

গতির সাথে সুইং, বাউন্সের সংমিশ্রণে বেশ কিছুদিন ধরেই পাদপ্রদীপের আলোয় হাসান মাহমুদ। ইমার্জিং এশিয়া কাপ, এসএ গেমসে চিনিয়েছেন নিজের জাত। নিজেকে আলাদা করে নজর কাড়ানোর মোক্ষম সুযোগ হিসেবে পেয়েছেন চলতি বিপিএলকে। ঢাকা প্লাটুনের হয়ে খেলা এই পেসার শুরু থেকেই ছিলেন আলোচনায়, তবে আজ খুলনা টাইগার্সকে একা হাতেই ধসিয়ে দিলেন গতি, বাউন্স আর সুইংয়ে বিষিয়ে তুলে।
৪ ওভারে ৩২ রান খরচায় তুলে নেন চার উইকেটে, উইকেটগুলো ছিল ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা মুশফিকুর রহিম, রাইলি রুশো, রবি ফ্রাইলিঙ্ক ও মেহেদী হাসান মিরাজের। বিশেষ করে রাইলি রুশোকে অফ স্টাম্পের ঠিক একটু বাইরে যে বলটিতে উইকেটরক্ষকের ক্যাচে পরিণত করেছেন সেটি ছিল দুর্দান্ত। গতি, বাউন্স আর লাইন লেংথের দারুণ কম্বিনেশ বলতে যা বোঝায় ঠিক সেটিই ছিল ওই বলটায়, কিছু করার ছিল না রুশোরও।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তরুণ এই পেসার দিয়েছেন রুশোকে করা বলটির ব্যাখ্যা। ক্যারিয়ারে এখনো পর্যন্ত সেরা ডেলিভারি বলতেও কুন্ঠাবোধ করেননি, ‘অবশ্যই সেরা ডেলিভারি। রাইলি রুশোকে পরিকল্পনা ছিল উইকেট টু উইকেট বল করার, ও যেহেতু বাইরের বল ভালো খেলে। তো চেষ্টা করেছিলাম।’
গতির সাথে হাসান মাহমুদের নতুন অস্ত্র ব্যাক হ্যান্ডেড স্লোয়ার। রবি ফ্রাইলিঙ্ককে ফিরিয়েছেনও কৌশলী এই ডেলিভারিতে। গত ইমার্জিং এশিয়া কাপ থেকে স্লোয়ারটি শুরু করলেও বিপিএলে উইকেট কিপার এনামুল হক বিজয়ই অনেক সাহায্য করছেন বলেও জানান হাসান, ‘ওইটা (ব্যাক হ্যান্ডেড স্লোয়ার) ইমার্জিং কাপ থেকে অনুশীলন করা। তো এখানে বিজয় ভাই (এনামুল হক) অনেক সাহায্য করতেছে উইকেটের পিছন থেকে। উনি বলে পরিবর্তন করার জন্য। তো ওনাকে মাঝে মাঝে একটু ফলো করি। এইটা নিয়ে কারো সাথে কাজ করছি না। নিজে নিজেই।’
উইকেটের পেছন থেকে ভালোই কল কাঠি নাড়তে পারেন বিজয়। অন্তত হাসান মাহমুদের পরের কথায় উইকেট রক্ষক এই ব্যাটসম্যানের বিচক্ষণতার পরিচয়ই ফুটে ওঠে, ‘বিজয় ভাই আসলে সব প্লেয়ারদেরই বুঝে যে কোন প্লেয়ারটা আসলে কোন বলে একটু দুর্বল। উনি মাঝেমাঝে ইশারা করে বলে যে এইটা বদলা, এইটা করিস না। আর মাশরাফি ভাই এসে বলে সাহস রাখিস।’
৩৩ বলে ৬৪ রান করা মুশফিক যখন কঠিন লক্ষ্যকে করে দিচ্ছেন সহজ তখনই আঘাত হাসান মাহমুদের। তার দেওয়া ফুলটসে পরাস্ত হয়ে ফিরতে হয় দুর্দান্ত ইনিংস খেলা উইকেট রক্ষক এই ব্যাটসম্যানকে। মুশফিককে বল করাটা কঠিন উল্লেখ করে হাসান যোগ করেন, ‘মুশফিক ভাইকে বল করা আসলে বেশ কষ্টকর। উনি ৩৬০ ডিগ্রি খেলেন। তো ওনার জন্য পরিকল্পনা ছিল ওয়াইড ইয়র্কার মারা হবে, যেজন্য ফিল্ডার অফসাইডে ৩টা বের করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর একটা স্লো ফুলটসে উনি আউট হয়ে গেছেন। আলাদা কিছু চেষ্টা করছিলাম।’