

বিপিএলের প্রতি আসরের মত এবারও শঙ্কা ছিল বুঝি বিতর্ক হবে সঙ্গী। তবে মাঠের ক্রিকেট শুরু হতেই বিসিবির নিজস্ব তত্বাবধানের বিশেষ আসর নিয়ে কমতে থাকে অভিযোগ। সম্প্রচার, ধারাভাষ্যের পাশাপাশি মাঠের ক্রিকেটেও স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স পেয়েছে বাড়তি নজর। বিশেষ করে ওপেন করতে নেমে নিয়মিত সাফল্য পেয়েছেন আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ নাইম শেখ, মেহেদী হাসান মিরাজ, ইমরুল কায়েসরা। লিটন দাস ফিরেছেন নিজের ছন্দে, তামিম ইকবালের ব্যাটিংয়েও পাওয়া যাচ্ছে নিজেকে ফিরে পাওয়ার ছাপ।
আজ (১২ জানুয়ারি) বিসিবির বোর্ড সভা শেষে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের সাফল্য তুলে ধরতে গিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনতো কাকে দিয়ে ওপেন করাবেন তা নিয়েই পড়ে গেছেন শঙ্কায়। চলতি বিপিএলের মাঠের লড়াইয়ের সাথে মাঠের বাইরের বিতর্কের পরিমাণও কম বলে বেশ খুশি বিসিবি বস, প্রশংসা করেছেন তরুণ পেসারদেরও।
নিজেদের তত্বাবধানের প্রথম বিপিএল নিয়ে বিসিবি খুশি হওয়ার যত উপায় ছিল সবই হয়েছে পূর্ণ উল্লেখ করে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এই বিপিএলটা নিয়ে বোর্ডের দিক থেকে আমরা বেশ খুশি। এই খুশির পেছনে যতগুলো কারণ থাকা দরকার তার সবগুলোই আছে। প্রথম কথা হচ্ছে দলগুলো কিন্তু এখন খেলা শেষ পর্যায়ে বলে আপনারা বুঝতে পারছেন যে কারা কারা সেমিফাইনাল খেলবে। শুরুর দিকে কিন্তু বোঝার উপায় ছিলনা কে এক-দুইয়ে থাকছে, একই রকম ছিল। বিশেষ করে চার পাঁচটা দলতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতই। নির্দিষ্টভাবে কেউ শক্ত দল হয়নি কিন্তু প্রায় সবগুলো দলই কাছাকাছি মানের ভারসাম্যপূর্ণ দল ছিল।’
স্থানীয় ক্রিকেটাররা ব্যাটে-বলে দেখিয়েছেন দাপট, তাদের প্রসঙ্গ টানতে গিয়েই নাজমুল হাসান পাপন ওপেনার নিয়ে পড়েন মধুর বিড়াম্বনায়, ‘সত্যি কথা বলতে এখানে লোকাল প্লেয়াররা ভালো করার বেশ ভালো সুযোগ রয়েছে। হয়তো আমি লেগ স্পিনার সেভাবে কাজে লাগাতে পারিনি, সবগুলো যে হয়েছে তা কিন্তু না। বেশিরভাগই সুযোগ পেয়েছে, যার জন্য আপনি দেখেন আমি যদি একতা স্কোয়াড করতে যাই আপনি ওপেনারই ঠিক করতে পারছিনা। আপনি ওপেন করাবেন কাকে দিয়ে? আমাদের তামিম ছিল খেলেনি লাস্ট সিরিজটা, তখন আমরা চিন্তা করছি কাকে খেলাবো ওপেনার হিসেবে।’
‘এখন আমরা কাকে খেলাবো চিন্তা করছিনা, সে জায়গায় আমরা নাইমকে খেলিয়েছি টি-টোয়েন্টিতে। সো তখন নাইম ওপেন করেছিল এখন তামিম খেলছে, বেশ ভালো। সে পুরো ছন্দে আছে, আত্মবিশ্বাসে আছে। নাইম দুর্দান্ত খেলছে আর এর বাইরে ইমরুল কায়েস কিন্তু ব্রিলিয়ান্ট ইনিংস খেলে যাচ্ছে টানা। শান্ত সেঞ্চুরি করছে ওপেন করছে, আফিফ দুর্দান্ত। আমি খেলাবো কাকে? আর এটা আমাদের প্রয়োজন ছিল, এটাই আমরা চেয়েছি।’
বোলিংয়ে তরুণ পেসার মেহেদী হাসান রানা, হাসান মাহমুদদের জন্যও পাপনের কণ্ঠে ঝরেছে প্রশংসা, ‘আপনি যদি বোলিংয়ে দেখেন মেহেদী হাসান রানা, হাসান মাহমুদ এগুলোইতো চাচ্ছিলাম আমরা। এর আগেতো আমরা এভাবে খেলোয়াড় পাচ্ছিলাম না। এখন আমাদের অনেকগুলো অপশন এসেছে, আমরা দেখতে পারছি প্রতিভা আছে। তার মানে এখানে খেললেই যে আন্তর্জাতিক গিয়ে খুব ভালো খেলবে তা না। আমরা এটাতো দেখতে পাচ্ছি যে তারা সুযোগ পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। এই একটা সুযোগ পেলেতো হবেনা তাদের আরও সুযোগ দিতে হবে, সময়ও দিতে হয়।’
‘সুতরাং আমরা এবারের বিপিএল নিয়ে খুব খুশি। কোন অভিযোগ নেই, ব্রডকাস্ট থেকে শুরু করে সব দিক দিয়ে আমরা এবার বেশ খুশি। এখন আর কয়েকটা মাত্র খেলা বাকি, দুইদিন আর একটা ফাইনাল। আশাকরি এই ম্যাচগুলোও সুন্দরভাবে শেষ হবে।’
চলতি বিপিএলে ভালো করাদের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি দল ও পরবর্তী বিশ্বকাপের স্কোয়াড গঠন শজ হবে বলে মনে করেন পাপন, ‘ভবিষ্যতের জন্য টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় এবং পরবর্তী বিশ্বকাপের (টি-টোয়েন্টি) জন্য স্কোয়াড তৈরির একটা পুল পেয়েছি। অনূর্ধ্ব-১৯ এর কেউ কিন্তু এবার বিপিএলে নেই, প্রতিবার থাকে। ওখানেইও কিন্তু বেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কয়েকজন ক্রিকেটার আছে। সেদিক দিয়ে চিন্তা করলেও ভালো অপশন আমাদের হাতে। এসব মিলিয়ে আমরা বেশ খুশি।’