

আজ (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ যখন ২৯৬ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে তখনো দিনের ওভার বাকি ৫ এর বেশি, অন্যদিকে দিনের হিসাবে এরপরও বাকি দুইদিন। মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরির জন্যই যেন অপেক্ষা, ১৫৪ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে লোভুকে চার মেরে মুশফিকের দ্বিশতকে পৌঁছানোর পর আর ৪ বল খেলে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে মুশফিক জানান তার লক্ষ্য ছিল ট্রিপল সেঞ্চুরি, ইনিংস ঘোষণায় কিছুটা হতাশাও প্রকাশ করেন দেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান।
যেভাবে খেলছিলেন তাতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরির করে ফেলাটা খুব একটা কঠিন কিছু ছিলনা মুশফিকের জন্য। দিনের খেলা শেষ হওয়ার কয়েক ওভার আগেই ইনিংস ঘোষণা করেন টাইগার দলপতি মুমিনুল হক। ২০৩ রানেই সন্তুষ্ট থাকতে হল মুশফিককে। মজা করেতো বলেই ফেললেন, ‘আর ৩০০ করার তো সুযোগ দিলো না। সুযোগ দিলে হয়তো চেষ্টা করতাম আরকি (হাসি)।’
মুশফিক নিজেও আশা করেননি ইনিংস ঘোষণা হতে পারে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তা তো অবশ্যই, ইন শা আল্লাহ হতো (ট্রিপল সেঞ্চুরি)। আমি আসলে আশা করি নাই এরকম ডিক্লেয়ার দিবে। আমার নিজের কাছে মনে হয়েছিলো যে আমাদের যতটুকু সময় ছিলো দুইদিনের বেশি। আর তার থেকে বড় ব্যাপার যে উইকেটে আমরা যত বেশি ব্যাটিং করবো আরও কঠিন হবে।’
চা বিরতিতে যাওয়ার সময় মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ১৪৩ রানে, তখনো জানতেন না কখন ইনিংস ঘোষণা করা হতে পারে। ইনিংস ঘোষণার মাত্র আধা ঘন্টা আগে জানতে পারেন দিনের শেষভাগে কয়েক ওভার খেলতে দেওয়া হবে জিম্বাবুয়েকে। আর তার ডাবল সেঞ্চুরির পর আর বেশিক্ষণ দেরিও করেনি মুমিনুল হক, ৬ উইকেটে ৫৬০ রান তুলে ২৯৫ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে টিম বাংলাদেশ।
হতাশ মুশফিক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের চা বিরতির সময় ওরকম কোনো আলোচনা হয়নি। শেষ আধ ঘন্টার আগে জানতে পেরেছি যে শেষ ৬ থেকে ৮ ওভারের মতো ওদেরকে দিবো। তার আগে তো প্ল্যান ছিলো লিটন যদি থাকে একটা ব্যাটসম্যান থাকলে আমার জন্য একটু সহজ হয়। আমার প্ল্যান ছিলো ও যদি একটা ১০০ করে ফেলে তাহলে আমারও ৩০০ রানের কাছে হবে।’
‘সেটা আজকে তো না, কালকে প্রথম সেশনে হয়ে যেত। কিন্তু আমি মনে করি যে ভবিষ্যতে যদি এরকম সুযোগ আসে চেষ্টা করবো সেটা কাজে লাগানোর। এখন পর্যন্ত যেটা হয়েছে দল ভালো একটা পজিশনে আছে।’
৫৬০ রানই নিজেদের জন্য যথেষ্ট মনে করে মুশফিক জানান ঠিক কি কারণে ইনিংস ঘোষণা ওই মুহূর্তে, ”হতে পারে (আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টি)। আমি আসলে ওরকম ভাবে জিজ্ঞেস করিনি। আমার মনে হয় যে আমাদের খুব ভালো বোলিং আ্যটাক, এর জন্যেই। এই ইনিংসটাই ইনশাআল্লাহ্ আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে আশা করছি।’
ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিলেন মুশফিক, একটি ডাবল অন্তত ট্রিপলে রূপ দিতে পারতেন। আর তা হলেই দেশের হয়ে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান হতেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। তবে মুশফিক বলছেন টপ অর্ডারের সব ব্যাটসম্যানেরই সুযোগ থাকে লম্বা ইনিংস খেলার, ‘দেখেন আমি যখন সবশেষ জিম্বাবুয়ের সঙ্গে করেছিলাম তারপর কেউ একজন প্রশ্ন করেছিল ৩০০ রান সম্ভব কিনা? আমি মনে করি যে অবশ্যই সম্ভব। টপ অর্ডারে যারা ব্যাটিং করে সবার জন্যেই পসিবল। শান্ত যদি কালকের সব সেশন, আজকের টি পর্যন্ত খেলতো ওর কিন্তু ২০০ হয়ে যেত। ও ঘরোয়া ক্রিকেটেও ২০০ মেরেছে।’
‘এইটা যেকোনো টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের জন্য একটা ভালো সুযোগ। সবাই চেষ্টা করে। আল্লাহ্র রহমতে আমার আজকে হয়ে গেছে, কপালে ছিলো। ভবিষ্যতে যদি আরও সুযোগ থাকে অবশ্যই হবে। আর শুধু একটা না, বিশ্ব ক্রিকেটে দেখেন একটা, দুইটা না অনেক ট্রিপল সেঞ্চুরি আছে। তারা যদি করতে পারে আমাদের বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা কেন করতে পারবে না।’