

প্লে-অফে খেলার দৌড়ে টিকে থাকতে জিততেই হবে এমন ম্যাচে কাছে ২৫ রানে হারতে হয় কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে। চলতি বিপিএলের ২৩ তম ম্যাচে আজ (২৮ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাজশাহীর দেওয়া ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কুমিল্লা করতে পারে ৪ উইকেটে ১৭৫ রান। বৃথা যায় সৌম্য সরকারের অপরাজিত ৮৮ রানের ইনিংস।
১৯১ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স কখনোই পারেনি বল-রানের ব্যবধান কমাতে। ২৯ রানে হারায় দুই উইকেট, ৭৫ রান তুলতে হারায় আরও একটি। ততক্ষণে খেলে ফেলে ১০ ওভার, পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে আসে সাকূল্যে ৪৪! ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি ফরহাদ রেজার শিকার হওয়ার আগে করেন ১২ রান, তিন নম্বরে নামা আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক মালানের আন্দ্রে রাসেলের শিকার হয়ে ফেরেন মাত্র ৩ রান করে।
ওপেনার ভানুকা রাজাপাকশের বদলি হয়ে প্রথমবারের মত মাঠে নামা প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান স্টিয়ান ভ্যান জিলের ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ২১ রান। শেষ ১০ ওভারে ১২৬ রান দরকার এমন সমীকরণ মেলাতে গিয়ে সৌম্য-সাব্বিরের ৫২ রানের জুটি কেবল হারের ব্যবধানই কমাতে পারে। ২৩বলে ১ সমান একটি করে চার-ছক্কায় ২৫ রান করে সাব্বির রহমান ফিরলে ভাঙে জুটি। ততক্ষণে অবশ্য টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ফিফটির দেখা পেয়ে যান সৌম্য সরকার।
৩৬ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ফিফটিতে পৌঁছানো বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ফিফটির পর খেলেন আরও হাত খুলে। নিজের খেলা শেষ ১৪ বলে সৌম্য নেন ৩৮ রান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৪৮ বলে ৮৮ রানে যা তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। অন্যদিকে ডেভিড ওয়াইজের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। কুমিল্লা থামে ৪ উইকেটে ১৭৫ রানে।রাজশাহী রয়্যালসের হয়ে একটি করে উইকেট ভাগাভাগি করেন রাসেল, মোহাম্মদ ইরফান, ফরহাদ রেজা ও শোয়েব মালিক।
এর আগে দাসুন শানাকা দেশে ফিরে যাওয়ায় অধিনায়ক হয়ে প্রথম ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ডেভিড মালান। ব্যাট করতে নেমে শোয়েব মালিকের ফিফটির সাথে আফিফ হোসেন, লিটন, রাসেলদের কার্যকরী ইনিংসে মিরপুরের উইকেটে ১৯০ রানের বড় সংগ্রহ পায় রাজশাহী রয়্যালস। ৬.২ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটিতে ৫৬ রান তুলে আরও একবার দলকে ভালো শুরু এনে দেন লিটন দাস ও আফিফ হোসেন।
লিটন দাস ১৯ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ২৪ রান করে সানজামুলের বলে ডিপ মিড উইকেট অঞ্চলে আবু হায়দার রনির তালুবন্দী হলে ভাঙে জুটি। লিটন ফিরলেও শোয়েব মালিকের সাথে আরও ৩৪ রান যোগ করে চলতি বিপিএলে বল হাতে ঝলক দেখানো সৌম্য সরকারের প্রথম ওভারে আউট হন আফিফ। বোল্ড হওয়ার আগে ৩০ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় খেলেন ৪৩ রানের ইনিংস। আফিফের পর দ্রুত ফেরেন রবি বোপারাও (১০)।
এরপর শোয়েব মালিক-আন্দ্রে রাসেলের ৪২ বলে ৮৪ রানের জুটিতে রাজশাহী পায় ৪ উইকেটে বড় সংগ্রহই। ইনিংসের শেষ বলে মালিক রান আউটে কাটা পড়ার আগে খেলেন ৬১ রানের ইনিংস। ৩৫ বলে ৫ চার দুই ছক্কায় ফিফটিতে পৌঁছানো এই ব্যাটসম্যান ৬১ রান করতে খেলেন ৩৮ বলে ছক্কা হাঁকান আরও একটি। যোগ্য সঙ্গ দেওয়া রাসেলের ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ৪ ছক্কায় ৩৭ রান। কুমিল্লার হয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেন মুজিব উর রহমান , সানজামুল ইসলাম ও সৌম্য সরকার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
রাজশাহী রয়্যালস ১৯০/৪ (২০), লিটন ২৪, আফিফ ৪৩, মালিক ৬১, বোপারা ১০, রাসেল ৩৭*; মুজিব ৪-০-২৫-১, সানজামুল ৪-১-২০-১, সৌম্য ২-০-১৮-১।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ১৭৫/৪ (২০), রবি ১২, ভ্যান জিল ২১, মালান ৩, সৌম্য ৮৮*, সাব্বির ২৫, ওয়াইজ ১৬*; রাসেল ৩-০-৪৪-১, ইরফান ৪-০-২৪-১, রেজা ৪-০-৪৮-১, মালিক ৩-০-১৯-১।
ফলাফলঃ রাজশাহী রয়্যালস ১৫ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরাঃ শোয়েব মালিক (রাজশাহী রয়্যালস)।