

টুর্নামেন্টের শুরু থেকে রাজশাহী রয়্যালস ছিল সেরা ছন্দে। পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে থেকে রেখেছে সাফল্যের ছাপও। কিন্তু প্রথম কোয়ালিফায়ারে মোহাম্মদ আমিরের তোপে লন্ডভন্ড দলটির ব্যাটিং অর্ডার, ২৭ রানে হেরে ফাইনাল খেলতে জিততে হবে আরও এক ম্যাচে। যেখানে আগামীকাল মুখোমুখি হতে হচ্ছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। খুলনার বিপক্ষে হেরে মানসিকভাবে চট্টগ্রামের তুলনায় পিছিয়ে আছে পদ্মাপাড়ের দলটি, জানিয়েছেন ম্যানেজার হান্নান সরকার। এদিকে দলে অনেক অলরাউন্ডার থাকলেও ঠিকঠাক ব্যবহারটাও নির্ভর করে অধিনায়কের উপর মত হান্নানের।
প্রথম কোয়ালিফায়ারে খুলনা টাইগার্সকে ১৫৮ রানে আঁটকে রেখে, মোহাম্মদ আমিরের ক্যারিয়ার ও বিপিএল ইতিহাসের সেরা বোলিং ফিগারে পুড়ে ছারখার রাজশাহী। ৩৩ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারানো রাজশাহী শোয়েব মালিকের ৮০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের পরও হারতে হয়েছে ২৭ রানে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এমন মুখ থুবড়ে পড়া হারের পর উড়তে থাকা চট্টগ্রামকে সামলানোর আগে মানসিকভাবে পিছিয়ে আছে দল স্বীকার করেছেন ম্যানেজার হান্নান সরকার।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কালকে ম্যাচটা যেভাবে হেরেছি এটা অবশ্যই প্লেয়ারদের মানসিকভাবে পিছিয়ে রেখেছে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় টি-টোয়েন্টি অল্প সময়ের খেলা, তিন ঘন্টার এই খেলায় মোমেন্টামটা ধরতে পারলে হয়। বিস্তারিতর দিকে যদি আমি যাই তবে চট্টগ্রামের চেয়ে মানসিকভাবে আমরা পিছিয়ে আছি, তবে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেই এখানে এসেছি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন উত্থান পতন থাকেই।’
পিছিয়ে থাকলেও ম্যাচে ঠিকই নিজেদের চেনারূপে ফিরবে রাজশাহী বিশ্বাস দলটির ম্যানেজারের, ‘আপনারা জানেন আমরা আজকে বেশকিছু চিত্তবিনোদনমূলক কার্যক্রম করেছি যা আমাদের মানসিকভাবে ফুরফুরে রাখতে পারে। আশাকরি আমরা জিততে পারবো এবং ফাইনাল খেলবো।’
দলে বেশ ভালো মানের অনেকগুলো অলরাউন্ডার থাকা সত্বেও কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে হান্নান সরকার বলেন, ‘গতকালকের ম্যাচটা হারার পরেই এমন প্রশ্ন উঠছে। আমরা ৮ টা ম্যাচ জিতে কোয়ালিফায়ারে এসেছি তখন আমাদের এই কম্বিনেশনটাই ছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমরা যেটা দেখে থাকি ব্যাটসম্যানদের খেলা হয়, এবার বিপিএলে আরেকটা জিনিস কি আমরা দেখছি রানের খেলা হচ্ছে। যেখানে বোলিং অপশনটা প্রতিটি দলই চায় আলাদা করতে, এখন এটা অনেক সময় মধুর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।’
অলরাউন্ডার বিকল্প বেশি থাকলেও সেটার কার্যকর ব্যবহার অধিনায়ককেই করতে হয় বলে মত হান্নানের, ‘কিন্তু এখনো আমার কাছে মনে হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যদি অলরাউন্ডার বেশি থাকে, বোলিং অপশন বেশি থাকে সেটা ক্ষতির চেয়ে লাভই বেশি হয়। নির্ভর করে অধিনায়কের উপর, অধিনায়কের পারদর্শীতার উপর প্রমাণ পাওয়া যায়। সে জায়গাটায় আমার মনে হয় বোলিং অপশন অনেক বেশি রয়েছে, ক্যাপ্টেন সেটা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে মনযোগী হলে ভালো কিছু করা যেতে পারে।’
আগের দুই ম্যাচ খেলা গেইল রান করেছেন মাত্র ৪৬, দ্বিতীয় ম্যাচেতো ছিলেন না নিজের ছন্দেই। অতীত রেকর্ড বলে গেইল গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ব্যাটসম্যান ফলে রাজশাহীর বিপক্ষে জ্বলে ওঠার রয়েছে প্রবল সম্ভাবনা। গেইলের জন্য আলাদা পরিকল্পনা সাজাচ্ছে কিনা আন্দ্রে রাসেলের দল জানতে চাইলে জাতীয় দলের সাবেক এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘নির্দিষ্ট বলতে গেইলের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ সবসময়ই একটা প্ল্যান করে। আসলে আমরা সবাই জানি গেইল যখন একা একটা ইনিংস খেলে ম্যাচটাকে নিজের করে নিতে পারে। সে জায়গায় তার বিপক্ষে প্ল্যানতো থাকবেই।’
পরিকল্পনা থাকলেও সেটা প্রয়োগের উপরই অনেক কিছু নির্ভর করে বলে জানান হান্নান, ‘প্ল্যান আসলে প্রতিটি দলই করে, প্রয়োগ কেমন হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ফোকাস সে জায়গায়টায় থাকবে যেন প্রয়োগটা বোলার এবং ফিল্ডার হিসেবে ঠিকঠাক করতে পারি। প্রয়োগটা যদি ঠিকমত হয় আমার মনে হয় গেইলও আউট হয়। সুতরাং প্রয়োগের একটা ব্যাপার থাকে।’