

চলতি বিপিএলকে বলা হচ্ছে বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং, কঠিন উইকেটে নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশি-বিদেশি পেসাররাও দিচ্ছে পাল্টা জবাব। বিদেশি কোটায় পাকিস্তানিদের উপরই বেশি নির্ভর করেছে ঢাকা প্লাটুন, সিলেট পর্ব শুরুর আগে ঢাকায় নিজেদের শেষ ম্যাচে ব্যাট হাতে পাকিস্তানি আসিফ আলি ও বল হাতে আরেক পাকিস্তানি ওয়াহাব রিয়াজের তোপে উড়তে থাকা রাজশাহীকে ৭৪ রানে হারিয়ে প্লে-অফের পথটা আরও মসৃণ করলো ঢাকা প্লাটুন।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের আরও একবার ধীরগতির শুরুতে পাওয়ার প্লেতে ঢাকা তুলতে পারে ৩৬ রান। সাথে উইকেট হারায় এনামুল হক বিজয় (১০) ও লুইস রিসের (৯)। টুর্নামেন্টে ঝড়ো ব্যাটিং প্রদর্শন করা মেহেদী হাসান ইঙ্গিত দেন আরও একটি তান্ডবের। কিন্তু রবি বোপারার বলে তাইজুলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ১১ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২১ রান করে। দ্রুত ফিরে যান আরিফুল হক (৭) ও অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজাও (০), ৮৪ রান তুলতেই ঢাকা হারিয়ে বসে ৫ উইকেট। ১৪.২ ওভারে ১০০ রান পার করা ঢাকা ১৭৪ রানের পুঁজি পায় আসিফ আলির ঝড়ো ফিফটিতে।
একপাশ আগলে রাখা তামিম ইকবালকে নিয়ে ৪৬ বলে যোগ করেন ৯০ রান। ৪৪ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো তামিম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৫২ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৮ রানে, যদিও আফিফ হোসেন ক্যাচ মিস না করলে ফিরতে হত ওই ৫০ রানেই। অন্যদিকে আসিফ আলি সমান ৪ টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ৫৫ রানে, ফিফটিতে পৌঁছান ২৪ বলে। ঢাকা পায় ৫ উইকেটে ১৭৪ রানের সংগ্রহ, দুটি উইকেট নেন ফরহাদ রেজা। ৩ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ঝড়টাও বেশি সামলান তিনি, একটি করে উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল, শোয়েব মালিক ও রবি বোপারা।
View this post on Instagram
জবাবে শুরুটা বেশ দুর্দান্ত করে রাজশাহীর দুই ওপেনার, ৩.১ ওভার স্থায়ী জুটিতে তুলে ফেলেন ৩৯ রান। কিন্তু ওয়াহাব রিয়াজের করা ইনিংসের চতুর্থ ও নিজের প্রথম ওভারে রীতিমত ঝড় বয়ে যায় রাজশাহী শিবিরে। কোন রান না দিয়ে ওই ওভারেই লিটন দাস (১০), অলক কপালি (০) ও শোয়েব মালিককে (০) ফিরিয়ে ধস নামান রাজশাহীর টপ অর্ডারে। ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার এই মিছিল চলেছে নিয়মিত বিরতিতেই, দারুণ শুরু এনে দেওয়া আফিফ ফিরেন ২৩ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৩১ রান করে।
আসিফ আলির দুর্দান্ত এক থ্রোতে ফিরে যান রবি বোপারা (১০), বৃথা যায় ১৯ বলে ১৪ রান করে নাহিদুল ইসলামের একপাশ আগলে রাখার চেষ্টাও। নিজের দ্বিতীয় ওভারে নাহিদুলকেও ফেরান ওয়াহাব রিয়াজ। হাসান মাহমুদের লাফিয়ে ওঠা বলে ঠিকঠাক সংযোগ করাতে না পেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন আন্দ্রে রাসেলও (৭)। ফরহাদ রেজাকে খালি হাতে ফিরতে হয় রান আউটে কাটা পড়ে। ৮০ রানে ৮ উইকেট হারানো রাজশাহীর হয়ে তাইজুল-রাব্বি কেবল চেষ্টা করেন হারের ব্যবধান কমাতে। শাদাব খানের বলে তাইজুল (৮) ফিরলে ভাঙে দুজনের ১৯ রানের জুটি। নিজের চতুর্থ ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বিকে (৭) বোল্ড করে ওয়াহাব রিয়াজ নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেওয়ার পাশাপাশি ১০০ রানেই গুটিয়ে দেন রাজশাহীকে।
৩.৪ ওভারে ১ মেডেনসহ মাত্র ৮ রান খরচায় ৫ উইকেট তুলে নেন চলতি বিপিএলে শেষ ম্যাচ খেলা পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। এটি চলমান বিপিএলের সেরা বোলিং ফিগার। সবমিলে বিপিএলে দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগারও বটে। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ, রিস ও শাদাব খান।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ঢাকা প্লাটুন ১৭৪/৫(২০ ওভার), তামিম ৬৮*, বিজয় ১০, রিস ৯, মেহেদী ২১, আরিফুল ৭, মাশরাফি ০, আসিফ আলি ৫৫*; রাসেল ৪-০-৩৭-১, ইরফান ৪-০-২৯-০, আফিফ ২-০-১২-০, মালিক ৩-০-১৩-১, রাব্বি ২-০-২১-০, বোপারা ২-০-১৭-১, ফরহাদ রেজা ৩-০-৪৪-২।
রাজশাহী রয়্যালস ১০০/১০ (১৬.৪ ওভার), লিটন ১০, আফিফ ৩১, কপালি ০, মালিক ০, বোপারা ১০, নাহিদুল ১৪, রাসেল ৭, ফরহাদ ০, তাইজুল ৮, রাব্বি ৭, ইরফান ১*; মাশরাফি ৩-০-৩০-০, মেহেদী ১-০-৮-০, হাসান মাহমুদ ৪-০-২৪-১, ওয়াহাব রিয়াজ ৩.৪-১-৮-৫, রিস ২-০-১১-১, শাদাব খান ৩-০-৯-১।
ফলঃ ঢাকা প্লাটুন ৭৪ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরাঃ ওয়াহাব রিয়াজ (ঢাকা প্লাটুন)।