

সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। একটি টেলিকম কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়াটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের পোস্টারবয়ের জন্য। এমনকি বোর্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করবে বলেও জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
পারিশ্রমিক বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের অবসানের একদিন না পেরোতেই আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান। ভারত সফরের অনুশীলন ক্যাম্পের প্রথম দিন ছিলেন না উপস্থিত, শুরুতে কেন বা কি কারণে বলতে পারছিলনা টিম ম্যানেজমেন্টের কেউই। পরে কোচ ডোমিঙ্গো জানালেন অসুস্থতার জন্য প্রথম দিন না থাকলেও শনিবার থেকে যোগ দিচ্ছেন সাকিব।
দাবি-দাওয়া নিয়ে বিসিবি-ক্রিকেটারদের বৈঠকের পর নাজমুল হাসান পাপন ও সাকিব আল হাসানকে দেখা গিয়েছিল হাসিমুখেই। কিন্তু শঙ্কা ঠিকই ছিল, ভারত সফর সামনে থাকায় বোর্ড হয়তো দাবি মানার আশ্বাস দিয়ে মাঠে ফেরাচ্ছে ক্রিকেটারদের কিন্তু ক্রিকেটারদের উপর জন্মানো ক্ষোভ কি এত তাড়াতাড়ি কমবে বিসিবির?
২৪ ঘন্টার ব্যবধানেই সাকিবের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা বুঝিয়ে দেয় এত সহজেই পার পাচ্ছেনা ক্রিকেটাররা। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন সাকিব আল হাসান গ্রামীণফোনের সাথে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার খবর জানা যায়, দাবি-দাওয়া নিয়ে বোর্ডের সাথে দ্বন্দ্বের মাঝেই সাকিবের এমন খবর বিস্ময়ও জেগেছিল অনেকের।
ক্রিকেট বোর্ডের স্পন্সর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ ছিল টেলিকম কোম্পানি রবি, অথচ ক্রিকেটাররা আলাদাভাবে গ্রামীনফোনের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এর আগে ক্ষতির মুখে ফেলেন বোর্ডকে। ফলে সাকিবের চুক্তিবদ্ধ হওয়াকেও বোর্ড দেখছেনা ইতিবাচকভাবে। বিসিবি সভাপতির ব্যক্তিগত অসন্তোষ নয় বরং চুক্তিতেই এমন কিছুর উল্লেখ আছে বলে একটি জাতীয় দৈনিককে জানান নাজমুল হাসান পাপন।
‘সাকিব টেলকম কোম্পানিটির সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে পারেনা। কেন পারবেনা সেটা আমাদের চুক্তিপত্রে স্পষ্টভাবে বলা আছে। রবি আমাদের টাইটেল স্পন্সর ছিল, গ্রামীনফোণ বিডই করেনি। পরে একজন, দুইজন ক্রিকেটারকে আলাদাভাবে এক, দুই কোটি টাকা দিয়ে ধরেছে। এজন্য আমাদের ৯০ কোটি টাকা হারাতে হয়েছে।’
এধরণের চুক্তিতে ক্রিকেটাররা লাভবান হলেও ক্ষতি হয়েছে বোর্ডের উল্লেখ করে পাপন আরও যোগ করেন, ‘এরকম কিছু হাওয়ায় ক্রিকেটাররা হয়তো লাভবান হয়েছিল কিন্তু বোর্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে। এরপরই আমরা চুক্তিতে স্পষ্ট বলে দেই কোন টেলিকম কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়া যাবেনা বোর্ডের অনুমতি ছাড়া। এমনকি মন্ত্রণালয় থেকেও এমনই বলা আছে। তাহলে সে কীভাবে আমাদের না জানিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়? আর সময়টা দেখেন, যখন ক্রিকেটারদের ধর্মঘট চলছিল।’
এ ব্যাপারে বোর্ড কাউকে বাঁচাবেনা বলেও দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিক কালের কন্ঠকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাপন জানান, ‘আমরা আইনী পদক্ষেপে যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে কাউকে আমরা বাঁচাবোনা। ক্ষতিপূরণ চেয়েছি, এমনকি খেলোয়াড়রাও ক্ষতিপূরণ দিবে। গ্রামীণফোনের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’
‘সাকিবকেও কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে। সে জবাব দিবে, আমাদের অনুমতি নেয়নি কেন? আমাদের কাছে মনে হয়েছে বোর্ডকে পাত্তা না দেওয়ার মত কিছু করেছে সে, যদি এমন কিছু হয় আমরা কঠোর পদক্ষেপে যাবো।’