

জিম্বাবুয়ে সফরে মাশরাফি বিন মর্তুজা থাকছেন, নাকি থাকছেন না তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলো। আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) এটা নিয়ে খোলাসা করেছেন বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ওয়ানডেতে মাশরাফিই থাকছেন অধিনায়ক হিসাবে। তবে এই সিরিজ দিয়েই শেষ হবে অধিনায়ক মাশরাফি অধ্যায়।
আজ সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে বৈঠক করে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবি বস। সেখানে অধিনায়ক মাশরাফি বা ক্রিকেটার মাশরাফির ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাওয়া হয়।
নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘কঠিন প্রশ্ন! আসলে আমি আগে থেকেই বলে এসেছি সাকিবের মতো ক্রিকেটারের কোন সাবস্টিউট নেই। মাশরাফির মতো অধিনায়কও এই মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই। এটা আমি সবসময়ই জানি, এবং বলেও আসছি। মাশরাফির ব্যাপারটা এখন আগের থেকে চেঞ্জ হচ্ছে। আগে তো বিপ টেস্ট পাশ করার কোন ব্যাপার ছিল না। এখন আমরা সেটা চালু করেছি। বিপ টেস্ট নাও পাশ করতে পারে মাশরাফি।’
বাংলাদেশ দলে মাশরাফি বিন মর্তুজার অবদান ভুলছে না বিসিবি। তবে অন্য অনেকের মতো বিসিবি প্রধানও মনে করেন সিদ্ধান্ত নেবার সময় এসেছে।
‘একই সাথে আমাদেরকে এটাও মাথায় রাখতে হবে আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেট আজকে যে জায়গায় এসেছিল মাশরাফির অবদান অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। ওর অধিনায়কত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আবার এটাও আমরা জানি ওর সময় এসেছে সিদ্ধান্ত নেয়ার যে ও আর কত দিন খেলবে। বেশ কিছু ইস্যু রয়েছে।’
‘আমার ধারণা মাশরাফি এই সিরিজটায় অবশ্যই থাকছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলবে। ও যদি ফিট না হয় সেটা অন্য কথা। ওর জন্য আমরা অতটা কড়াকড়ি করতে যাচ্ছি না। তবে খুব শিঘ্রয়ই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে সামনে যে বিশ্বকাপটা আছে সেটার আমরা দল ও অধিনায়ক দুই বছর আগেই করে ফেলব। আমার হাতে খুব বেশি সময় নেই। খুব শিঘ্রয়ই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমারতো মনে হয় এক মাসের মধ্যে এই ব্যাপারে ক্লিয়ার কাট সিদ্ধান্ত দিতে পারব। এই সিরিজটা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করছি। তারপরে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত নেব।’
‘এই সিরিজে মাশরাফি অধিনায়ক হিসেবে খেলছে। এখনো ও অধিনায়ক আছে। ১-১.৫ মাসের মধ্যে আমাদের বোর্ড মিটিং। সেখানেই জেনে যাবেন সিদ্ধান্ত, খুব বেশি দেরি নেই।’
বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের অধিনায়কত্ব করা মাশরাফি বিন মর্তুজা অবসর নিয়ে সোজাসাপ্টা কিছু বলেননি, বল ঠেলে দিয়েছিলেন বোর্ডের কোর্টে। যদিও বোর্ডের মতে অবসরের ব্যাপার নির্ভর করে ইনডিভিজুয়াল ক্রিকেটারের ওপর।
নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘অবসরের ব্যাপারটা ইনডিভিজুয়াল প্লেয়ারের ওপর ডিপেন্ড করে। আমরা যতদূর জানি নামী দামী ক্রিকেটাররা যারা আছে। একটা সময়ে প্ল্যান করে বলে দেয় শেষের কথা। আমাদের ইচ্ছা ছিল ও যদি এমন কিছু করে তাহলে আমরা একটা অনুষ্ঠান করে বিদায় দেবো। ও খেলতে চাইলে খেলতে পারে। তবে আমি এখন ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে বেশি কনসার্ন। এখন আমরা যদি নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করে দিই তাহলে পারফরম্যান্স দিয়ে যদি দলে ঢুকতে পারে তাহলে ঢুকবে। এটা তো কারো জন্যই বাঁধা নেই।’
এর আগে মাশরাফির সঙ্গে অবসর প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন বিসিবি প্রধান। তবে মাশরাফি তখনকার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বলে জানান পাপন।
‘বিশ্বকাপের পর ওর সাথে আমার কথা হয়েছিল যে ঘরের মাঠে যদি কোন দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজের ব্যবস্থা করে দিতে পারি তাহলে হয়তো ও রিটায়ার করবে। ওখান থেকে আসার পর দেখলাম ওর মাইন্ডটা ও চেঞ্জ করেছে, ও এটা চাচ্ছে না। এর সাথে দেখলাম আমরা যে ওর রিটায়ারমেন্ট ডে তে যে হুলস্থূল করবো সেটাও সে চায়না। আমি পত্র-পত্রিকায় যা দেখেছি। আমার সঙ্গে কিছু বলেনি। ভালো কথা, তবে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত তো নিতেই হবে। ডেডলাইন নিয়েছি আমরা খুব শিঘ্রয়ই, বড়জোর ১-১.৫ মাস। পরবর্তী বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিতে পারে এমন কাউকে আমাদের বেঁছে নিতে হবে।’
নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করার পর মাশরাফিকে দলে জায়গা পেতে দিতে হবে পরীক্ষা। আর ৫-১০ জন ক্রিকেটার যেসব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যান, মাশরাফিকেও যেতে হবে সেসবের মধ্য দিয়ে।
‘ক্যাপ্টেন আমরা ঘোষণা করে দেবো। আর অ্যাজ এ প্লেয়ার যদি ফিট থাকে তাহলে খেলবে। আমরা তো না করছি না, তবে দলে চান্স পাবে কিনা সে গ্যারান্টি আমরা দিতে পারবো না। ন্যাশনাল টিমে চান্স পেতে যা যা ক্রাইটেরিয়া আছে তা ফুলফিল করে আসতে হবে।’