

লম্বা সময় ধরে টেস্টে বাজে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে টিম বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর বড়সড় পরিবর্তনের আভাস ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের। আর আজ (১৬ ফেব্রুয়ারি) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের জন্য ঘোষিত প্রাথিম স্কোয়াডে মিলেছে তার প্রমাণও। দলে পরিবর্তন এসেছে ৬ টি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে মুস্তাফিজুর রহমানের বাদ পড়ার কারণ হিসেবে নির্বাচকরা জানিয়েছেন লাল বলে তাকে আপাতত বিবেচনাই রাখছেন না। অথচ সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে মুস্তাফিজ ডাক পেলেন ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে! এই অল্প সময়ের ব্যবধানে তাকে দলে নেওয়ার মত এমন কি ঘটেছিল যে বিবেচনায় না থেকেও পেয়ে গেলেন জায়গা?
স্কোয়াড ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচক অবশ্য দিয়েছেন ব্যাখ্যা, ‘আমাদের নির্বাচক প্যানেল থেকে বলা হয়নি (লাল বলে মুস্তাফিজকে বিবেচনায় রাখছিনা)। কোচ এটা চিন্তা করেছিল কিন্তু এখন আমরা চিন্তা করছি বিসিএলে ও যেভাবে ফিরে এসেছে। এখন চিন্তা করছি অবশ্যই তাকে লাল বলে বিবেচনা করা যায়। এটা আজকে সকালেই কোচের সাথে আমার কথা হয়েছে তখনই আমরা অন্তর্ভূক্ত করেছি।’
অন্যদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ব্যাকাপ পেসার হিসেবে টেস্টে বিবর্ণ রুবেল হোসেন সুযোগ পেলেও তাসকিনের জায়গা হয়নি। মূলত ওমরাহ থেকে আসার পর বিসিএলের প্রথম রাউন্ডে কিছুটা চোট পেয়ে মাঠের বাইরে যাওয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন। মূলত ফিটনেস সংশয়ে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে তাসকিন বাদ পড়লেও ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠের একমাত্র টেস্টে। এবার বাদ পড়েছেন রুবেল হোসেন, রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে একমাত্র ইনিংসে বল করার সুযোগ পেয়ে নিয়েছিলেন তিন উইকেট।
তাসকিনের সুযোগ পাওয়ার পেছনে অবশ্য রুবেলের বাদ পড়াকে কারণ হিসেবে দেখছেন না প্রধান নির্বাচক, ‘টেস্ট ক্রিকেটে আমরা ম্যানেজমেন্টের সাথে আলোচনা করে এখন চাচ্ছি যে যারা জোরে বল করতে পারে, যাদের গতি ১৪০ এর কাছাকাছি সে হিসাবে আমরা চিন্তা করে গতিতে বল করতে পারে কনসিসটেন্সি একটা লেভেলে স্পিড রাখে সেটা চিন্তা করেই। যেমন বিসিএলে দুটো ম্যাচে (সে ভালো করেছে)। আমার বিশ্বাস যে অবশ্যই এই ম্যানেজমেন্টের অধীনে আরও ভালো করবে।’
এমনিতেই রুবেল হোসেনের টেস্ট পরিসংখ্যান বেশ বিবর্ণ, পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে তিন উইকেট নিলেও শুরু দিকে ছিলেন না ছন্দে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তার বাদ পড়ার কারণ হিসেবে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন ব্যাকাপ হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে নেওয়া হয়েছিল। নতুন করে তাকে কেবল সাদা বলের জন্য বিবেচনায় নিতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট, ‘এটা পরিবর্তন (রুবেল হোসেনের বাদ পড়া) না। ওকে (রুবেল) ব্যাকাপ বোলার হিসেবে নিয়েছিলাম। তারপর পাকিস্তানে গিয়ে যেহেতু আল আমিনের ইনজুরির জন্য ওকে ম্যাচে নিয়েছে। আমাদের ম্যানেজমেন্টের সাথে যে ডিসকাশন হয়েছে, টিম ম্যানেজমেন্ট ওকে চাচ্ছে পুরোপুরি রেডি হয়ে সাদা বলে ব্যাক করাতে।’
‘যেহেতু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলা পেসারদের সেভাবে আধিপত্য থাকবেনা। কয়টা পেস বোলার নিয়ে খেলবো তার একটা পরিকল্পনা আছে। ম্যানেজমেন্টও দেখতে চাচ্ছে আসলে ওই কারণেই কিছু নতুন প্লেয়ারকে যেমন হাসান মাহমুদকে নেওয়া। রুবেল ম্যানেজমেন্টের একটা ভাবনায় আছে সাদা বলে ওকে বিবেচনা করার বিষয়ে।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথমবারের মত জাতীয় দলে ডাক পান গতি দিয়ে নজর কাড়া হাসান মাহমুদ। ডানহাতি এই পেসার অবশ্য সুযোগ পাননি একাদশে, তবে এবার পেলেন আরও বড় পুরষ্কার। জাতীয় দলের হয়ে কোন ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা না থাকা এই পেসার গতি বিবেচনাতেই সুযোগ পেলেন ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে।
তাকে দলে অন্তর্ভূক্ত করার কারণ জানাতে গিয়ে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘ওকে যখন আমরা একবছর আগে এইচপি স্কোয়াডে নিয়েছিলাম তখনই কিন্তু প্ল্যান ছিল আমরা যত জোরে বল করতে পারে এমন কাউকে নিবো। সেক্ষেত্রে আমাদের জোরে বল করা বোলারের অভাব ছিল যেটা ১৪০ এর কাছাকাছি ধারাবাহিক বল করতে পারে। সে হিসাবে ওর মধ্যে আমরা এই ট্যালেন্টটা দেখেছি। দূর্ভাগ্যবশত মাঝখানে সে কিছুটা লাইনচ্যুত ছিল। আবার কামব্যাক করেছে যার কারণে সিস্টেমের মধ্যে আমরা ওকে নিয়েছি।’