য তাদের স্কিল ও শক্তির জায়গা দেখা।’
তরুণ এই স্পিনারদের ভালো করার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে ভেট্টোরি যোগ করেন, ‘শতাভাগ (ভালো করবে)। তারা তরুণ, স্পিনাররা পরিণত হয় তাদের বয়স যত বাড়ে তত। নাইমের মতো অনেকে অবশ্য আছে যারা এতো অল্প বয়সেই ভালো করে। তাইজুল, মিরাজরাও এখনও তরুণ; ওহ, তাইজুল বেশ বয়স্ক (হাসি)। মিরাজও বেশ তরুণ। তারা সবাইই খুব ট্যালেন্টেড, এবং তারা কেবল ভালোই করতে পারে।’