

ভূমিকা বদলে ক্রিকেটে তারকাখ্যাতি পাওয়া ক্রিকেটারের সংখ্যা নেহাত কম নয়। উদাহারন টানলে আসবে স্টিভ স্মিথের নাম, লেগ স্পিন অলরাউন্ডার থেকে একদম টেস্ট ক্রিকেটের শীর্ষ ব্যাটসম্যান। আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে এক ম্যাচের পারফরম্যান্স দিয়ে আসলে এখনই অতবড় তারকা বানিয়ে দেওয়া যায়না। তবে ব্যাটিং অলরাউন্ডার থেকে লেগ স্পিনার হিসেবে জাতীয় দলের অভিষেকটা রাঙিয়েই রাখলেন, প্রশংসা কুড়ালেন সতীর্থ সিনিয়র ক্রিকেটারদের। ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জেতা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদতো তার মধ্যে ‘এক্স ফ্যাক্টরই’ দেখে ফেলেছেন।
বয়সভিত্তিকে ছিলেন মূলত ব্যাটসম্যান, পাশাপাশি লেগ স্পিনটাও করতে পারতেন। সবশেষ প্রিমিয়ার লিগ পর্যন্ত এটাই ছিল রুপকথার মত জাতীয় দলে আবির্ভাব হওয়া আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের পরিচয়। কিন্তু কিছুদিন আগে হাই পারফরম্যান্স কোচ সাইমন হেলমেট আবিষ্কার করলেন এই ছেলের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যত নিখাদ লেগ স্পিনার। দিলেন পরিচয় বদলে, আমিনুল হয়ে গেল পুরোদস্তুর লেগ স্পিনার, দলের প্রয়োজনে করবেন ব্যাট। আস্তে আস্তে আসা শুরু করলেন আলোর মধ্যে, যে আলোতে পথ খুঁজে নিলেন জাতীয় দলই।
একদমই অল্পদিনে জাতীয় দলের পাইপলাইনে চলে আসা আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে সিনিয়র ক্রিকেটাররা চিনলো চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে ডাক পাওয়ার পর। নেটে দেখে কি ভেবেছিলেন মাহমুদউল্লাহ? ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে চাচ্ছিলাম আজ যেন সে ভালো করে। ওকে আমরা চিনতাম না, প্রথম দেখি ঢাকায় নেটে বল করার সময়। দেখেই মনে হয়েছে ওর মধ্যে ‘এক্স ফ্যাক্টর ‘ আছে। তাই চাচ্ছিলাম ও ভালো করুক। যা ওর জন্য ও দলের জন্য বেশ ভালো হবে।’
অভিষেকেই রাখলেন দলের জয়ে ভূমিকা। চার ওভার বল করে মাত্র ১৮ রান খরচায় দুই উইকেট, মনে রাখার মত অভিষেকই। কতটা মুগ্ধ করেছে মাহমুদউল্লাহকে? ‘ও যেভাবে আজ বল করেছে আমি বেশ খুশি। সাকিবের সাথে এ নিয়ে কথাও বলেছি, সাহস আছে, যা অসাধারণ। ফিল্ডিংও খুব ভালো করে। ব্যাটিংও করতে পারে, যেভাবে শুরু করেছে ধরে রাখতে পারলে বাংলাদেশকে অনেক সাফল্য এনে দিবে। তার বোলিং বলছে সে আগ্রাসী। ফিল্ডিং, শরীরী ভাষায়ও আগ্রাসীতার ছাপ। যা টি-টোয়েন্টিতে বেশ জরুরী। হয়তো মাঝেমধ্যে কাজে দিবেনা, তবে বেশিরভাগ সময়ই আসবে সাফল্য।’
অনেকটা বিপ্লবের মতই স্বপ্ন দেখিয়ে জাতীয় দলে এসেছিল বাংলাদেশের প্রথম বিশেষজ্ঞ লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখন। তবে অল্পদিনের ব্যবধানেই নিজের বেখায়ালিপনা হোক কিংবা পর্যাপ্ত যত্ন, নজরদারির অভাবে চলে গেলেন আড়ালে। বিপ্লবের ক্ষেত্রেও এমন কিছু হতে পারে কিনা এমন প্রশ্নে মাহমুদউল্লাহর জবাব, ‘ লিখন যখন শুরু করে আমার কাছে দারুণ লেগেছে। ওর গুগলি পড়তে পারা কষ্টকর ছিল। পরে ফর্মে উঠা-নামা হয়েছে। আমরা অনেকদিন ধরে একজন লেগ স্পিনার খুঁজছিলাম, ম্যানেজমেন্টও চেষ্টা করছিল। এ ছেলেটার মধ্যে বেশ সম্ভাবনা আছে, দলের সবাই ওকে উৎসাহ দিচ্ছে। ওর ভবিষ্যত উজ্জ্বল।’