

হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে সবার আগে ছিটকে যাওয়া অনেকটা নিশ্চিত এমন ম্যাচেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সিলেট থান্ডার। বরং প্রায় একই অবস্থায় থাকা রংপুর রেঞ্জার্স ক্যামেরুন দেলপোর্তের ঝড়ো ফিফটিতে ভর করে ৭ উইকেটে জিতে বাঁচিয়ে রাখলো নিজেদের আশা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ক্যারিবিয়ান দুই ওপেনারই হয়েছেন ব্যর্থ। আন্দ্রে ফ্লেচার ফিরেছেন খালি হাতে, জনসন চার্লস করতে পারেননি ৯ রানের বেশি। শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে উইকেট রক্ষক মোহাম্মদ মিঠুনের ৬২ রানের ইনিংসেও লড়াই করার পুঁজি পায়নি সিলেট থান্ডার। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৭ রান যোগ করেন অধিনায়ক মোসাদ্দেককে নিয়ে। ২৩ বল খেলে মোসাদ্দেক ফিরেছেন মাত্র ১৫ রান করে।মোসাদ্দেকের বিদায়ের পর অবশ্য আবারও শুরু হয় আসা যাওয়া মিছিল।
৯ বলে ১৬ রান আসে রাদারফোর্ডের ব্যাট থেকে, ১২ রান করেন সোহাগ গাজী, যদিও মুকিদুল ইসলামের বলে থার্ড ম্যান অঞ্চলে আল আমিন হোসেন সহজ ক্যাচ হাতছাড়া না করলে দুই অঙ্ক ছোঁয়া হতনা তারও। মুস্তাফিজুর রহমানের শেষ কয়েক ম্যাচের ফর্ম টেনে আনার দিনে সিলেটকে থামতে হয়েছে ৯ উইকেটে ১৩৩ রানে। ৩৫ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো মিঠুন মুস্তাফিজের বলে আউট হওয়ার আগে খেলেন ৪৭ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় ৬২ রানের ইনিংস।
৪ ওভারে মাত্র ১০ রান খরচায় ৩ উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ, ডট বলই ছিল ১৯ টি! এছাড়া আরাফাত সানি, মুকিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ নবি ও লুইস গ্রেগরি নেন একটি করে উইকেট।
১৩৪ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় ওপেন করতে নেমে আবারও ব্যর্থ শেন ওয়াটসন। আগের ম্যাচে ৫ রান করলেও আজ এবাদত হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৬ বলে ১ রান করে। এরপর অবশ্য দলকে সহজ জয়ই এনে দেন নাইম শেখ ও ক্যামেরুন দেলপোর্ত। দুজনে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬৩ বলে যোগ করেন ৯৯ রান। ২৪ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো দেলপোর্ত নাভিন উল হকের বলে নাইম হাসানকে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেন ২৮ বলে ৬ চার ৫ ছক্কায় ৬৩ রান।
দেলপোর্তের বিদায়ের পর নাভিন উল হকে দ্বিতীয় শিকার হয়ে দ্রুত ফেরেন লুইস গ্রেগরিও (৪। এরপর মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে বাকি পথ অনায়েসেই পাড়ি দেন নাইম শেখ।১৬ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় রংপুর রেঞ্জার্স। ফলে প্লে-অফ খেলার স্বপ্ন টিকে রইলো ভালোভাবেই। অন্যদিকে নিজেদের ৬ষ্ঠ হারে টুর্নামেন্ট থেকে অনেকটা ছিটকেই গেল বলা সিলেট থান্ডার। যদিও কাগজে কলমে অনেক কঠিন পথ ও অন্য দলগুলোর ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থেকে এখনো সুযোগ থাকছে তাদেরও।
রংপুর রেঞ্জার্সের নাইম শেখের ব্যাট থেকে আসে ৫০ বলে ৩৮ রান, শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা ইনিংসে হাঁকিয়েছেন সমান দুটি করে চার, ছক্কা। ১২ বলে ২ চার ১ ছক্কায় নবি অপরাজিত ছিলেন ১৮ রানে। সিলেটের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নাভিন উল হকের, বাকি একটি শিকার এবাদত হোসেনের।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
সিলেট থান্ডার ১৩৩/৯ (২০), ফ্লেচার ০, চার্লস ৯, মিঠুন ৬২, মোসাদ্দেক ১৫, রাদারফোর্ড ১৬, মিলন ১, গাজী ১২, নাইম ৮, মনির ০, নাভিন ০*, এবাদত ০*; সানি ৪-১-২৪-১, মুস্তাফিজ ৪-০-১০-৩, মুগ্ধ ৪-০-৪৩-১, নবি ৪-০-৩১-১, গ্রেগরি ৪-০-২১-১।
রংপুর রেঞ্জার্স ১৩৪/৩ (১৭.২), নাইম ৩৮*, ওয়াটসন ১, দেলপোর্ত ৬৩, গ্রেগরি ৪, নবি ১৮*; নাভিন ৪-০-১৩-২, এবাদত ৩-০-১২-১।
ফলাফলঃ রংপুর রেঞ্জার্স ১৬ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে জয়ী।
ম্যাচসেরাঃ মুস্তাফিজুর রহমান (রংপুর রেঞ্জার্স)।