

দেশের ক্রিকেট তথা ক্রীড়াঙ্গনের সেরা সাফল্য এসেছে আকবর আলিদের হাত ধরে। যুব বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরে প্রত্যাশার চাইতে বেশি সম্মানও পেল বিসিবির কাছ থেকে। বিমানবন্দরে অবতরণের পর থেকে বিসিবির প্রেস কনফারেন্স রুমে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আসার আগ পর্যন্ত যে ধরনের অভ্যর্থনা পেয়েছে শরিফুল, রাকিবুল, তামিম ,সাকিবরা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় দিন কয়েক আগে স্বপ্নেও হয়তো ভাবেননি যুব দলের ক্রিকেটাররা। তবে দিনশেষে পা মাটিতেই রাখছেন টাইগার কাপ্তান। নিজেদের পরবর্তী ধাপে নেওয়াতেই মনোযোগ দিচ্ছেন বলেও জানান।
দেশের ক্রিকেটের বড় অর্জন, সেরা অভ্যর্থনাও বলা যায়। সংবাদ সম্মেলনেও ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের উপচে পড়া ভিড়। এত সাংবাদিকের সামনে বসে বিশ্ব জয় করে আসা টাইগার দলপতি প্রশ্নের তোপ সামলেছেন বেশ সাবলীলভাবেই। অনেকটা পচেফস্ট্রুমে ভারতে বিপক্ষে ফাইনালে দলের কঠিন পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বের করে আনার মতই।
বিশ্ব জয় হয়েছে, তবে এখনো বাকি অনেক পথ পাড়ি দেওয়া। শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসে না গিয়ে পরবর্তী ক্যারিয়ারের জন্যই প্রস্তুত হবে আকবররা এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে। বাধ্য ছেলের মত টাইগার দলপতিও বলছেন তাদেরও ভাবনা সেদিকেই, ‘বিশ্বকাপ জেতার পর আমরা সাউথ আফ্রিকায় দুটো দিন সময় পেয়েছি। আমরা উদযাপন করেছি এবং টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে আমাদের ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে , আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে কেবল তোমাদের প্রফেশনাল ক্যারিয়ারটা শুরু হয়েছে।’
‘হেলায় গা ভাসিয়ে দেওয়া যেটা সেটা না করে সবাই যেন পরবর্তী স্টেপের জন্য রেডি হতে পারে। এবং একটা ম্যাসেজই দিয়েছে কীভাবে তোমরা আরও বেটার করতে পারো। এমন না যে এটা আমরা অর্জন করেছি এখান থেকে আমরা আত্মবিশ্বাসে চড়ে বসবো। ম্যানেজমেন্ট এই একটা ম্যাসেজই দিয়েছে স্যারেরাও বলছেন নেক্সটের জন্য রেডি হও। আমার মনে হয় সবাই এটাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিবে।’
দলের বেশ কঠিন সময়েই ফাইনালে ব্যাট হাতে নামেন টাইগার কাপ্তান। শেষদিকে বেশ ঠান্ডা মেজাজে খেলেই ভারতীয় যুবাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনেন জয়। বাংলাদেশ ক্রিকেটে যোগ করেন সোনালি এক অধ্যায়। ইতোমধ্যে তাকে তুলনা করা হচ্ছে ভারতের অন্যতম সেরা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সাথেও। কিন্তু টাইগার যুবাদের নেতা ব্যাপারটিকে বাড়াবাড়ি উল্লেখ করে নিজেদের পা রাখছেন মাটিতেই।
সংবাদ সম্মেলনে আকবর বলেন, ‘মহেন্দ্র সিং ধোনির সাথে তুলনা করা আমার মনে হয় এটা বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছুইনা। একটা ইনিংস দিয়ে আপনি তার সাথে তুলনা করতে পারেন না। আর যেটা বললাম আমরা সবাই সেলিব্রেট করেছি, উপভোগ করেছি কিন্তু সবাই পরের ধাপের জন্যই নিজেদের প্রস্তুত করবে। আমরা হয়তো দুই-তিনদিন সেলিব্রেট করবো কিন্তু এরপর যে যার কাজে ব্যাক করবো।’
আকরাম, নান্নুদের হাত ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থান আর সেটাকে পরের ধাপে নেওয়ার কাজটা করেছেন সাকিব, তামিম, মুশফিকরা। একসময় লজ্জাজনক হার এড়ানোর পরিকল্পনা করা বাংলাদেশ তাদের হাত ধরেই পেতে শুরু করে নিয়মিত জয়, হারায় বড় দলগুলোকেও। যদিও অর্জন করতে পারেনি কোন বড় শিরোপা, আকবরদের দিয়ে প্রথম কোন আইসিসির ইভেন্ট জিতলো বাংলাদেশ।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ হলেও দেশের ক্রিকেটে ভালো একটা প্রভাব রাখবে এই শিরোপা বিশ্বাস আকবরের, ‘সাকিব ভাই, তামিম ভাইরা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে একতা জায়গায় নিয়ে গেছে আমার মনে হয় আমাদের অর্জনটা ক্রিকেটারদের আরও মোটিভেট করবে। তারা যে জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করেছে আমরা কিছুটা হলেও সেখানে অবদান রাখতে পারবো।’